কাশ্মীরে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযানের তীব্র সমালোচনা

মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে কাশ্মীরে কাজ করতে বাধার কড়া সমালোচনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিতর্কিত অঞ্চলে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়নের’ কথিত অভিযোগে ভারত-শাসিত কাশ্মীর, জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং দক্ষিণের ব্যাঙ্গালুরু শহরের বেশ কিছু বেসরকারী সংগঠন, অধিকার কর্মী ও সাংবাদিকদের উপর ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থার অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অধিকার কর্মী মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশান এজেন্সি (এনআইএ) বুধবার ও বৃহস্পতিবার এই জায়গাগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়েছে। তাদের অভিযোগ, বেশ কিছু ‘অলাভজনক গ্রুপ ও দাতব্য ট্রাস্ট’ তহবিল সংগ্রহ করছে এবং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মীদের তৎপরতায়’ সেগুলো ব্যবহার করছে।

কাশ্মীরি বিদ্রোহী, রাজনৈতিক নেতা ও অধিকার কর্মীদের উপর ভারতীয় বাহিনীর ষাঁড়াশি অভিযানের মাত্রা ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে বেড়ে গেছে। নয়াদিল্লী ওই সময় একতরফাভাবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই অঞ্চলের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন কাশ্মীর-ভিত্তিক অধিকার কর্মী খুররম পারভেজ ও পারভিনা আহাঙ্গার, গ্রেটার কাশ্মীর সংবাদপত্রের অফিস, এজেন্স ফ্রান্স প্রেসের (এএফপি) কাশ্মীর প্রতিনিধি পারভেজ বুখারির বাসভবন, জাতীয় রাজধানীতে দিল্লী মাইনরিটি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান জাফরুল ইসলাম খানের সম্পত্তি।

এনআইএ যে সব গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে ফালাহ-ই আম ট্রাস্ট, চ্যারিটি অ্যালায়েন্স, হিউম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশান, জেকে ইয়াতিম ফাউন্ডেশান, স্যালভেশান মুভমেন্ট, এবং জেঅ্যান্ডকে ভয়েস অব ভিকটিমস।

‘হিমালয়সম মিথ্যা’

নয়াদিল্লি ভিত্তিক চ্যারিটি অ্যালায়েন্সের প্রধান ৭২ বছর বয়স্ক খান আল জাজিরাকে বলেন, তার এনজিওর বিরুদ্ধে এনআইএ’র অভিযোগ হলো তারা নাকি ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসের অর্থায়ন করছে। এটা একটা ‘হিমালয়সম মিথ্যা’।

তিনি বলেছেন, “কিছু ওষুধ, কম্বল ও বন্যার্তদের জন্য সামান্য কিছু অর্থ সহযোগিতা ছাড়া কাশ্মীরে আমাদের কোন তৎপরতাই নেই”।

এই অভিযানকে ‘সুপরিকল্পিত ও সাজানো’ আখ্যা দিয়ে খান বলেন, কাশ্মীরের বিদ্রোহীদের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই এবং বহু বছর তিনি ওই অঞ্চলে যাননি।

খান বলেন, “দিল্লি মাইনরিটিজ কমিশনে আমি যে কাজ করেছি, বিশেষ করে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে দাঙ্গার বিষয়ে আমি যে প্রতিবেদন দিয়েছি, সেটার কারণে আমাকে শাস্তি দেয়ার চেষ্টা করছে তারা”।

‘স্বৈরাচারি কৌশল’

আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠনগুলোও এনআইএ’র অভিযানের সমালোচনা করেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শুক্রবার বলেছে, বিজেপি সরকার ‘সন্ত্রাসদমন অভিযানকে’ ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ ভিন্নমত, মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিকদের স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে এবং তাদের বিরদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা’ দেয়া হচ্ছে।

সূত্র: আল-জাজিরা