কম পুঁজিতে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে চাষিরা

মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে চাষিরা

ঝালকাঠি সংবাদদাতা: ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাল্টা চাষ। এখানকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও ভালো হচ্ছে। কম জায়গায় এবং অল্প পুঁজিতে লাভ বেশি হওয়ায় ঝালকাঠির যুবকরা মাল্টার বাণিজ্যিক আবাদের দিকে ঝুঁকছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে আগামীতে মাল্টা চাষের পরিধি বাড়াতে তারা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

জেলার সবচেয়ে বড় মাল্টা বাগান হচ্ছে নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের শাহআলম হাওলাদারের মাল্টা বাগান। তিনি প্রথমে কৌতুহলবশত ও পরিক্ষামূলকভাবে নিজ বাড়ির উঠানে ১শ’ মাল্টা চারা রোপণ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। পরে তিনি চার একর জমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে একটি ফলের বাগান করেন। তার বাগান দেখে এ উপজেলার অনেকেই এখন মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বাজারে এ ফলের বেশ চাহিদাও রয়েছে। বাগান থেকে প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২শ’ টাকা দরে।

নলছিটির শারিনা মাল্টা গার্ডেনের মালিক শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ২০১৬ সালে বাবার দেওয়া মাত্র ১০ শতক জমিতে ৫০টি গাছ দিয়ে মাল্টা বাগন শুরু করি। সেই থেকে আর আমাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আমি বছরে ৪ সাড়ে চার লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করি। আমার ৭ বিঘা জমিতে ৭০০ শ’র বেশি মাল্টা গাছসহ নানা ধরণের ফলের চারা রয়েছে। আমার কাছ থেকে মাল্টা গাছের চাড়া নিয়ে এলাকার যুবকরা দেড়শ’র বেশি বাগান করেছে।

তিনি আরও জানান, তার বাগানে মাল্টার পাশাপাশি রঙিন আমসহ ৮০ জাতের দেশি-বিদেশি আম, সৌদি আরবের খেজুর, মিষ্টি কমলা ও দিনাজপুরের লিচুর গাছ রয়েছে। তবে মাল্টার ওপরই তিনি বিশেষ নজর দিয়েছেন। তার বাগানে বারিমাল্টা-১ (পয়সা মাল্টা), থাইল্যান্ডের বেড়িকাটা মাল্টা ও প্রলিত মাল্টা এই তিন জাতের মাল্টা চাষ করা হচ্ছে। চারা রোপণের দুই বছরের মধ্যে গাছের ফলন শুরু হলেও মূলত তিন বছরে একটি গাছে পূর্ণাঙ্গভাবে ফল ধরা শুরু করে। তিন বছরের একটি বয়স্ক গাছে প্রতি মৌসুমে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ মাল্টা ধরে। বর্তমানে তার বাগান পরিচর্যার জন্য ৫ জন লোক কাজ করেন। তার দেখাদেখি এলাকার বেকার যুবকদের অনেকে মাল্টা বাগান করে বেকারত্ব দূর করছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণ পেলে আরও বড় পরিসরে উন্নতজাতের মাল্টা চাষ করবেন। তার বাগানের মাল্টা সারাদেশে বাজারজাত করাসহ নার্সারি নাম সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন। পাশাপাশি তার একটি গরুর খামার করারও ইচ্ছাও রয়েছে বলে জানান।

এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসরাত জাহান মিলি বলেন, নলছিটি কৃষি বিভাগে এ উপজেলার সফল মাল্টা চাষী শাহ আলমের বাগান থেকে চারা কিনে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে। শাহ আলমের বাগানে উৎপাদিত মাল্টা জাতে বড় ও মিষ্টি । সে আমাদের কৃষি অফিসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগযোগ রাখে। আমরাও সব সময় তাকে আধুনিক কৌশল প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকি।