ঈদে মীলাদুন্নবী উপলক্ষে ১৫দিন ছুটি, যত্রতত্র পূজা নিষিদ্ধসহ ১০ দফা দাবি ওলামালীগের

ঢাকা: আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে ১৫দিন ছুটিসহ স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট তথা যত্রতত্র পূজা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে সরকারের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ ওলামা লীগসহ সমমনা তেরটি ইসলামী দল। এ উপলক্ষ্যে এখন থেকেই সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত এক বিশাল মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান ওলামা লীগ।
১০ দফা দাবীতে অনুষ্ঠিত এ বিশাল মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাইয়্যিদে ঈদে আযম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর, পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এখন থেকেই সর্বোাচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় কার্যক্রম শুরু করা হোক। আন্তর্জাতিক সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উদযাপন কমিটির সাথে সমন্বিত কার্যক্রম শুরু করা হোক।
বক্তারা বলেন, এখন থেকেই পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দেশের সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ সরকারী বেসরকারী সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ব্যাপকভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের নির্দেশনা সম্বলিত গেজেট প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উদযাপন কমিটির সাথে সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করে আরো ব্যাপক পরিসরে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের উদ্যোগ নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণেই কুল মাখলুখাতের জন্য এ দিন অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ খুশির দিন। কারণ এ দিনে আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান-জমিন, জান্নাত-জাহান্নাম, আরশ-কুরসি কিছুই সৃষ্টি করতেন না। এমন কি স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেকে প্রকাশ করতেন না। আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণেই উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা অন্যান্য সব উম্মতের চেয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। সুবহানাল্লাহ! তাই এ দিন কুল মাখলুকাতের জন্য সবচেয়ে বেশী খুশীর দিন। সবচেয়ে বড় ঈদের দিন।
বক্তারা বলেন, বিভিন্ন দেশে রাষ্টীয়ভাবে ব্যাপক সমারোহে খ্রিষ্টমাস ডে পালন করা হয়। যেমন ‘খ্রীষ্টমাস ডে’ ২৫ ডিসেম্বর হলেও ইতালিতে ১ ডিসেম্বর থেকেই শুরু করে শেষ করা হয় ৬ জানুয়ারি। অর্থাৎ এক মাসেরও বেশী সময় ধরে তারা এ দিন পালন করে। আমেরিকায় ক্রিসমাসের চার সপ্তাহ আগে থেকেই খ্রিষ্টমাস ডে পালনের প্রস্তুতি শুরু করা হয়। ব্রাজিলে আগে থেকেই ঘরবাড়ি সাজানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং ক্রিসমাসের দিন বিচারকরা সবচেয়ে সুন্দর করে সাজানো বাড়ি খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করে এবং চার্চগুলোতে একত্রিত হয়ে তারা খ্রিষ্টমাস ডে উদযাপন করে। মেক্সিকাতে প্রায় ৯ দিন ধরে মানুষেরা দরজা দরজায় ঘুরে বেড়িয়ে ক্রিসমাসের আগমণী বার্তা প্রচার করে এবং ১২ ডিসেম্বর থেকে বিশেষ খাবার খেয়ে মেক্সিকানরা ক্রিসমাসের উৎসব শুরু করে এবং ৬ জানুয়ারি বিশেষ খাবার খেয়ে শেষ করে। এভাবে সরকার  ও জনগণের সমন্বয়ে দেশে দেশে খ্রীষ্টানরা ‘খ্রীষ্টমাস ডে’ পালন উপলক্ষে খুশী প্রকাশ করে।
বক্তারা বলেন, খ্রিষ্টানরা যদি সরকারী-বেসরকারীভাবে তাদের নবীর জন্মদিন এতো জাঁকজমকের সাথে পালন করে তাহলে যিনি তাশরীফ মুবারক না নিলে খ্রীষ্টানরা যাকে মানে সেই নবী হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনিও তাশরীফ নিতেন না তাহলে উনার জন্মদিন তথা পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের জন্য কতটুকু জাঁকজমকের সাথে পালন করতে হবে তা রাষ্ট্রধর্ম পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সরকারকে ভাবতে হবে এবং দায়সর্বস্ব উদ্যোগ না নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, সরকারের উচিত- এ দিন ও মাসের সম্মানে ১২ রবিউল আউয়াল শরীফসহ ১লা রবিউল আউয়াল থেকে ১৫ রবিউল আউয়াল মোট ১৫ দিন রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ আয়োজনে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা। ২১শে ফেব্রুয়ারী আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফে বিশ্ব ছুটি আদায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
বক্তারা আরো বলেন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার জন্ম দিনকে খ্রিষ্টমাস ডে নাম দিয়ে সারা বিশ্বের উপর বিশ্ব ছুটি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে সারাবিশ্বের সবদেশে ছুটি পালন করা হয় এমনকি বাংলাদেশেও ছুটি দেয়া হয় তাহলে যিনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ উনার জন্মদিন উপলক্ষে কেন বিশ্বব্যাপী ছুটি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবেনা?
বক্তারা বলেন, ব্যাপক তোড়জোড় করলেও গতবারের মতো এবারো নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানীর পশু জবাইয়ের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে নগরবাসী । ফলে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানগুলোতে দেখা মেলেনি কুরবানীর পশুর। রাজধানীবাসী বাসার নিচের গ্যারেজ, খালি জায়গা, রাস্তা ও গলির মধ্যে কুরবানী দেন। একই অবস্থা হয়েছে দেশের বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার ক্ষেত্রে। গোশত-চামড়ার নিরাপত্তা, গোশত বহনে পরিবহন সমস্যা, চামড়ার সংগ্রহকারী মাস্তানদের উপদ্রব, পাবিবারিকভাবে কুরবানী করতে না পারার আনন্দ থেকে বঞ্চিত ইত্যাদি বিভিন্ন দুর্ভোগের কারণে কুরবানীদাতারা নিজ আঙ্গিনায় কুরবানী করেন।
বক্তারা বলেন, রাস্তাঘাট যত্রতত্র হিন্দুদের পূজামন্ডপ করার সময় কোনো ব্যবস্থা না নিলেও মুসলমানদের কুরবানীর স্থান নির্দিষ্ট করায় বৈষম্যের অভিযোগ উঠায় এবং কুরবানীদাতাদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ওলামা লীগ নির্দিষ্ট স্থান প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল। কুরবানীদাতাগণ নিদিষ্ট স্থানে কুরবানী করতে না আসায় ওলামা লীগের আশঙ্কার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে এরকম অযৌক্তিক ও হাস্যকর সিদ্ধান্ত আর যেন না নেয়া হয় এবং সরকারের ভাবমর্যাদাকে ক্ষুণ্য করা না হয়। পাশপাশি যারা এরূপ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে এবং দুই সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকার লোকসান করেছে এদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে। অবিলম্বে এদেরকে অপসারণ করতে হবে। সাথে সাথে এদের ভবিষ্যৎ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি কুরবানীর স্পটের বিষয়ে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়ায় চট্টগ্রামের মেয়রকে ওলামালীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন।
বক্তারা বলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বাহির সিগনাল এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা উগ্র মৌলবাদী হিন্দুরা। নিজেদের দখলে থাকা রেলওয়ের জমিতে বেড়া দিলে গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা কট্টর মৌলবাদী হিন্দুরা মুক্তিযোদ্ধা অফিসে ঝাপিয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের বাসা-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকী দিয়েছে মৌলবাদী হিন্দুরা।
বক্তারা বলেন, জাগো হিন্দু, পশ্চিমাদের তৈরী ইসকন, হিন্দু বীর যুব সংঘ, বঙ্গসেনা, বঙ্গভূমি আন্দোলন, হিন্দু মহাজোট, বেদান্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, সনাতন মৈত্রী সংঘ, আর্য সমাজ ইত্যাদি নামে এসব উগ্রবাদী, মৌলবাদী হিন্দুরা কট্টর সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড, হিন্দু মুসলিম বিভাজন উস্কানী চালিয়ে আসছে। উজিরে খামাখা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও তাদের মদদ দিচ্ছে। এসব উগ্র হিন্দুরা চরম সাম্প্রদায়িক, ভীষন উগ্রবাদী ও মৌলবাদী ও কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী হওয়ায় মুসলমান ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে উস্কানী দিচ্ছে। এদেশে যেখানে সাম্প্রদায়িকতার কোন অস্তিত্ব ছিলনা সেখানে এখন উগ্র হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এদের  প্রতি অতি নমনীয়তা ও মাত্রাতিরিক্ত পৃষ্ঠপোষকতা সরকারের জন্য কাল হয়ে দাড়াচ্ছে। এটা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।  পাশপাশি চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস পুড়ানো ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমমাননাকারী উগ্র হিন্দুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
হিন্দু মানেই আওয়ামী লীগ বান্ধব নয় উল্লেখ করে ওলামা লীগর নেতৃবৃন্দ বলেন, জামাত-জোটের এজেণ্ট গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা ও নিম্নবর্ণের উগ্রবাদী হিন্দুদের সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার হাত থেকে রক্ষার্থে কোন রাস্তায় এবং প্রকাশ্যে পূজার অনুমতি না দিয়ে মন্দিরের ভেতরে পূজার ব্যবস্থা করা হোক। ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশে পূজা উপলক্ষে স্কুল কলেজ বন্ধ দেয়া যাবেনা এবং পূজাও করা যাবেনা।
বক্তারা বলেন, হিন্দু মানেই যে আওয়ামীলীগ বান্ধব নয় এর যথেষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত রয়েছে। কারণ গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা জামাত জোটের এজেন্ট তথা উগ্রবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের মধ্যে যেমন বিএনপি সমর্থক রয়েছে আবার যুদ্ধাপরাধী জামাত সমর্থকও রয়েছে। কেননা বিএনপিতে গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা হিন্দুরা ভরপুর রয়েছে। তারা সরকার বিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত। বিএনপিপন্থী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু, আমার দেশ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক সঞ্জীব চৌধুরী তারা সবাই আওয়ামী বিরোধী প্রচারণাই চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খোদ জগন্নাথ হলেও অনেক হিন্দু শিবির কর্মী রয়েছে। ২০০১ সালে যুদ্ধাপরাধী সাঈদী পিরোজপুরে হিন্দুদের ভোট পেয়েই এমপি হয়েছিল।
সুতরাং হিন্দু মানেই আওয়ামীপন্থী সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বরং সাঈদী ওরফে ইহুদী সমর্থিত যে হিন্দু জামাতে ইসলাম কর্মী রয়েছে তাদের প্রত্যেককে শনাক্ত করে প্রতিহত করতে হবে।
বক্তারা বলেন, একইভাবে গয়েশ্বর মার্কা হিন্দু তথা জামাত-জোট এজেন্ট মৌলবাদী, উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক হিন্দুরা আসন্ন দুর্গাপূজায় সরকারের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি নষ্ট করার হীন উদ্দেশ্য পরিকল্পিতভাবে নিজেরাই পূজামণ্ডপে হামলা করে স্যাবোটাজ করতে পারে। এজন্য সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে পূজার ব্যবস্থা না করে মন্দিরেই পূজার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
কারণ, দুর্গা পূজাসহ বিভিন্ন পূজা আসলে গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা উগ্র ও মৌলবাদী হিন্দুরা নিজেরা মন্দির ভেঙ্গে মুসলমানদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্ঠা করে। সাম্প্রতিক কিছু মুর্তি ভাংচুরের ঘটনা দেখলে তা আরো স্পষ্ট হয়।
গত বছর ৩১শে আগষ্ট নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের একটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হলে এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে হিন্দুরা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এ কাজটি করেছে।
বক্তারা বলেন, গত বছর ১লা অক্টোবর সকালে ভোলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চর পেয়ারিমোহন ৩ নং ওয়ার্ড এলাকার রাধা গোবিন্দ মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগে একই এলাকার বাদল চন্দ্র হাওলাদারের ছেলে রাহুল চন্দ্র হাওলাদার রমাগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ চৌধুরীকে আসামী করে লালমোহন থানায় মামলা করে ফাঁসিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভরত এলাকাবাসীর দাবী রিয়াজ চৌধুরী আমাদের এলাকার স্বনামধন্য ব্যাক্তি। তার সুনামের জন্যই যুবলীগ সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছে সে। সমাজে তাকে হেয় করে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য কিছু কুচক্রি মহল প্রতিমা ভাঙ্গার মিথ্যে মামলায় ফাসানোর অপচেষ্টা করছে।
বক্তারা বলেন, ২০১০ সালের নভেম্বরে মন্দিরের কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্ধের জের ধরে হিন্দু সন্ত্রাসীরা রাজধানীর রমনা কালী মন্দিরে ব্যাপক ভাঙচুর করে। পুলিশ এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের অনিমেষ বিশ্বাস (২১), গোবিন্দ সাহা (২০) ও প্রকাশ ম-ল (২৪) নামের তিন ছাত্রকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক শ্যামল কুমার বলেন, সন্ত্রাসীরা মন্দিরে রামপ্রসাদ ও সারদা দেবীর মূর্তি ভাঙচুর করে। এছাড়া ব্রাহ্মণের কক্ষেও ভাঙচুর করে। ছাত্রনেতা পঙ্কজ অভিযোগ করে, পূজা উদযাপন কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে উৎপল গ্রুপের কর্মীরা মূর্তি ভাঙচুর করেছে। তবে ছাত্রনেতা নেতা উৎপল সাহা মূর্তি ভাঙার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পঙ্কজ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা মূর্তি ভাঙচুর করে তাদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। (দৈনিক আমাদের সময় ১ নভেম্বর/২০১০)
বক্তারা বলেন, ২০১৪ সালের ২৮ মে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল বাজারে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কালি মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের প্রকৃত তথ্যও বেরিয়ে এসেছে। এ মামলার গ্রেফতারকৃত আসামীরা শেরপুরের বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবনে ১৬১ ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধিতে প্রতিমা ভাঙ্গচুর করার জন্যে মূলহোতা হিসেবে নাম উপজেলা পুজাঁ উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ননী গোপাল রায় ও জমির দাবীদার দ্বাদশী রানীর নাম প্রকাশ করেছে। তাদের নির্দেশে ও টাকার বিনিময়ে প্রতিপক্ষের জমির ক্রয় সূত্রে মালিক আলহাজ আবু বক্কর সিদ্দিককে ফাঁসাতে উক্ত প্রতিমা ভাঙ্গচুরের কাজ করেছে বলে তারা জবানবন্দিতে উল্লেখ করে।
বক্তারা বলেন, গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দুরমুজখালী পশ্চিমপাড়া কৃষ্ণ মন্দিরের ছাউনি দুর্বৃত্তরা পাশের কালিন্দি নদীর চরে ফেলে দেয়। এসময় তারা মন্দিরে সংরক্ষিত রাধাকৃষ্ণ ও লক্ষ্মি মুর্তি দুটি দুই জায়গা ফেলে রাখে। রাধাকৃষ্ণ মুর্তির হাত ভেঙে ফেলে। কৃষ্ণ মন্দিরের সভাপতি সুকুমার মন্ডল বলেন, মন্দিরের জমি নিয়ে স্থানীয় কৃষ্ণপদ মন্ডলের সাথে বিরোধ চলে আসছে। কৃষ্ণপদ মন্ডলই লোকজন দিয়ে রাতের অন্ধকারে মন্দির ভাংচুর ও মুর্তিগুলো ভাংচুর করে থাকতে পারে। স্থানীয় পুলিশিং কমিউনিটি ইউনিটের সম্পাদক ধরণী মোহন মন্ডল জানান, দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের ঐ জায়গা নিয়ে মন্দির কমিটির সাথে কৃষ্ণপদ মন্ডলের বিরোধ চলছে। জমির প্রকৃত মালিক কিরণ বালা ভারতে যাওয়ার আগে জমিটি মন্দিরকে দিয়ে যায়। কিন্তু কৃষ্ণপদ মন্ডল জাল দলিল তৈরী করে উক্ত জমির দাবি করে আসছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা না হওয়ার কারনে প্রতিহিংসাবশতঃ এমন কান্ড ঘটানো হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, উপরোল্লেখিত ঘটনার মতো গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা উগ্র ও মৌলবাদী হিন্দুদের দ্বারা এবারো আসন্ন দুর্গাপূজায় সরকারের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সাম্প্রদায়িক তান্ডব চালানো অস্বাভাবিক নয়। গয়েশ্বর মার্কা উগ্র ও মৌলবাদী হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের হীন চক্রান্ত রুখতে আসন্ন দুর্গাপুজায় গয়েশ্বর মার্কা উগ্র ও মৌলবাদী হিন্দুদের স্যাবোটাজ সম্পর্কে সরকারকে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তাঘাটে, উন্মুক্ত স্থানে পুজামন্ডপ তৈরী না করে মন্দিরেই পূজার ব্যবস্থা করতে হবে।
ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে মুসলমানরা ঈদ উপলক্ষে জাতীয়ভাবে সব প্রদেশে ছুটি না পেলেও বাংলাদেশে দুর্গাপূজায় কিভাবে ৩ দিন ছুটির দাবি উঠতে পারে? তাছাড়া ভারতে মুসলমানদের সংরক্ষিত আসন না থাকলেও বাংলাদেশে কিভাবে হিন্দুদের সংরক্ষিত আসনের দাবি উঠতে পারে? এসব আজগুবী ও উদ্ভট দাবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এগুলো জামাত-জোট এজেণ্ট গয়েশ্বর মার্কা নি¤œবর্ণের উগ্রবাদী হিন্দুদের ষড়যন্ত্র। বর্তমান উন্নয়নের সরকারকে বেকায়দায় ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র রুখতে সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, দুই ঈদ উপলক্ষে ভারতের অনেক প্রদেশে মুসলমানরা ছুটি পায়না। কুরবানী করতে পারেনা। অনেক প্রদেশে মসজিদ মাদরাসা বানাতে পারেনা, প্রকাশ্যে আযান দিতে পারেনা মুসলমানরা। সেখানে বাংলাদেশে স্বর্গে বাসকারী হিন্দুরা দুর্গাপূজায় জাতীয়ভাবে সারাদেশে ছুটি ভোগ করে থাকে। অথচ ভারতেও তারা তিনদিন ছুটি পায়না। দুর্গাপূজাকে  দুশেরা উল্লেখ করে ভারতে রাষ্ট্রীয়ভাবে গেজেটেড ছুটি দেয় ১ দিন। তাও সব প্রদেশে নেই। কারণ তাদের একেক প্রদেশে ছুটি একেকদিন। তাহলে বাংলাদেশে হিন্দুরা কিভাবে উস্কানীমূলকভাবে ৩ দিনের উদ্ভট ছুটি দাবি করতে পারে?
বক্তারা বলেন, ভারত তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে মুসলামনরা সংসদের ৪০ ভাগ আসন পাওয়ার কথা। কিন্তু ৪০ ভাগ দূরের কথা কোন সংরক্ষিত আসনই পায়না মুসলমানরা। তাহলে বাংলাদেশে কিভাবে হিন্দুদের ৬০টি সংরক্ষিত আসনের দাবি তুলতে পারে এবং পৃথক হিন্দু মন্ত্রণালয় চাইতে পারে? অথচ বাংলাদেশে কোনো মুসলিম মন্ত্রণালয় নাই। তাই এসব আজগুবী ও উদ্ভট দাবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মূলত এগুলো জামাত-জোট এজেণ্ট গয়েশ্বর ও নিতাই মার্কা নি¤œবর্ণের উগ্রবাদী হিন্দুদের ষড়যন্ত্র। বর্তমান উন্নয়নের সরকারকে বেকায়দায় ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র রুখতে সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
অবিলম্বে ইসলাম বিদ্বেষী ও ইসলামী শিক্ষা সংকোচনকারী শিক্ষানীতি-২০১০ এবং শিক্ষা আইন-২০১৬ বাতিল করতে হবে। শিক্ষানীতি-২০১০ এবং শিক্ষা আইন-২০১৬ বাতিল কোনমতে জাতীয় সংসদের পাশ করা যাবেনা।
বক্তারা বলেন, ইসলাম ধর্মের প্রতি যাদের কোন আস্থা বা বিশ্বাস নেই বরং ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষী এমন সব বামপন্থী ব্যক্তি; জাতীয় শিক্ষানীতি কমিটির চেয়ারম্যান কবীর চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান ড.কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, সদস্য ড. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সূত্র ধরদের দিয়ে বর্তমান শিক্ষানীতি প্রণয়ণ করা হয়েছে। এসব কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ব্যক্তিদের মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদী কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টকে ভিত্তি ধরে প্রণীত শিক্ষানীতি মুসলমানদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। তারা মূলত এদেশের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মন-মগজ থেকে দ্বীন ইসলাম উঠিয়ে দিয়ে নাস্তিক্যবাদী মন-মনন গড়তে এ শিক্ষানীতি প্রণয়ণ করেছে। এদেশকে নাস্তিক্যবাদী দেশ বানাতে এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বামপন্থী শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চেপে তার নাস্তিক্যবাদী চেতনা বাস্তবায়নে ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, প্রবল আপত্তি আর তীব্র প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কুফরী শিক্ষানীতি এবং হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যসূচী কোনরুপ সংশোধন না করেই বামপন্থী নাহিদ এখন শিক্ষা আইনও চূড়ান্ত করার কাজ দ্রুত চালিয়ে যাচ্ছে। যা এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগণের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। কারণ যদি এ কুফরী শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন মুসলিম জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় অধিকার হারাবে। মুসলমানরা স্বকীয় বৈশিষ্ট হারিয়ে নাস্তিক্যবাদী চেতনায় গড়ে উঠবে। যা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ চক্রান্ত।
বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের ধারা- ৭ এর (১), (২), ও (৩) অনুযায়ী, সাধারণ বিষয়ের একই পাঠ্যবই মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানো হলে হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত মাদরাসা শিক্ষা তার স্বাতন্ত্র্য হারাবে। অর্থাৎ স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষার মধ্যে শুধু নামের পার্থক্য ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
বক্তারা বলেন, আইনের ধারা- ৭ এর (১১) অনুযায়ী, সরকার নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের মাধ্যমে শ্রেণী ও বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করবে এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ নিশ্চিত করবে। এর বাইরে অন্যকোন পুস্তক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পাঠ্যসূচিতে অর্ন্তভুক্ত করা যাবে না। এ বিধান লংঘন করলেও শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে মাদরাসাগুলোতে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীস শরীফসহ ইসলামী মূলধারার বই পড়ানো দন্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।
বক্তারা বলেন, আইনের ধারা- ১৩ অনুযায়ী, ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নির্বাচনের জন্য স্থায়ী বেসরকারি শিক্ষক নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তারা শিক্ষক নির্বাচন করে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। এ ধারা মাধ্যমে মাদরাসায় আলেম নিয়োগের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এ ধারার মাধ্যমে বেআমল ও দলীয় লোকের নিয়োগ করে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, আইনের ধারা- ২০ (খ) (২) অনুযায়ী, দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, বাংলাদেশ স্টাডিজ, পানিবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশ পরিচিতি এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়সমূহ বাধ্যতামূলক হবে। সাধারণ বিষয়ে মাদরাসাগুলোতে ৭টি বিষয়ই বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে। এতোগুলো বিষয় বাধ্যতামূলক করে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীস শরীফ, আরবী, ফারসি, উর্দু বিষয়ের অন্যান্য বিষয়গুলো পড়ার সুযোগ কমিয়ে দিয়ে মাদরাসা শিক্ষা ধ্বংসের চূড়ান্ত আয়োজন করা হয়েছে। এতে আলেম তৈরী না হয়ে ফাসিক-ফুজ্জার বের হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, আইনের ধারা- ২২ (৩), (৪),(৫) অনুযায়ী, সরকারের অনুমতি ব্যতীত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা/ স্থাপন করা যাবে না। একইভাবে ৪০নং ধারার (২), (৩), (৪) উপধারায় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে এ আইনের প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এ আইন লংঘনের জন্য তিন লাখ টাকা জরিমানা এবং ছয় মাসের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এ আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিদের দানে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পথ বন্ধ করা হয়েছে। কারণ দেশের অধিকাংশ মাদরাসাই ব্যক্তিগত বা সম্মিলিত উদ্যোগে দানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। এ আইনের ফলে দেশের ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনে আর কেউ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেনা। কারণ সরকারী অনুমোদনের ঝুট-ঝামেলায় গিয়ে কেউ মাদরাসা করতে এগিয়ে আসতে চাইবেনা। অনুমোদনের ক্ষেত্রে দাতার সম্পদের হিসাব-নিকাশ, ইনকামট্যাক্সসহ বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা আরোপ করে মাদরাসা প্রতিষ্ঠাকে নিরুৎসাহিত করা হবে। তাছাড়া বর্তমান লাখ লাখ মাদরাসাকে সরকারী অনুমোদন বাধ্যতামূলক করাও অমূলক নয়। অন্যথায় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
স্টার জলসাসহ বাংলাদেশে সব ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ভারতীয় টিভি-চ্যানেল আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে করেছে ক্ষত-বিক্ষত, চারিত্রিক অবক্ষয়ের যাঁতাকলে আটকে যাচ্ছে আমাদের সম্ভাবনাময়ী যুব সমাজ, মুসলিম জাতিগুলো আজ নামসর্বস্ব জাতিতে পরিণত হয়েছে। হিন্দি সংস্কৃতির করাল গ্রাসে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের রুচিবোধ আর জীবন যাপন পদ্ধতি। ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালগুলো ব্যাপকভাবে বিপথগামী করছে আমাদের তরুণ-তরুণীদের। পারিবারিক বন্ধন তথা সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে দিচ্ছে। হিন্দি চ্যানেলে প্রচারিত বিভিন্ন সিরিয়ালের বেশির ভাগই খুবই উদ্ভট, অবাস্তব আর কাল্পনিক কাহিনীতে সাজানো হয়। অধিকাংশ কাহিনীর মূল উপজীব্য পরকীয়া, শ্যালিকা-দুলাভাইয়ের মাঝে অবৈধ সম্পর্কসহ আরো নানাবিধ অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে সংসারে সৃষ্ট জটিলতা এবং অশান্তি। লিভ টুগেদার এবং বিবাহ বহির্ভূত সন্তানকে সমাজে খুবই সহজভাবে মেনে নেয়া হচ্ছে বলে উপস্থাপন করা হয়, যা পশ্চিমা সমাজে চলছে। সব সিরিয়ালেরই ঘটনাগুলো উচ্চবিত্ত সমাজের ড্রয়িং রুমের। ড্রয়িং রুমে বসে পাত্র-পাত্রীরা পরিকল্পনা করে কিভাবে কার সংসারে আগুন লাগানো যায়। কূটনামি আর ষড়যন্ত্রই হলো অনেক সিরিয়ালের মূল বিষয়বস্তু।
এসব অপকর্মগুলো বেড়েই চলছে জ্যামিতিকহারে। যা রীতিমত আঁতকে উঠার মতো। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মাঝে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, মহব্বতের সম্পর্ক থাকার কথা আমাদের ধর্ম, আমাদের পরিবার প্রথা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অনুসারে। কিন্তু সেটাকে সুক্ষ্মভাবে ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা চলছে টিভি সিরিয়াল ও টিভি আগ্রাসনের মাধ্যমে প্রতি আসক্তি বাড়িয়ে। সুতরাং ভারতীয় সব টিভি চ্যানেল ও পর্ণ সাইট এদেশে বন্ধ করতে হবে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কমপক্ষে ৩ দিন ছুটি দেয়ার দাবি জানিয়ে ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে ব্যাপক সমারোহে সব স্কুল কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানে পবিত্র আশুরা শরীফ পালনের ব্যবস্থা নিতে হবে পাশপাশি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, পবিত্র মুহররম মাসের দশ তারিখ অর্থাৎ ১০ই মুহররম “আশূরা” দিনটি বিশ্বব্যাপী এক আলোচিত দিন। সৃষ্টির সূচনা হয় এই দিনে এবং সৃষ্টির সমাপ্তিও ঘটবে এ দিনেই। বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এ দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা এ দিনেই সংঘটিত হয়। তাছাড়া পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা এদিনেই সংঘঠিত হয়েছে। ৬১ হিজরী সনের এ দিনে পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ৩য় ইমাম সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন।
বক্তারা বলেন, পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে “তোমরা মুহররম মাসকে এবং এর মধ্যস্থিত আশূরার দিনকে সম্মান করো। যে ব্যক্তি মুহররম মাসকে তথা আশূরার দিনকে সম্মান করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দ্বারা সম্মানিত করবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন।”
বক্তারা বলেন, সঙ্গতকারণেই এ দিনটি সবার জন্য এক মহান আনুষ্ঠানিকতা বা আমলের দিন। সাথে সাথে রহমত, বরকত, সাকীনা, ফযীলত ও মাগফিরাত হাছিল করার দিন। তাই সারাদেশে ব্যাপক সমারোহে সব স্কুল কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানে পবিত্র আশুরা শরীফ পালনের ব্যবস্থা নিতে হবে পাশপাশি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
নদী দূষণ বন্ধে ভারতীয় হাইকোর্টের নির্দেশে নদীতে প্রতিমা বিসর্জন নিষিদ্ধ। নদীতে প্রতিমা বিসর্জন নিষিদ্ধে বাংলাদেশেও আইন করা উচিত।
বক্তারা বলেন, গত বছর ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট গঙ্গা-যমুনা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন নিষিদ্ধ করেছে। পানি দূষণ রুখতেই গঙ্গা ও যমুনা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আদালতের নির্দেশের ফলে গণেশ চতুর্থী ও দুর্গা পুজায় আর গঙ্গা ও যমুনা নদীতে কোনো প্রতিমা ডুবানো যাবে না। ভারতের মতো নদী দূষণ বন্ধে বাংলাদেশেও নদীতে প্রতিমা বিসর্জনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত। কারণ সারাদেশে লাখ লাখ প্রতিমা নদীতে নিক্ষেপ করা হয়। এতে নদী দূষণের পাশাপাশি মারাত্মক পরিবেশ দূষণও ঘটে। বাংলাদেশের উচিত ভারতের হাইকোর্টের দৃষ্টান্ত এদেশে বাস্তবায়ন করা।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী ওলামা লীগের সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- আল্লামা শায়েখ খন্দকার গোলাম মাওলা নকশবন্দী, উপদেষ্টা- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
সমন্বয় করেন, পীরজাদা, পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল), সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, আলহাজ্জ মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী-সভাপতি-বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন। মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি সহ সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।