পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ উপলক্ষে বোনাস প্রদানসহ ১৩টি দাবি ওলামা লীগের

ডেস্ক: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিন্দু থেকে বিন্দুতম অবমাননাকারী নাস্তিকদের তাৎক্ষণিক মৃত্যুদন্ড প্রদানসহ ১৩ দফা দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমমনা ১৩টি ইসলামী দল আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। মানববন্ধন শেষে সর্বোচ্চ মর্যাদায় ও সর্বোচ্চ পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ সারাদেশে ব্যাপকভাবে পালনে ঢাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ১২ দফা দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

তাঁদের উত্থাপিত দাবিসমূহ- ১. পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ সারাদেশে ব্যাপকভাবে পালনে সরকারীভাবে ক) সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ, খ) রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনে সব মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা জারী, গ) এই মাসে মুসলিম কর্মচারীদের বোনাস প্রদান, ঘ) মাসব্যাপী সরকারী ছুটি প্রদান, ঙ) সরকারী সকল স্থাপনা মনোরম সাজে সজ্জিত করণ, চ) সকল প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মীলাদ শরীফ মাহফিল ও তাবারুকের আয়োজন, ছ) গরীব, দুঃখীদের নতুন পোশাক, ওষুধ বিতরণ, নগদ অর্থ, চাল বরাদ্দ ও বিশেষ খাবার সরবরাহ, জ) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগীতার আয়োজন এবং ঝ) সরকারীভাবে উৎপাদিত সকল পণ্যে ছাড় দিতে হবে।

২. রাষ্ট্রীয়ভাবে বছরব্যাপী ইসলামী ও সামাজিক অনুষ্ঠানসূচী ঘোষণা করা। যেমন, ওয়াজ মাহফিল, দ্বীনি তা’লীমের ব্যবস্থা, বই প্রদর্শনী, সামরিক প্রদর্শনী, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, পতাকা উত্তোলন, অস্বচ্ছল ও বেকারদের চাকুরীর ব্যবস্থা দেয়া, গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার ঘোষণা দিতে হবে।

৩. সব শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুমহান জীবনী মুবারক বাধ্যতামূলক করতে হবে। উনাদের শানের খিলাফ বিষয়গুলো প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি উনাদের মানহানীকর লেখা-লিখনীসহ যাবতীয় বিষয় নিষিদ্ধ করে যেকোন মানহানীকারীদের মৃত্যুদ- কার্যকর করতে হবে।

৪. পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার দিনে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সর্বস্তরের জনগণের সাথে এবং এমপি মন্ত্রী কর্তৃক নিজ এলাকাবাসীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের উদ্যোগ নিতে হবে।

৫. ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ উনার সম্মানে সর্বপ্রকার অশ্লীল ও অশালীন কাজ বন্ধ করতে হবে। দেশে মোবাইল ও ইন্টারনেটে পর্নো এবং ভারতীয় টিভি সিরিয়াল এবং সুন্দরী প্রতিযোগীতা বন্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

৬. আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ দিবসকে বিশ্বছুটির ঘোষণার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৭. আন্তর্জাতিক সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ আন্তর্জাতিক উৎযাপন কমিটিকে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।

মানববন্ধনে ওলামা নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজ-এর অংশ হিসেবে স্বীকৃতির প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু পরিবার তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানানো হয়েছে।

এছাড়া সরকারের প্রতি ওলামা লীগের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে-

৯. ইহুদী আঁতাতে মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফকে আলাদা করে ভ্যাটিকানের মতো ক্ষুদ্র রাষ্ট্র এবং পুরো দেশকে চার টুকরা করার ইহুদী পরিকল্পনা প্রতিহত করতে হবে। ইহুদী-খ্রীষ্ট পরিকল্পনায় মুসলিম ঐতিহ্য এবং মুসলিম বিশ্ব ধ্বংসের সৌদি ষড়যন্ত্র রুখে দাড়াতে হবে। বেলেল্লাপনার “নিয়ম শহর” নির্মাণ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোতে সৌদি নির্যাতন বন্ধে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।

১০. রোহিঙ্গা ত্রান বিতরনে ব্রাকসহ বিদেশী মদদপুষ্ট সব এনজিও নিষিদ্ধ করতে হবে। দেশী-বিদেশী সন্ত্রাসবাদী ও দালালদের খপ্পর থেকে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের রক্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে।

১১. ইদানিংকালে গয়েশ্বর মার্কা উগ্র মৌলবাদী হিন্দুরা প্রায়ই উস্কানীমূলক পোষ্ট দেয়। আর তাতে জামাত-শিবির ফাঁদ তৈরী করে। সে ফাঁদে পড়ে সাধারণ মুসলমানরা গ্রেফতার ও নিপীড়ণের স্বীকার হয়। কিন্তু মূল উগ্রবাদী মৌলবাদী হিন্দুরা প্রশাসন ও মিডিয়ার ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায়। সাধারণ মুসলমানদের এভাবে আর হয়রানি ও গ্রেফতার করা যাবেনা। মূল উগ্রবাদী গয়েশ্বর মার্কা হিন্দু দুস্কৃতিকারীদের জামাই আদরে রাখা যাবেনা। তাদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

১২. কথিত জিহাদের অপব্যাখ্যা করে পাঠ্যপুস্তক থেকে মুসলমানদের শৌর্যবীর্যের ইতিহাস ঐতিহ্যমন্ডিত অধ্যায়সমূহ মুছে ফেলার নাস্তিক্যবাদী ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। জিহাদ আর সন্ত্রাসকে এক করে দেখানো যাবেনা। মুসলমানিত্ব নির্মূলের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাআইন গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকে পুণরায় হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করানোর চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে। শিক্ষানীতি ও সিলেবাস প্রণয়ন কমিটি থেকে অবিলম্বে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকদের বহিস্কার করতে হবে। হক্কানী আলেম ওলামাদের অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।

সমাবেশ ও মানবন্ধনে সমন্বয় করেন- পীরজাদা, পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল), সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ হাবীবুল্লাহ রূপগঞ্জী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি সহ সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ চেয়ারম্যান- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার।

বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা পরিষদ, কেন্দ্রীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, বাংলাদেশ, হাক্কানী আলেম সমাজ, জাতীয় ওলামা পরিষদ, বাংলাদেশ এতিমখানা কল্যাণ সমিতি, ইমাম মোয়াজ্জিন কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ ফেৎনা প্রতিরোধ কমিটি, আমরা ঢাকা বাসী এর পক্ষে স্বাক্ষর করেন আলহাজ্ব কাজী মাওলানা মো: আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী।