ওরা আমাকে ১০ বছর জেলে রাখতে চায়: ইমরান খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান দাবি করেছেন, তাকে ১০ বছর জেলে রাখতে চায় সেনাসমর্থিত সরকার। শুধু তা-ই নয়, তার মানহানির জন্য স্ত্রী বুশরা বিবিকেও কারাগারে পাঠাতে চায় ক্ষমতাসীনরা। আর এসব পরিকল্পনা লন্ডন থেকে এসেছে বলে দাবি করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সোমবার (১৫ মে) নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ধারাবাহিক টুইটে এসব অভিযোগ করেছেন তিনি।

ইমরান খান বলেন, সম্পূর্ণ লন্ডন পরিকল্পনা বেরিয়ে এসেছে। আমি জেলের ভেতরে থাকাকালীন সহিংসতার অজুহাত ব্যবহার করে তারা বিচারক, জুরি ও জল্লাদের ভূমিকা নিয়েছে। এখন পরিকল্পনা বুশরা বেগমকে কারাগারে রেখে আমাকে অপমান করা এবং রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ব্যবহার করে আমাকে আগামী ১০ বছর আটকে রাখা।

‘এরপর পিটিআইর অবশিষ্ট নেতৃত্ব ও কর্মীদের ওপর সম্পূর্ণ দমন-পীড়ন শুরু করবে। সবশেষে তারা পাকিস্তানের বৃহত্তম ও একমাত্র ফেডারেল পার্টিকে নিষিদ্ধ করবে (যেভাবে তারা পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছিল)।

আর এসবের জন্য যেন জনগণের কোনো প্রতিক্রিয়া না থাকে তা নিশ্চিত করতে তারা দুটি জিনিস করেছে- প্রথমত, শুধু পিটিআই কর্মীদের ওপর নয়, সাধারণ নাগরিকদের ওপরও স্বেচ্ছায় সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, গণমাধ্যম সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রিত ও স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

ইমরান আরও বলেন, আগামীকাল তারা আবার ইন্টারনেট সেবা স্থগিত করবে এবং সোশ্যাল মিডিয়া (যা আংশিকভাবে চালু) নিষিদ্ধ করবে। এদিকে আমরা যখন কথা বলছি, তখন ঘর ভাঙা হচ্ছে এবং নির্লজ্জভাবে পুলিশ বাড়ির নারীদের মারধর করছে।

তিনি বলেন, এগুলো স্বেচ্ছা প্রচেষ্টা যাতে জনগণের মধ্যে এত ভয় তৈরি করা যায়, যেন আগামীকাল তারা যখন আমাকে গ্রেফতার করতে আসবে, তখন মানুষ বের না হয়।

পিটিআই প্রধানকে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতার অবৈধ ঘোষণা করে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তার প্রতিবাদে সোমবার সর্বোচ্চ আদালতের সামনে বিক্ষোভ করছে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা আদালতের গেট টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে।

ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, সুপ্রিম কোর্টের বাইরে যে নাটক করা হচ্ছে, তার কেবল একটিই উদ্দেশ্য- পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে ভয় দেখিয়ে বশীভূত করা, যেন তিনি সংবিধান অনুযায়ী রায় না দেন।

সবশেষ পাকিস্তানের জনগণের প্রতি বার্তা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আমার শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত ‘হাকীকী আজাদী’র (সম্পূর্ণ স্বাধীনতা) জন্য লড়বো। কারণ আমার কাছে এসব বদমাশের দাসত্বের চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়। আমরা ‘লা ইলাহা হা ইল্লাল্লাহ’র যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি- এক আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে মাথা নত করবো না, সেটি মনে রাখার জন্য আমার লোকদের অনুরোধ করছি। আমরা যদি ভয়ের সামনে মাথানত করি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কেবল অপমান ও বিচ্ছিন্নতাই থাকবে। যে দেশে অন্যায় ও জঙ্গলের আইন বিরাজ করে, সে দেশ বেশিদিন টিকে না।