এমপিদের শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ

দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিতদের শপথ নেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ হয়ে গেছে হাই কোর্টে।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে আবেদনটি খারিজ করে দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ।

আদালতের আদেশের পর মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, তারা এই আবেদন নিয়ে হাই কোর্টের অন্য বেঞ্চে যাবেন।

নির্বাচনে বিজয়ীরা গত ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এরপর ৭ জানুয়ারি নতুন সরকারও শপথ নেয়।

তার একদিন বাদে গত ৮ জানুয়ারি নতুন এমপিদের শপথ বাতিল করে গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়ে স্পিকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে উকিল নোটিস দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।

তার আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন ওই নোটিস পাঠান।

ওই নোটিসের জবাব না পাওয়ায় নতুন সাংসদদের শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ জানুয়ারি এই রিট আবেদন করেন তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।

নতুন এমপিদের শপথ বাতিল করে এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করতে হাই কোর্টের নির্দেশনা চাওয়া হয় সেখানে।

রিট আবেদনে বলা হয়, দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একাদশ সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।

“সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রতি সংসদ মেয়াদোত্তীর্ণ হলে পূর্বের সংসদ সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত এরা দায়িত্ব পালন করবেন। সে অনুযায়ী নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ৩ জানুয়ারি নেওয়া শপথে সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে। সংবিধানের ১৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শপথের জন্য নির্বাচিতদের উচিৎ ছিল ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪৮(৩)
এই সংবিধানের অধীন যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথ গ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের অব্যবহিত পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

অনুচ্ছেদ ১২৩(৩)
তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার (ক) উপ-দফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ, উক্ত উপ-দফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত, সংসদ সদস্যরূপে কার্যভার গ্রহণ করিবেন না।

রিট আবেদনে বলা হয়, “একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়া কেবল বেআইনিই হয়নি, বেআইনিভাবে তারা তাদের পদের মেয়াদও বাড়িয়ে নিয়েছেন।

“সংবিধানের ৭২(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২৯ জানুয়ারি। তাই শপথ নেওয়া নির্বাচিতরা শুধু আইনকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাননি, তারা তাদের সংসদ সদস্য পদটিকেও অকার্যকর করে ফেলেছেন।”

এই নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপির ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে, তবে তা নাকচ করেছে ইসি।