এনআরসিতে বাংলাদেশমুখে ভারতীয়দের জনস্রোত!

সিএএ-এনআরসিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল মুম্বাই

নিউজ ডেস্ক: গত কয়েক মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশে যেসব অনুপ্রবেশের ঘটনা জনসম্মুখে প্রকাশ পেয়েছে তা নিত্যান্তই অল্প হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, নভেম্বরে এই অবৈধ ভারতীয়দের সংখ্যা ৪৫০ জনের মতো উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এনআরসি ভীতির কারণে অবৈধ ঘোষিত হাজার হাজার ‘অবৈধ’ ভারতীয়ের এখন বাংলাদেশ অভিমুখে ছুটে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি এশিয়াভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা গোয়েন্দা ও অন্যান্য সূত্রে এই ইংগিত দিয়েছে।

এছাড়া নিয়মিত স্বল্প-আকারে পুশব্যাকের ঘটনা তো ঘটছেই। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শুধু ২৪ পরগরনার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ২০০’র মতো মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিথিল সীমান্ত পথের পাশাপাশি নদীয়া জেলার সীমান্ত দিয়েও বিপুল সংখ্যক ভারতীয় বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এরা বেঙ্গালুরু, মুম্বাই ও দিল্লি থেকে আসছে। এদের অনেকের কাছে ভারতীয় রেশন কার্ড ও আধার কার্ড রয়েছে। এমনকি অনেকের কাছে ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ডও রয়েছে। অর্থাৎ তারা ভারতেরই নাগরিক। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।

পাসপোর্টবিহীন লোকজনকে সীমান্ত পারাপারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত উত্তর ২৪ পরগনাভিত্তিক এক দালাল জানায়, গত দুই মাসে তারা সীমান্তের ওপারে [বাংলাদেশে] প্রায় ৫,০০০ মানুষ পাচার করেছে। বেশ কয়েক বার এমন সংখ্যক মানুষ পাচার করা হয়েছে।

এই কাজের জন্য ক্লায়েন্টপ্রতি, যাদেরকে ধুর বলা হয়, তাদের ঘাটমালিক (দালাল) ফিও বাড়ানো হয়েছে। কয়েক মাস আগে একজনকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য ৪,০০০ রুপি নেয়া হতো। দালাল জানায়, যখন বাঙ্গালুরু থেকে লোকজন আসা শুরু করে তখন থেকে ৫,০০০ রুপি করে ফি নেয়া শুরু হয়। তবে সীমান্তে নজরদারি বেড়ে গেলে (খারাপ হলে) ফি নেয়া হয় ৬,০০০ রুপি। এখন সীমান্তের অবস্থা আসলেই খারাপ।

বাংলাদেশ প্রশাসন অনুপ্রবেশ বন্ধ ও নজরদারির জন্য সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীদের নিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেছে। বাংলাদেশের ঝিনেদা জেলায় এমন কমিটির একজন আলমগীর হোসেন বলেন: আমরা সতর্ক। অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।

২৯ ডিসেম্বর বিএসএফ ও বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিবি)’র যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিজিবি’র ডিজি সাফিনুল ইসলাম বলেন: আমরা নিয়মিত অনুপ্রবেশকারীদের আটক করছি। সব মিলিয়ে নভেম্বর থেকে বিজিবি ৪৪৬ ব্যক্তিকে আটক করেছে বলে ইসলাম জানান।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, এরা আমাদের কাছে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করেছে। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মিরা রাতের বেলা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরজা ভেঙ্গে তাদেরকে হুমকি দিয়েছে এবং মারপিট করেছে। প্রশাসন বা পুলিশের কাছ থেকে তারা কোন সহায়তা পায়নি বলে জানিয়েছে।