এটিএম কার্ড জালিয়াতি: স্বীকারোক্তিতে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৫০ জনের নাম দিয়েছে পিটার

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: ব্যাংকের এটিএম জালিয়াতিতে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জড়িত থাকার তথ্য গোয়েন্দাদের জানিয়েছে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার বিদেশী নাগরিক জালিয়াত পিটার সেজেফান মাজুরেক। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জালিয়াতিতে জড়িত, নাকি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের নাম এতে জড়ানো হয়েছে, তা যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এবং কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৩/৪ জনকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যাংক কর্মকর্তারা সীমিত তালিকা দিয়েছে। অধিকাংশই দিয়েছে পিটার।”

সম্প্রতি ঢাকার গুলশান, বনানী ও মিরপুরের কালশীতে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চারটি এটিএম বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’বসিয়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির পর কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলে নেয়ার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় হয়।

এরপর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলা করলে তার তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ইউসিবিএলের করা মামলার এজাহারের সঙ্গে এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরায় পাওয়া এক বিদেশীর ছবিও দেয়া হয়েছিল। এর ভিত্তিতে ২২ ফেব্রুয়ারি জালিয়াত পিটার ও সিটি ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিটার শুধু গ্রেপ্তার ব্যংক কর্মকর্তাদের সঙ্গেই জড়িত ছিলো না জানিয়ে মনিরুল বলেন, “সে আরও অনেকের সঙ্গে অপরাধে জড়িত ছিল। এক বছর ধরে পিটার এটিএম জালিয়াতি করে আসছে। তবে বেশি করেছে কোনো বিক্রয়কেন্দ্রে ব্যাংকের পস মেশিন ব্যবহার করে।”

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পিটার জার্মানির নাগরিক সেটি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সে জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করতো। আর নিজেকে পোল্যান্ডের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতো। গত এক বছরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পিটার কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসব কাজে এ দেশের ৪০-৫০ জন ব্যবসায়ীও জড়িত বলে সে জানিয়েছে।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পস মেশিন ব্যবহার করে পিটার ক্রেডিট কার্ডের টাকা হাতিয়ে নিতো। উদাহরণ হিসেবে পিটার বলেছে, একজন ব্যবসায়ী পস মেশিনের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করছে। এ সময় জালিয়াত চক্র ওই ক্রেডিট কার্ডের নম্বরটি গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে চুরি করতো। এরপর ওই নম্বরটি দিয়ে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে আরেকটি কার্ড তৈরি করতো। এরপর পণ্য কিনে ওই কার্ড দিয়ে পস মেশিনে বিল পরিশোধের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, ‘এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল ব্ল্যাক শিপ মার্কেটের হর্তাকর্তাদের নাম বেরিয়ে এসেছে।’