‘এক শ্রমিকের মুজুরি দেড়মণ ধানের দাম,

ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিতের দাবিতে নেত্রকোনায় মানববন্ধন

নিউজ ডেস্ক: ‘একজন ধানকাটা-শ্রমিকের মুজুরি দিতে দেড় মণ ধানের দাম লাগে, ক্ষেত গিরস্থি কইরা কিতা অইবো। জমি লাগানোর সময় দিছি পাঁচশ’ টাকা, রোজ ধান কাটার লাইগ্গা দেওন লাগে ছয়শ’। কামলারোজ সাতশ’ টাকা। এতো মুজুরি দিয়া ধান কাইটা কী আর থাকবো!’ শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির ব্যাপারে এভাবেই বলছিলেন সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের সাদকপুর গ্রামের কৃষক সোনা মিয়া।
জানা গেছে, হাওর জুড়ে জমিতে পাকা ধান থাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে তা কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। প্রতিবছর হাওরে ফসল কাটার সময় এলে ধান কাটার শ্রমিকের সংকট হয়। এদিকে শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় অনেকে নিজ সন্তানদের স্কুল না পাঠিয়ে ধান কাটার জন্য জমিতে নিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষকদের দাবি, এতো টাকা খরচ করে ধান কাটানোর সক্ষমতা সবার নেই। আর এভাবে ধান কাটলেও মূল খরচই ওঠে না। আর ধান না কাটলে হাওরের জমিতেই পড়ে থাকবে ধান। আর দেরি করার কারণে তীব্র বাতাসের দোলায় ছড়া থেকে জমিতে পড়ে যাচ্ছে ধান। ফলে উৎপাদন অনেক কমে যায়।
সাদকপুর গ্রামের কৃষক বিন্দু বিহারী দাস বলেন, ‘কামলা রাখতে হলে তিনবেলা খাওয়ানো, গুয়া-পান,আসা-যাওয়ার খরচ, বিকালের চায়ের খরচসহ ছয়শ’ থেকে সাতশ’ টাকা মুজুরি দেওন লাগে। এমনে গিরস্থি কইরা কিতা অইবো। ধানের দাম চারশ’ থাকি পাঁচশ’ টাকা মণ আর কামলারোজ ছয়শ’ থেকে সাতশ’। কোনোভাবেই ক্ষেত গিরস্থির হিসেব মিলানো যায় না।
আব্দুল্লাহপুর গ্রামের হরমুজ আলী বলেন, ‘শ্রমিক সংকটের কারণে দুইগুণ তিনগুণ মজুরি দিয়ে কামলা রাখতে হচ্ছে।’
ইছাগরি গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন, ‘একজন কামলা সারা দিনে ১৫ শতাংশ জমিনের ধান কাটতে পারে। আর ১৫ শতাংশ জমিতে সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ মণ ধান হয়। কামলার মজুরি দিতে দেড় মণ ধান বিক্রি করতে হয়। তারপরও ধান মাড়াই দিতে আরও টাকা লাগে। এভাবে কৃষকের হাতে লাভ বলতে কোনও কিছু থাকে না।’