উপজাতি সন্ত্রাসীদের কাছে মজুদ বিপুল পরিমাণ ভারি অস্ত্রশস্ত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২ দশকেও শান্তি ফেরেনি পাহাড়ে। সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় মানুষ।

উপজাতিদের চারটি আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদী সশ্রস্ত্র সংগঠন- জনসংহতি সমিতি (জেএএসএস-মূল), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল), জেএসএস (সংস্কার) ও ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) কাছে ভয়াবহ সব মারণাস্ত্র থাকার তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।

এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- রকেট লঞ্চার, এসএমজি, বিভিন্ন ধরনের রাইফেল এবং হাতবোমা। এছাড়া দেশি পিস্তল ও বন্দুক এবং মর্টার রয়েছে।

সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আছে জেএসএস(মূল) এবং ইউপিডিএফের (মূল) কাছে। ভয়াবহ এসব মারণাস্ত্র দেশের বাইরে থেকে সংগঠনগুলো সংগ্রহ করেছে বলে জানতে পারে গোয়েন্দা সংস্থা।

১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে উপজাতি সংগঠনগুলো অস্ত্র জমা দেয়ার শর্তে ‘শান্তিচুক্তি’ করেছে। এখন তাদের কাছে নীতিগতভাবে অস্ত্র থাকার কথা নয়।

আঞ্চলিক বাহিনীগুলোর আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি এবং অন্তঃকোন্দলকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চলছেই। পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ মানুষ জিম্মি সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাডারদের হাতে। সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকা দিয়ে খুব সহজেই ক্যাডারদের হাতে অস্ত্র আসছে। তাদের কাছে এমন সব অত্যাধুনিক সয়ংক্রিয় অস্ত্র রয়েছে- যা দেশের কোন কোন বাহিনীর কাছেও নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এমনটা জানা গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, পার্বত্য অঞ্চলের সীমান্তে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে ৪৪ কিলোমিটার পথ অরক্ষিত রয়েছে। বিশাল সীমান্ত এলাকা পাহারায় নেই কোন ‘পর্যবেক্ষণ পোস্ট’। এমনকি টহল দেয়ার জন্য পায়ে হাঁটা পথও নেই। দুর্গম জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিতে পারে না। তাই ওই সীমান্ত এলাকাটি থাকছে অরক্ষিত। কিছু সংখ্যক বর্ডার অভজারভেশন পোস্ট (বিওপি) থাকলেও সেগুলোর অবস্থা অত্যন্ত করুণ। ফলে ভারত ও মিয়ানমার থেকে অবাধে অস্ত্র ও মাদক ঢুকছে পার্বত্য অঞ্চলে। টেকনাফে কড়াকড়ির পর মাদক ও অস্ত্র চেরাচালানে এ পথে ব্যবহার করছে মাদক চোরাকারবারী ও সন্ত্রাসীরা।

পাহাড়ে যত খুন হচ্ছে তার বেশিরভাগই ‘পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র থাকার’ কারণে- গণমাধ্যমে এমন বক্তব্য দিয়ে আসছেন স্থানীয় বাঙালিরা। তাদের দাবি, পাহাড়ে বাঙালিরা নিরাপদ নয়। পার্বত্যাঞ্চলে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, গুম, হত্যা ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। মূলত আঞ্চলিক দলগুলো অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে পাহাড়কে অশান্ত করে রেখেছে।