ঈদের আগে শেয়ারবাজার চালুর দাবি

১০ বছর পর শেয়ারবাজারে টানা চাঙাভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের সাধারণ ছুটির কারণে প্রায় ২ মাস ধরে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রয়োজন হলেও কোনো বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে টাকা তোলার সুযোগ পাচ্ছেন না। এ পরিস্থিতিতে ঈদের আগেরই শেয়ারবাজারে লেনদেন চলু করার দাবি উঠেছে স্টেকহোল্ডার ও বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, শেয়ারবাজারে লেনদেন না হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি আটকে রয়েছে। ফলে বেশিরভাগ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টরের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেয়া হলেও শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা কোনো ধরনের প্রণোদনা পাচ্ছেন না। তাই ঈদের আগে সীমিত আকারে হলেও শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করা উচিত। এতে কষ্টে থাকা বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে কিছু টাকা হলেও তুলতে পারবেন।

এদিকে স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে সরকার ব্যাংক, গার্মেন্টস শপিংমল সীমিত আকারে খোলার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। ব্যাংকের মতো শেয়ারবাজারও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া শেয়ারবাজারে লেনদেন করার জন্য খুব বেশি জনবলের প্রয়োজন নেই। আবার শেয়ার বিক্রি বা কেনার জন্য বিনিয়োগকারীদের ব্রোকারেজ হাউজে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই সীমিত আকারে হলেও বিনয়োগকারীদের স্বার্থে ঈদের আগে শেয়ারবাজার লেনদেন চালু করা উচিত।

স্টেকহোল্ডার ও বিনিয়োগকারী উভয় পক্ষের দাবি, শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এতে কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামতে পারবে না। সুতরাং ঈদের আগে লেনদেন চালু করলে ক্রেতা সংকটে বাজার পতনের মধ্যে চলে যাবে, এমন যে ধারণা রয়েছে তা সঠিক না। যেহেতু কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসের নিচে যাওয়ার সুযোগ নেই, সুতরাং দরপতনেরও সুযোগ নেই।

এদিকে সাধারণ ছুটির মধ্যে গত ১০ মে থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এরই প্রেক্ষিতে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে সম্মতি চেয়ে চিঠি দেন।

ওই চিঠিতে লেনদেন চালুর জন্য কিছু নীতিমালা শিথিল করার দাবি জানানো হয়। তবে কিছু নীতিমালা শিথিল করার জন্য বিএসইসির কমিশন সভার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কোরাম সংকটে কমিশন সভা করতে ব্যর্থ হয় বিএসইসি। এর প্রেক্ষিতে বিএসইসি তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত নেয়ার জন্য পাঠিয়েছে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও ১০ মে থেকে লেনদেন চালু করতে পারেনি ডিএসই।

বিনিয়োগকারী মনির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন শেয়ারবাজার বন্ধ থাকায় আমরা বেশ কষ্টে আছে। শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলবো তার কোনো সুযোগ নেই। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তাও কেউ বলতে পারে না। প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে ঘরবন্দী জীবন কাটাচ্ছি। সামনে ঈদ। এই ঈদের খরচ জোগাড় করার নিয়ে এক ধরনের হতাশার মধ্যে রয়েছি। শেয়ারবাজারে লেনদেন হলে কিছু শেয়ার বিক্রি করে টাকা জোগাড় করতে পারতাম।