ইসলাম অবমাননায় শ্যামল কান্তির গ্রেফতার ও বিচার দাবি ওলামা লীগের

নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাতকারী ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অবমাননাকারী শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচার দাবিসহ ৫দফা দাবি উপস্থাপন করে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।

আজ শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে ওলামা লীগের উপস্থাপিত দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে-

১. মোসাদের সাথে জড়িত উগ্র সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসী হিন্দু এবং জামাত-জোট এজেন্ট- যারা এদেশে আইএস সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতে চায় তাদের প্রতিহতের জন্য আলাদা আইন ও গোয়েন্দা এলিট ফোর্স তৈরী করতে হবে।

২. আসন্ন মাহে রমাদ্বানের সম্মানার্থে সব ধরনের খেলাধুলাসহ অশ্লীলতা-বেহায়াপনা বন্ধ করতে হবে এবং পরীক্ষা-ক্লাসসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। রমাদ্বানে দ্রব্যমূল্যে কারসাজীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পবিত্র ঈদের ছুটি ১০ দিন দিতে হবে।

৩. ফৌজদারী অপরাধকারীরা শিক্ষক উপাধির অনুপযুক্ত। ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাতকারী বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অবমাননাকারী শিক্ষক নামধারী শ্যামল কান্তিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

৪. নাস্তিক্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যপুস্তক তথা কুফরী শিক্ষা আইন- ২০১৬ ও শিক্ষানীতি- ২০১০ পাশ করে জামাত-জোট তথা ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে সরকার বিরোধী ইস্যূ তুলে দেয়া যাবেনা। ধর্মপ্রাণদের উত্তেজিত করার বাম ষড়যন্ত্র সফল করা যাবেনা। গণতন্ত্রের মন্ত্রী হয়ে সমাজতন্ত্রের পথ তৈরী করা যাবেনা।

৫. ফরমালিনের মিথ্যা অভিযোগে দেশীয় আম ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি ইসলামিক দলের উদ্যোগে উপরোক্ত ৫ দফা দাবীতে আজ শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমাদের এ বিশাল মানববন্ধন।

শ্যামল কান্তি ইস্যুতে দীর্ঘ বক্তৃতায় ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দরা বলেন, ঢাবি, রাবি, জবিসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফৌজধারী অপরাধী শিক্ষক নামধারীরা শাস্তি পেলেও ধর্মীয় অনুভূতির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে শ্যামল কান্তি’র আঘাত দেয়ার পর্যাপ্ত প্রমাণাদি থাকার পরও তাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছেনা। বরং নাস্তিকপন্থী কিছু মিডিয়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টিই এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ দেশী-বিদেশী মিডিয়ার অনুসন্ধানে শ্যামল কান্তি’র ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। গত ১৮মে’র বিবিসি বাংলা, ১৯ মে’র দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘটিত ১ম তদন্ত কমিটির ভিডিও ক্লিপ, থানার ওসি’র কাছে দেয়া ঐ স্কুলের ২০ ছাত্রের স্বীকারোক্তিতে শ্যামল কান্তি’র ইসলাম ধর্ম অবমাননার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া সাংসদ সেলিম ওসমান সংবাদ সম্মেলনে দলীল-প্রমাণসহ শ্যামল কান্তি’র ইসলাম ধর্ম অবমাননার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ছাত্র এবং অভিবাবকদের ভিডিও ফুটেজেও পবিত্র দ্বীন ইসলাম নিয়ে কটুক্তির স্বীকারোক্তি রয়েছে। তারপরও ইসলাম বিদ্বেষী শ্যামল কান্তিকে বাঁচানোর পায়তারা করছে শিক্ষামন্ত্রীসহ ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী বামপন্থীরা। তাদের সাথে জোট বেধেছে নাস্তিকপন্থী ‘বিডি নিউজ২৪ ডট কম’, ৭১ টিভি, প্রথম আলো, মোসাদের এজেন্ট নাইমুল ইসলামের‘আমাদের অর্থনীতি’সহ অনেক হিন্দুত্ববাদী মিডিয়া।

তারা বলেন, গত ১২ জানুয়ারি দোলাইরপাড় উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়, ০৯ জুলাই ২০১৪ ময়মনসিংহের ভালুকায় শিক্ষককে মারধর করা হয়, ভোলায় বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়, কোনো কারণ ছাড়াই গৌরীপুর কলেজ শিক্ষক মোঃ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে উলঙ্গ করে ছেলে ক্যাম্পাসে ঘুরানো হয়। তখন তো ইসলাম বিদ্বেষী মহল শিক্ষক অবমাননার নামে আন্দোলনে নামেনি। যখন শিক্ষক কর্তৃক ইসলাম অবমাননার বিষয়টি এলো তখন শিক্ষক অবমাননার প্রচারণা কি উদ্দেশ্যমূলক নয়?
বক্তারা বলেন, মোসাদের এজেণ্ট শিপন বসুদের মৌলবাদী হিন্দু সংগঠনগুলোর মদদে দেশের বিভিন্ন স্কুলে অব্যাহতভাবে আল্লাহ পাক এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কটূক্তি করে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!

যেমন এর আগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মৌলবাদী হিন্দু শিক্ষক শংকর বিশ্বাস, শরীয়তপুরের জাজিরার জয়নগর জুলমত আলী উচ্চবিদ্যালয়ের তপন চন্দ্র বাড়ৈ, চিতলমারীর হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণপদ মহলী ও সহকারী শিক্ষক অশোক কুমার ঘোষাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দেবাশীষ দয়াময় নামের এক স্কুল শিক্ষক, জামালপুর জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক সুপ্রিয় দে খাঁ, লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র সরকার, বৃন্দাবনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রসেঞ্জীৎ চন্দ্র শীল, মৌলভীবাজারের বড়লেখার শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাস কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজলোর উত্তর হাওলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সঞ্চতিা রাণী সাহা, যশোরের অভয়নগরে মহাকাল কলেজিয়েট স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক মনোরঞ্জন পশারী, চান্দিনা উপজেলার এএমএফ উচ্চ বিদ্যালয়ের জুনিয়র শিক্ষক নীহার চন্দ্র সূত্রধররা ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কটূক্তি করলেও তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা না নেয়ায় শ্যামল কান্তিরা আবারো ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছে।

বক্তারা আরো বলেন, ফৌজদারী অপরাধকারীরা শিক্ষক উপাধির অনুপযুক্ত। এরা শিক্ষক নামের কলংক। এদের কাছে শিক্ষার্থীদের কিছু শেখার নেই এরা বরং শিক্ষার্থীদের পথভ্রষ্ট ও বিপথগামী করবে। শ্যামল কান্তি শুধু ধর্মীয় অনুভূতির মতো ফৌজধারী অপরাধেই অপরাধী নয় বরং শিক্ষার্থী নির্যাতনের মতো ফৌজধারী অপরাধেও সে অপরাধী। কেননা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শিক্ষার্থীকে শারিরিক ও মানসিক আঘাত করা দ-নীয় অপরাধ।

শিক্ষা মন্ত্রনালয় ২০১১ সালে ৯ই আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১১ ধরনের শারীরিক শাস্তি ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করে। নীতিমালা অনুযায়ী, কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরণের শাস্তি দেয়ার অভিযোগ উপস্থাপন এবং ওই শিক্ষক অভিযুক্ত হলে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫, সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য এবং দ-নীয় হবে। পাশপাশি ২০০৮ সালে শিক্ষামন্ত্রনায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যারা শারীরিক শাস্তিদাতা শিক্ষকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দ-বিধির ফৌজধারী আইন ১৮৬০, ১৯৭৪ সালের শিশু আইন এবং ক্ষেত্রমতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে গ্রহণেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বক্তারা বলেন, শিশু শিক্ষার্থী রিফাতকে নির্যাতনকারী হিসেবে প্রচলিত আইনের আলোকে শ্যামল কান্তি ফৌজধারী অপরাধে অপরাধী। তাই সে শিক্ষক নয় বরং নিপীড়ক এবং ইসলাম দ্রোহী। তার জন্য মায়াকান্না করা মানে অপরাধীর পক্ষে মায়াকান্না করা, যা দেশের প্রচলিত আইনকে অবজ্ঞা করার নামান্তর। শ্যামল কান্তিকে কান ধরে উঠ-বস করানোয় বামপন্থীরা চেচামেচি করলেও ছাত্র রিফাতকে শারিরীক ও মানসিক শাস্তি দেয়ায় চেচামেচি নেই কেন? শাস্তিদাতা শ্যামল কান্তির শাস্তি হবেনা কেন? আইনত নিষিদ্ধ থাকলেও একজন শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেয়ায় প্রমাণিত হয় শ্যামল কান্তি শিক্ষক হয়েও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
বক্তারা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ কয়েকদিন আগে বলেছেন, “সব শিক্ষক ধোয়া তুলসি পাতা না।” সে ক্ষেত্রে তাদেরকে যে, শাস্তি দেয়া যাবেনা তা নয়। কারণ ভিকারুন্নেছার পরিমল, চাঁদপুরের অজয় কুমার, চিতলমারীর কৃষ্ণপদ মহলী ও সহকারী শিক্ষক অশোক কুমার ঘোষাল নামক শিক্ষকদের তো শাস্তির উদাহরণ রয়েছে।

কাজেই শিক্ষক তকমা থাকলে তাকে শাস্তি দেয়া যাবেনা, এমন কোন আইন এদেশে নেই। বরং শ্যামল কান্তি’র আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শান মুবারকে অবমাননার বিষয়টি শুধু একজন নয় ক্লাসের কমপক্ষে ২০ জন ছাত্র যেখানে স্বাক্ষী রয়েছে সেখানে শ্যামল কান্তি কে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? সে যদি হিন্দুদের দেবী দূর্গা সম্পর্কে কটুক্তি করতো তখন কি তাকে ছেড়ে দেওয়া হতো? সুতরাং অবিলম্বে ইসলাম অবমাননাকারী শিক্ষক নামধারী শ্যামল কান্তিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

মুসলিম বিশ্বের শত্রু ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ; মুসলিম বিদ্বেষী শিপন বসুদের মৌলবাদী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এবং বিএনপি’কে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী চক্রান্ত করছে। মোসাদের এজেণ্ট শিপন বসুরা গত ৬ মে মোদির গুরু জয়েন্দ্র সরস্বতীর সাথে সাক্ষাৎ করে, যাতে মোদি বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার বিরোধী অবস্থান বর্তমান নেয়। এসব অপতৎপরতার মাধ্যমে এদেশের মৌলবাদী উগ্র হিন্দুরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটানোর পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে। এদের অপতৎপরতার ফলেই সম্প্রতি ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধে সহায়তা দেবে ভারত”।

বক্তারা বলেন, সরকার বিরোধী তৎপরতায় এদেশের মার্কিনপন্থী উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোকে মোসাদ যুক্ত করেছে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী বিএনপি মোসাদের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে মোসাদের এজেণ্টরা খালেদাকে ক্ষমতায় আনতে ভারতের সাথে সরকারের সর্ম্পকের অবনতি ঘটাতে মার্কিনপন্থী উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে কাজ করছে। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় আসলে নাকি তাদের ৩-৪ জন মন্ত্রী দেবে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত এবং ভারতের সাথে সর্ম্পক অবনতিতে কাজ করে যাচ্ছে “বাংলাদেশ মাইনোরিটি ওয়াচ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, জাগো হিন্দু পরিষদ, মার্কিন পন্থী উগ্র হিন্দু ইসকন, হিন্দু সংহতি ইত্যাদিসংগঠনগুলো। এদেশে হিন্দুদের উস্কানী দিতে ও সাম্প্রদায়িক ক্ষেত্র প্রস্তুতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশ-বিদেশে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।

সুতরাং যেসব সাম্প্রদায়িক ও ষড়যন্ত্রী হিন্দু এদেশে আইএস সৃষ্টিসহ মোসাদের সাথে আতাত করে বিভিন্ন দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করতে চায় তাদের প্রতিহতের জন্য আলাদা আইন ও গোয়েন্দা এলিট ফোর্স তৈরী করা অতীব জরুরী। কারণ, মার্কিনপন্থী হিন্দু ও নাস্তিকদের ব্যবহার করে এদেশে আইএস-এর ধোয়া তুলে আমেরিকা এ দেশকে অস্থিতিশীল ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে।

বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের একটি মহল মনে করেন, হিন্দু মানেই আওয়ামী লীগ বান্ধব- এ মিথ্যা থেকে সরে আসার সময় হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, হিন্দুদের একটি অংশ মার্কিনপন্থী। প্রতিবেশি দেশের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার একটি অংশও মার্কিনপন্থী। নাস্তিকদেরও একটি বড় অংশ মার্কিনপন্থী। এজন্য আমেরিকা নাস্তিকদের আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এসব মার্কিন তথা বিএনপিপন্থী হিন্দুরাই বর্তমানে এদেশে হিন্দুদের সম্পদ লুণ্ঠন ও নারী ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ ঢালাওভাবে করে যাচ্ছে। আমেরিকা তাদের ব্যবহার করে মোসাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে অনেকটাই অগ্রসর হয়েছে।

মার্কিনপন্থী সাম্প্রদায়িক হিন্দুরা প্রেপাগান্ডা চালাচ্ছে, যা গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ অনলাইন পত্রিকাগুলোতে এসেছে ‘ধর্ষণ সরকার সমর্থকদের অধিকারে পরিণত হয়েছে’। হিন্দু মেয়ে ধর্ষণ আ’লীগের মৌলিক অধিকার: হিন্দু পরিষদ। একই তারিখে দৈনিক ভোরের কাগজে এসেছে, ‘সরকারের লোকেরাই হিন্দুদের জমি দখল করছে’। ৮ জানুয়ারি ২০১৬ বিবিসি বাংলায় এসেছে, ‘আওয়ামী এমপির বিরুদ্ধে হিন্দুদের জমি দখলের অভিযোগ’। ০৬ আগষ্ট ২০১৫ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এসেছে, ‘হিন্দুদের ‘জমি দখলে’ মন্ত্রী-এমপিরাও’।

অনলাইন পত্রিকা তাজাখবর ডটকমে এসছে, প্রবীর মিত্র বলেছে, ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের সুফল ভোগ করে আওয়ামী লীগ’। ২৩ মে ২০১৬ তারিখে দৈনিক সংগ্রামে এসেছে, সাংবাদিক সম্মেলনে মাইনরিটি পার্টির সভাপতি শচীন্দ্র লাল দে- ‘নৌকায় উঠে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়’। গত ৩০ এপ্রিল ২০১৬ এশিয়ানবার্তা ২৪ ডটকমে এসেছে- রানাদাস গুপ্ত বলেছে, ‘আওয়ামী লীগ নেতার ‘নির্যাতন’ বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়ল সংখ্যালঘু ৩০ পরিবার’। ০৬ মে ২০১৬ তারিখে নিউজওয়ার্ল্ড বিডি.কমে এসেছে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী বলেছে, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংখ্যালঘু নির্যাতন পাকিস্তানকেও হার মানিয়েছে’।

 

আসন্ন মাহে রমাদ্বানের সম্মানার্থে সব ধরনের অশ্লীলতা-বেহায়াপনা বন্ধ করা এবং পরীক্ষা-ক্লাসসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পাশাপাশি পবিত্র ঈদুল ফিতরে ১০ দিন ছুটি দেয়ার দাবি জানান ওলামা লীগ।

এ প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা তথা দুই ঈদ হলো মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় প্রধান উৎসব। এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠি মুসলমান। এদেশের রাষ্ট্রধর্ম হলো ইসলাম। অথচ দুই ঈদে ছুটি দেয়া হয় মাত্র তিন দিন। ফলে দেশের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, পরিবহন সংকট,অসহনীয় যানযট ইত্যাদি কারণে যেতে-আসতেই দুই দিন চলে যায়। তাহলে ঈদের ছুটি থাকে কোথায়? অথচ ইউরোপ-আমেরিকায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব খ্রিষ্টমাস ডে উপলক্ষে মাসব্যাপী ছুটি দিয়ে থাকে। সুতরাং এদেশে কেন ঈদের ছুটি ১০ দিন দেয়া হবে না? অবিলম্বে দ্ইু ঈদের ছুটি ১০ দিন দিতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, পবিত্র রমজান মাস হলো তাক্বওয়া তথা আল্লাহভীতি হাসিলের মাস। এই পবিত্র মাসেও দেশী-বিদেশী টিভি চ্যানেলগুলো গানবাজনা, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি অশ্লীল অনুষ্টান প্রচারে কুণ্ঠাবোধ করেনা। এসব চ্যানেলগুলো সবাই তথাকথিত আধুনিকতার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। রমজান মাসের সারাদিনই চলে বাংলা-হিন্দি অশ্লীল সিনেমা। আযানের পরপরই শুরু হয় নাচ, গান, ব্যান্ড শো অথবা ফ্যাশন শো। তাছাড়া তো রয়েছে ভারতীয় চরম অশ্লীল টিভি সিরিয়াল। এ পবিত্র মাসেও চলে সারা বছরের মত নারী প্রদর্শনী। এমনকি তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠানের মাঝেও প্রচারিত হয় সেই সব গতানুগতিক অশ্লীল বিজ্ঞাপন চিত্র। এসবের মাধ্যমে বেয়াদবি, হানাহানী, প্রতারণা, গুরুজনে অবহেলা, অন্যকে হেয় করাসহ এমন কোন অশ্লীলতা নেই যা শিখানো হচ্ছে না। এসব অশ্লীল অনুষ্টান দেখানোর ফলে তাক্বওয়া হাসিল তো দূরের কথা বরং রোজাদারদের হারাম কাজে লিপ্ত হতে উদ্ভুদ্ধ করে, বাধ্য করে।

সুতরাং রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় সব মুসলমান যাতে তাক্বওয়া হাসিল করতে পারে তাই অবিলম্বে টিভি-সিনেমাসহ সব ধরনের অশ্লীলতা বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশে এসে ভারতীয় নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকাদের অশ্লীলতা ছড়ানো বন্ধ করতে হবে।

এছাড়া বিতর্কিত শিক্ষানীতি নিয়েও সমালোচনা করেন এবং এই শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি জানান ওলামা লীগ।

এ ব্যাপারে বক্তারা বলেন, নাস্তিক্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যপুস্তক তথা কুফরী শিক্ষা আইন- ২০১৬ ও শিক্ষানীতি- ২০১০ পাশ করে জামাত-জোট তথা ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে সরকার বিরোধী ইস্যূ তুলে দেয়া যাবেনা। ধর্মপ্রাণদের উত্তেজিত করার বাম ষড়যন্ত্র সফল করা যাবেনা। গণতন্ত্রের মন্ত্রী হয়ে সমাজতন্ত্রের পথ তৈরী করা যাবেনা।

বক্তারা বলেন, ধুরন্ধর বামপন্থী নাহিদ তার সারাজীবনের বামচিন্তা তথা ইসলাম বিদ্বেষী চিন্তা ও আদর্শ আওয়ামী লীগের উপর ভর করে পূরণ করে নিয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের ব্যানার ছাড়া ও নৌকা মার্কা ছাড়া একটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জনপ্রিয়তাও তার নেই। কাজেই আমরা আবারো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, জোটের উপর যেমন জামাত তেমনি আওয়ামী লীগের কাঁধে ইনু-মেনন-নাহিদ-বাদল জোট। এদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সাবধান না হলে তা হবে আত্মঘাতী।

তবে এক্ষেত্রে আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইনের বিরোধীতা নিয়ে আমরা কোন ধর্মব্যবসায়ী দলকে রাজনীতি করতে দিবনা এবং এ নিয়ে যাতে জামাত জোট তথা ধর্মব্যবসায়ী দল রাজনীতি করতে না পারে সে জন্যই আমরাই প্রথম সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ করেছিলাম।

বক্তারা বলেন, আজকে শিক্ষানীতি ও পাঠ্যপুস্তকের বিরুদ্ধে মৌসুমী ও সুবিধাভোগী তথাকথিত ইসলামীরা যা বলছে তা সব ওলামা লীগের থেকে ধার করা। অথচ ওলামা লীগই সর্বপ্রথম ২০১৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষানীতি এবং পাঠ্যপুস্তকের ইসলাম বিরোধী বিষয়গুলো সরকারের কাছে তুলে ধরেছে। সেগুলো বাতিলের আহবান জানিয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছিল, বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে ১ম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা বইয়ে অন্তর্ভূক্ত গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধসমূহের মধ্যে মুসলমান লেখকদের তুলনায় বিধর্মী হিন্দু লেখকদের লিখাকে নিরঙ্কুশ প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যেমন ১ম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত গল্প ও কবিতার সংখ্যা ১৯৩টি। এরমধ্যে হিন্দু ও নাস্তিকদের লেখার সংখ্যা হলো ১৩৭টি। যা সর্বনিম্ন শতকরা ৫৭ ভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৮২ ভাগ প্রাধান্য পেয়েছে।

প্রসঙ্গত আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, ওলামা লীগের আবেদন আপনি এখনই আমলে নিন। তাহলে এটা নিয়ে কেউ রাজনীতি করতে পারবেনা। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো- আপনি ২০১০ সালে বলেছিলেন শিক্ষানীতি কোন বেদবাক্য নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবেনা। কিন্তু আমাদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও বারবার বলার পরও তা পরিবর্তন করছেন না। অর্থাৎ আপনি জামাত-জোটকে শিক্ষানীতি নিয়ে আন্দোলন করার সুযোগ দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে সমাজতন্ত্র কায়েমের নেপথ্য কুশীলব হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু ওলামা লীগ এ ষড়যন্ত্র শক্ত হস্তে নস্যাত করবে। ইনশাল্লাহ!

ফরমালিনের মিথ্যা অভিযোগে দেশীয় আম ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিগত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীতে ২২ দিন আমপাড়া ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞার এ ২২ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবসায়ী ও চাষীদের উপর হয়রানি করা হয়। ফলে কোনো বাগান মালিক কিংবা ব্যবসায়ী বাগান থেকে যথাসময়ে আম নামাতে পারেনি। পাশপাশি দেশব্যাপী ফরমালিনের নামে দেশীয় আম ধ্বংস অভিযান চালানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আম ব্যবসায়ীরা ফরমালিন পরিমাপক যন্ত্র সঠিক নয়, তা বারবার বললেও প্রশাসন আম ধ্বংস অব্যাহত রাখে। অথচ উচ্চ আদালতে ‘ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ’ বলে প্রমাণিত হয়। ততোদিনে কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার আমবাণিজ্য ধ্বংস হয়। ভুক্তভোগীরা পায়নি কোনো ক্ষতিপূরণ। সারাদেশের লাখ লাখ লোক পথে বসে।

বক্তারা বলেন, আমাদের প্রশ্ন হলো- শুধুমাত্র দেশীয় আম বা দেশীয় ফলের মৌসুমে ফরমালিন অভিযান চালানো হয় কেন? ফরমালিন বিরোধী অভিযান পরিচালনাকারীরা আমদানিকৃত ফলের ক্ষেত্রে অভিযান চালাতে সারাবছরই অন্ধ ও বধির থাকে কেন?

কেন্দ্রীয় আওয়ামী ওলামা লীগের মানববন্ধনে সমন্বয় করেন, আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, শায়েখ আলহাজ্জ মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, সভাপতি-বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন প্রমূখ।