‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় লিগ্যাল নোটিশ

‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় নেত্রকোনা জেলার কলমান্দা উপজেলার ইউএনওকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.বি.এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুহম্মদ মাহদী হাসান।রোববার বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি এডভোকেট মাসুদুজ্জামান রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নোটিশটি পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১৬ এপ্রিল ২০২০ তারিখে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদ বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-কে “স্যার” না বলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেছে নেত্রকোনা জেলা কলমাকান্দা থানার অফিস ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম। সে এ সময় ওই শিক্ষার্থীকে ‘ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট হলো মাইগ্যা ডিপার্টমেন্ট, এখানে তো মাইগ্যারা পড়ে’ বলে মন্তব্য করে।

নোটিশে খবরের বরাত দিয়ে বলা হয়, ভবানীপুর এলাকার দুই বাড়িতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে লোকজন আসায় এলাকায় ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছিলো। এরপর এলাকা লকডাউন করার জন্য এলাকার লোকজন চেয়ারম্যানসহ নাজিরবাজার এলাকায় ইউএনও’র কাছে অনুরোধ করেন। এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থী ইউএনও-কে স্যার না বলায় তার উপর চড়াও হন কলমাকান্দা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম। তিনি এসময় ওই শিক্ষার্থীকে জেরা করেন।

এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীর বিভাগ ‘ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট হলো মাইগ্যা ডিপার্টমেন্ট, এখানে তো মাইগ্যারা পড়ে’ বলে মন্তব্য করেন। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর একটি স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উক্ত মন্তব্যকে অত্যন্ত অসম্মানজনক ও মানহানীকর উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, পত্রিকায় প্রকাশ্যিত ঘটনাটি ও আপনার মন্তব্যটি অত্যন্ত অসম্মানজনক ও মানহানিকর। বাংলাদেশের কোনো নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মকর্তাকে “স্যার” বলতে বাধ্য নন। এটি মূলত ব্রিটিশ আমলের একটি ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি। তাই কোনো শিক্ষার্থী যদি কলমাকান্দার ইউএনও-কে “স্যার” সত্যিই না বলে থাকেন, সেটি বাংলাদেশে বিদ্যমান কোনো আইনে অপরাধ নয়। বিশেষত উক্ত শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ডিপার্টমেন্টের ছাত্র, সেই ডিপার্টমেন্ট নিয়ে আপনার অশালীন মন্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও মানহানিকর।

যে ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করেন, সেই ডিপার্টমেন্টকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলাটা প্রকারান্তরে দ্বীন ইসলামেরই অবমাননা। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ মোতাবেক “…আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।” সুতরাং সুনির্দিষ্ট কোনো আইনের লঙ্ঘন না হলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের প্রতি অসম্মানজনক কোনো কথা বলা যাবে না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী কার্যত কোনো অপরাধ করেননি। বরং উক্ত শিক্ষার্থীকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলতে গিয়ে পুরো ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলেছে এবং প্রকারান্তরে দ্বীন ইসলামকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করেছে।

উক্ত নোটিশে এ ধরণের অবমাননাকর মন্তব্য প্রত্যাহার করে সুস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করা হয়। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।