ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা: ঋণের কিস্তি বন্ধের দাবি পটুয়াখালীর জেলেদের

নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার (৭ অক্টোবর) থেকে জন্য সাগর ও নদীতে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। এ সময় বেকার সময় পার করবেন পটুয়াখালীর জেলেরা। তাই তাদের সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে ২৫ কেজি করে চাল। তবে নিষেধাজ্ঞার এ সময় ঋণের কিস্তি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর থেকেই দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। তবে সারাদেশের পরিস্থিতি এক নয়। পটুয়াখালীর কিছু কিছু এলাকার জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাননি। এ কারণে অনেকে জেলেই ধারদেনা করে সংসার পরিচালনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের অনেকটা দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।
তারা বলছেন, সরকার চাল দিলেও মাছ-সবজিসহ অন্য সামগ্রী তো কিনতে হবে। সেই অর্থের যোগাড় করতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। এর পর ঋণের কিন্তু পরিশোধ করতে হলে একেবারে পথে বসতে হবে।

পটুয়াখালী দুর্গম দ্বীপ চর মন্তাজ। এখানে অধিকাংশ মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ চরের বাসিন্দা আবুল মাঝি বলেন, ‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় বেসরকারি একটি এনজিও থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ট্রলার মেরামতসহ সংসার চালিয়েছি। প্রতি সপ্তাহে আমাকে ১৭০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। কিন্তু ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ হলেও বৈরি আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল থাকায় খুব বেশি মাছ ধরতে পারিনি। ফলে বেশ কয়েকটি কিস্তি দিতে পারিনি। অপরদিকে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। এ সময় পরিবার কীভাবে চালাবো বুঝে উঠতে পারছি না।’

আবুল মাঝির মত উপকূলের অনেক জেলেদের একই অবস্থা। এ মৌসুমে যা মাছ পেয়েছেন তা দিয়ে সংসার চালানো তাদের জন্য দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এছাড়া জাল, নৌকা মেরামত এবং জ্বালানি তেল বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়। এমন পরিস্থিতিতে জীবন ও জীবিকা নিয়ে চরম সংকটের মধ্যে আছেন জেলেরা।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরগুলোতে সরকারিভাবে ২০ কেজি করে চাল দিলেও এবার জেলায় ৬৩ হাজার ৮০০ জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এরই মধ্যে বরাদ্দ পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে। তবে জেলেদের ঋণের কিস্তি বন্ধ করার বিষয়ে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু বিষয়টি মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি দেখভাল করে। এ ছাড়া জেলেরা সারা বছরই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নানা কারণে ঋণ নিয়ে থাকে।