ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

ঋণ সংকটে পড়বে তেল আমদানিকারক কিছু আরব দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আরবের অনেক দেশ রয়েছে যারা তেল আমদানির ওপর নির্ভর করে। এসব দেশ ২০২২ সাল শেষ করবে ব্যাপক ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে। মিশর, জর্ডান ও তিউনিসিয়ার জিডিপির প্রায় ৯০ শতাংশ ঋণ রয়েছে। অন্যদিকে ২০২০ সালেই খেলাপিতে পরিণত হয় লেবানন। দেশটি এখনো ঋণ পুনর্গঠন করতে পারেনি, যা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে ঋণ। এরই মধ্যে অনেক দেশ আইএমএফের ঋণ খুঁজছে বা প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিদেশি সহায়তা সত্ত্বেও দেশগুলো ঋণের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সংগ্রাম করবে। ফলে আসন্ন বছরটিতে দেখা যাবে নিয়ন্ত্রিত বাজেট ও ঘাটতি। এতে লাখ লাখ নাগরিক ভোগান্তির শিকার হবেন।

চলতি বছরের অক্টোবরে আইএমএফের সঙ্গে তিন বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির ঘোষণা দেয় মিশর। বলা হচ্ছে, ২০২৩ সালে দেশটির আয়ের প্রায় অর্ধেক যাবে ঋণ খাতে। কিন্তু তারপরও মিশরের আরও ঋণ প্রয়োজন। এজন্য সেখানের সরকার পুঁজি বাড়াতে কিছু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিক্রি করবে। পাশাপাশি গ্যাস রপ্তানি বাড়াতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাবে। তাছাড়া আমদানিতেও নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকবে, যদিও তা ২০২২ সালের মতো আগ্রাসী হবে না। কমতে পারে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতেও ব্যয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে মুদ্রারও অবমূল্যায়ন করেছে মিশর। ২০২২ সালের দেশটির মুদ্রার মূল্য কমেছে ৩৫ শতাংশ। অনেক বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, আরব দেশটির মুদ্রার মান আরও কমতে পারে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সেখানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ শতাংশে। ২০২৩ সালে যা আরও বাড়তে পারে।

এদিকে লেবানন এপ্রিলে আইএমএফের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ের একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। জানা গেছে, তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে দেশটিকে বিভিন্ন শর্ত পূরণ করতে হবে। বিশেষ করে আর্থিকখাতে। যদিও এর কিছু এখনো বাস্তবায়ন করেনি তারা।

সংকট রয়েছে তিউনিসায়ও। দেশটির পাবলিক ট্রেড ইউনিয়ন আইএমএফের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করছে। কারণ তারা মনে করছে, মজুরি ও ভর্তুকিতে পরিবর্তন আসতে পারে, যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে। সব মিলিয়ে দেশটিতে অস্থিরতা বিরাজ করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দেশগুলো উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে সহায়তার আশা করবে। কারণ জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্য যদি অব্যাহত থাকে তাহলে অঞ্চলটিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে তাদের।

ঋণের অর্থ দিয়ে অনেক প্রশ্নবিদ্ধ মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে মিশর। তিউনিসিয়াকে বিশ্বের বৃহত্তম পাবলিক মজুরি বিলগুলোর একটি পরিশোধ করতে হবে। লেবানন তার অর্থনীতিকে একটি বিশাল পঞ্জি স্কিমে পরিণত করেছে। তাদের কারোরই ইতিবাচক সংস্কারে মনোযোগ নেই।