আশ্চর্য উদ্ভিদ গিলালতা

আশ্চর্য উদ্ভিদ গিলালতা

নিউজ ডেস্ক: আমাদের প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা আশ্চর্য এক উদ্ভিদ গিলালতা। সুযোগ পেলে এই লতা এক কিলোমিটার দূরত্বেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, পরিণত বয়সে লতানো এই গাছের কাণ্ড রীতিমতো স্বাভাবিক গাছের কাণ্ডের মতোও হয়ে উঠতে পারে। এই লতা বনের ভেতর বিশাল এলাকা জুড়ে অনেক গাছকে জড়িয়ে জীবন্ত সেতুও তৈরি করতে পারে।

গিলালতার খ্যাতি মূলত তার ফলের জন্যই। কারণ লতানো গাছে এমন দীর্ঘাকৃতির ফল সচরাচর দেখা যায় না। জানামতে, শিম পরিবারে এটাই সবচেয়ে বড় ফলের গাছ। আমাদের দেশে দর্জিরা কাপড়ে চিহ্ন দেওয়ার কাজে গিলার বীজ ব্যবহার করে থাকেন। দেশের কোথাও কোথাও এখনও গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে গিলার বীজ ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে।

গিলালতা (Entada rheedii) মজবুত কাণ্ডের লতাজাতীয় চিরসবুজ উদ্ভিদ। এই গাছ কমপক্ষে ১৪০ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। জীবন্ত গাছ থেকে শুরু করে যে কোনো বাহনেই এরা অতি দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে। এই গাছের পাতা যৌগিক এবং পত্রফলক ২ থেকে ৬টি পত্রকযুক্ত থাকে। গাছটির লতানো কাণ্ড মোটা, আঁকাবাঁকা, কিছুটা বিক্ষিপ্ত এবং বেশ শক্তপোক্ত ধরনের। পুষ্পমঞ্জরি ১২ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। সরু ও সাদা পাপড়ির ফুলগুলো ফোটে মে মাসের দিকে। অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে ফলগুলো পরিপক্ক হয়ে ওঠে। প্রতিটি ফলে ১০-১৫টি করে বীজ থাকে এবং বীজগুলো চ্যাপ্টা গোলাকার, শক্ত ও গাঢ় লালচে বর্ণের।

গিলালতা চমৎকার ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি গাছ। গিলালতার বীজের শাঁস জ্বরে, বাহ্যিক ক্ষত সারাতে এবং চর্মরোগে বেশ কার্যকর একটি মহৌষধ। তা ছাড়া জন্ডিস, দাঁতব্যথা ও আলসারে গিলা গাছের ছাল সিদ্ধ করে সেই ক্বাথ নিয়মিত ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিলার ফল ভাজাকে কফির বিকল্প এবং বিরেচক হিসেবে গণ্য করা হয়।