আমেরিকায় এক বাংলাদেশির ৩৭ বছরের কারাদণ্ড

প্রবাস ডেস্ক: ১২ বছর বয়সী ভাগ্নির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিনিকে ৩৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির এক আদালত। আদালত জানায়, মির্জা আফজাল হোসেন নামে ওই ৫৬ বছর বয়সী বাংলাদেশি জোর করে এক শিশুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। এছাড়া নথি জালিয়াতি ও পরিচয় লুকানোরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

গত ১১ জানুয়ারি আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। ২০০৬ সালে দেশজুড়ে শিশু সুরক্ষায় শুরু হওয়া প্রকল্প প্রজেক্ট সেফ চাইল্ডহুডের আওতায় এই মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।

মামলার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল এজেন্ট জেমস সি স্পেরো বলেন, ‘তিনি ভেবেছিলেন যে এই ঘৃণিত কাজ করে সে পালিয়ে যাবে এবং অন্যদের ওপর দায় চাপাবে।’

ব্ল্যান্ডন ফ্লোরিডার বাসিন্দা আফজাল হোসেন তার পরিবার, বোন ও তার মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবেই সেখানে যায় তার পরিবার।

বিচার বিভাগ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, আফজালের আত্মীয়রা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন ছিলো, তাদের কোনও চাকরি ছিলো না, চলাচল করতো না এমনকি ইংরেজিও জানতেন না তারা। সবসময়ই বাড়িতে থাকতেন। এই পরিস্থিতিতেই ১২ বছর বয়সী ভাগ্নির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন আফজাল।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওই মেয়েকে মার্কিন ধারার পোশাক, রোমান্টিক গয়না ও সেলফোন কিনে দেয় আফজাল। এছাড়া তাকে যৌন প্রস্তাব দেয় এবং পরিবারের সামনেই তার সাথে সঙ্গীর মতো করে আচরণ করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আফজালের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ২০১২ সালের প্রথমদিকে তার আত্মীয় আর ওই ভাগ্নি তার বাড়িতে চলে আসে। কয়েকবছর ধরে তার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাকে স্কুল থেকে বের করে আনা, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ও বারবার ফোন করে যোগযোগ করতেন।

এছাড়া যৌন প্রস্তাব সম্বলিত আর্কা পাঠাতো, বারবার বোঝাতে চাইতো যে তাকে বিয়ে করতে চায়, ভালোবাসে। এছাড়া বাবা-মা দ্বারা নিপীড়িত হচ্ছে এমন মিথ্যা অভিযোগ তৈরি করার জন্য প্ররোচিত করে তাকে।

তদন্তকারীরা প্রমাণ হাজির করে যে ২০১২ সালে আফজাল বাংলাদেশে গিয়ে ওই মেয়ের ভুয়া জন্মসনদ বানায় যেখানে তার বয়স ৩ বছর বেশি বলা আছে। এরপর সেই জন্মসনদ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা করার চেষ্টা করে।

তবে এখন পর্যন্ত আফজালের আইনজীবীর পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।