আধুনিক নগর সুবিধা পৌঁছে যাবে গ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক: এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ শীর্ষক আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে গ্রামকে নগরে পরিণত করা হবে। এ লক্ষ্যে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ উদ্যোগ গ্রহণের বিশেষ অঙ্গীকার করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহরের সকল সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এতথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মো. ইস্রাফিল আলম। জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিও কেন্দ্রীয় দর্শন হিসেবে গ্রামকে সবসময় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। স্বাধীন দেশে জাতির পিতা নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা, কুটির শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল পরিবর্তনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদে অঙ্গীকার যুক্ত করেছিলেন। গত দুই মেয়াদে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারে বহুমাত্রিক তৎপরতায় গ্রামে অনেক আধুনিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

আমার গ্রাম-আমার শহর অঙ্গীকারটি বাস্তবায়নে সরকার যে সকল পরিকল্প গ্রহণ করেছে তা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, উন্নত যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, উন্নত পয়:নিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুত ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুত গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহরের সকল সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রী জানান, গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রামীণ পরিবহন ও যোগাযোগ এবং গ্রামীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গ্রামীণ পরিবারের আয় ও কর্মসংস্থান বেড়ে চলেছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে একাধিক সভা ও ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- দেশব্যাপী প্রতিটি গ্রামে উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ স্থাপন সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, পল্লী এলাকায় গ্রামীণ হাটবাজার সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, গ্রাম পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন বিষয়ক পরিকল্পনা এবং নিরাপদ পানির উৎস সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় অর্থ বছরওয়ারী একশ’ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করার লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা সরকারের আপাতত নেই।
সরকারি দলের হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে নতুন অন্তর্ভূক্ত ১৮টি ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এ নির্বাচনী এলাকায় শীঘ্রই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু করা হবে।