আজারবাইজানের আক্রমণে অস্ত্র ফেলে পালাচ্ছে আর্মেনীয় বাহিনী

আজারবাইজানের আক্রমণে অস্ত্র ফেলে পালাচ্ছে আর্মেনীয় বাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিরোধপূর্ণ নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যকার নতুন করে শুরু হওয়া যুদ্ধ ধীরে ধীরে আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে। দুই পক্ষেই হতাহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী সংঘর্ষের শুরুতেই কিছুটা সাফল্য পেয়েছে আজারবাইজান। আর্মেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখলে সক্ষম হয়েছে আজারি বাহিনী।

যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) আর্মেনীয় বাহিনীর ফেলে যাওয়া বেশ কিছু সামরিক যান এবং অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করেছে আজারি বাহিনী।

তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, আজারবাইজানি সেনাদের তুমুল আক্রমণের মুখে পালিয়ে যাবার সময় এসব ফেলে গেছেন তারা।

আনাদোলুর একজন সাংবাদিক সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধক্ষেত্রে আর্মেনীয় বাহিনীর ফেলে যাওয়া বেশ কিছু সামরিক যান, গোলাবারুদ এবং অস্ত্রশস্ত্র দেখেছেন।

আটক করা যানগুলো রাশিয়ার তৈরি ২০১৯ মডেলের উরাল ট্রাক। ট্রাকগুলোর বেশিরভাগই এখনো ব্যবহারযোগ্য রয়েছে। তবে কয়েকটি ট্রাকে সংঘর্ষে চিহ্ন রয়েছে।

আটক বেশিরভাগ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ বিশেষ করে মেশিন গান, গ্রেনেড, রকেট লঞ্চার, বিভিন্ন অস্ত্রের গুলিও রাশিয়ার তৈরি।

আজারবাইজানি ফোর্স আর্মেনীয় সেনাবাহিনীর বেশ কিছু ডকুমেন্টও হাতে পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এদিকে শুরু থেকেই দুই দেশ যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে অবস্থান নিলেও আজ শুক্রবার কিছুটা সুর নরম করেছে আর্মেনিয়া। দেশটি বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করতে প্রস্তুত।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘যুদ্ধবিরতির জন্য’ কাজ করতে প্রস্তুত।

আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা তখনই আসলো যখন দেশটি নিজের আরো ৫৪ জন সেনা নিহতের খবর জানালো। এ নিয়ে ১৫৮ জন সেনা সদস্য নিহতের কথা স্বীকার করলো আর্মেনিয়া।

তবে এখন পর্যন্ত আজারবাইজানের পক্ষ থেকে সেনাসদস্যদের নিহতের কোনো খবর প্রকাশ করা হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, তাদেরও বেশ কিছু সেনা সদস্য হতাহত হয়েছে।

কারবাখ সংঘাত

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আজারবাইনারে ভূখণ্ড আপার কারাবাখ ১৯৯১ সালে দখল করে নেয় আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দু’জাতির মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের ৪টি এবং জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ২টি প্রস্তাবনাসহ আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা দখলকৃত ভূমি থেকে আর্মেনিয়ার প্রত্যাবর্তন দাবি করলেও তা আমলে নেয়নি আর্মেনিয় সরকার।

১৯৯২ সালে ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে সংকট সমাধানের উপায় খুঁজার জন্য মিনস্ক গ্রুপ তৈরি হয়। ১৯৯৪ সালে একটি শান্তি চুক্তিও সই হয়। কিন্তু সংকট নিরসনে তা ভূমিকা রাখতে পারেনি।