অশ্লীলতা করায় আইমান ফোরামের প্রতিষ্ঠাতাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ

হাইকোর্ট প্রতিবেদক:আইমান নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান আয়োজিত মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস বা মান বাংলাদেশের ‘সিক্রেট পার্টি’তে অশ্লীলতা নিয়ে বাংলাদেশ ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতাকে বিশ্ববার্তা২৪ ডটকম এর সম্পাদক মুহম্মদ আরিফুর রহমানের পক্ষে আইনী নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি এডভোকেট মাসুদুজ্জামান। আজ সোমবার (ইয়ামুল ইছনাইনীল আযীম শরীফ) রেজিষ্ট্রী ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে মডেল ইউনাইটেড নেশনস্ এর নামে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর এয়ারপোর্ট রোডের একটি ক্লাব কাম রেস্টুরেন্টে গত এক থেকে তিন মার্চ’১৯ পর্যন্ত তিন দিন ব্যাপী মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস বা মান বাংলাদেশ অনুষ্ঠানটি চলে। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা প্রবেশমূল্য দিয়ে তিন দিনের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল দেশের ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের সূচিতে দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকে ভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করা হলেও সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠানকে ‘সিক্রেট’ হিসেবে শুধুমাত্র নির্বাচিতদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়। এই সিক্রেট অনুষ্ঠানেই নানারকম অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে কিছু শিক্ষার্থী যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

নোটিশে আরো বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সেখানকার একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েরা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছে। এটি ছিল ডিজে পার্টির আয়োজনের মতো। কিন্তু নাচ ও গানের সঙ্গে সেখানে মুখোশ পড়ে এবং লাইট অফ করে ছেলেমেয়েদের অনৈতিক কাজের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। মুখোশ পরার কারণ, কেউ যাতে কাউকে না চেনে বা কারও পরিচয় প্রকাশ না পায়। সিক্রেট পর্বের বেশ কিছু অশ্লিল ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ইউটিউবে আপলোড করা হয়।

অথচ মডেল ইউনাইটেড নেশনস্ (মডেল ইউএন বা এমইউএন হিসেবেও পরিচিত) একটি অ্যাকাডেমিক অনুশীলন, যা বিজ্ঞান, যোগাযোগ ও বহুমূখী কূটনীতি নিয়ে কাজ করে। মডেল ইউনাইটেড নেশন্স সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আন্ত-সরকারি সংস্থার (ইন্টারগভার্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন-আইজিও) অনুশীলন পর্বে বিদেশি কূটনীতিকের ভূমিকায় অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের একটি দেশ নিয়ে গবেষণা করতে হয় এবং সে দেশের কূটনীতিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো খতিয়ে দেখে এবং তা নিয়ে বিতর্ক ও আলোচনা করে এবং বৈশ্বিক ইস্যুগুলোর সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সিক্রেট পর্বের অশ্লিল অনুষ্ঠানের ভিডিও এসবের ঠিক উল্টো, অপমানজনক এবং এই ধরনের সেশন অংশগ্রহণকারীদের নৈতিক মূল্যবোধ কলুষিত এবং নষ্ট করেছে। ইতিবাচক নাগরিক সাংষ্কৃতিক শিক্ষাদান থেকে যা অনেক দূরে সরিয়ে নেয়। এসব অপরাধ বাংলাদেশের প্রচলিত পেনাল কোড আইনের ২৯৪ ধারার সম্পূর্ণ্ লংঙ্ঘন।

নোটিশে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এধরনের অনুষ্ঠান বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আর হবেনা মর্মে অঙ্গীকারসহ নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় নিয়মমাফিক সুনির্দিষ্ট প্রতিকারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন।