অর্থনীতি বাঁচাতে শুধুই মুদ্রা ছাপিয়ে চলেছে শ্রীলংকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বৈদেশিক ঋণের অর্থ পরিশোধ করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। আমদানি বন্ধ থাকায় ধুঁকছে উৎপাদন ও সেবা খাত। ডলারের ঘাটতি শ্রীলংকাকে ঠেলে দিয়েছে বড় এক সংকটের মুখে। এ সংকট মোকাবেলায় দেড় বছর ধরে ক্রমাগত মুদ্রা ছাপিয়ে চলেছে শ্রীলংকা। এরই মধ্যে প্রায় ৪০০ কোটি ডলারের ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতিতে পড়ে গিয়েছে শ্রীলংকা।

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেন্ট্রাল ব্যাংক অব শ্রীলংকা সর্বশেষ গত ২৬ জুলাই ২১ হাজার ৩০০ কোটি রুপি ছাপায়। একই দিনে রিজার্ভ থেকে ১০০ কোটি ডলারের একটি সভরেন বন্ডের প্রদেয় অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটিকে।

বাস্তব চিত্র হলো শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এরই মধ্যে দেশটিতে প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছে।

মুদ্রা সংকট শ্রীলংকাকে এখন মারাত্মক এক সমস্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ডলারের অভাবে দেশটিতে ক্রমেই আমদানি সংকুচিত করে আনা হয়েছে। কলম্বোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এখন আর আমদানিকারকদের জন্য কোনো ডলার ইস্যু করছে না। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ব্যবহার করা হচ্ছে রেশনিংয়ের ভিত্তিতে। একই সঙ্গে দেশটিতে একই সময়ে সমান্তরালে ভিন্ন বিনিময় হারের উপস্থিতিও দেখা যাচ্ছে।

এর আগে লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনাও ঠিক একই ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল। শ্রীলংকার মতো দেশটিও এ সংকট মোকাবেলায় বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রা সঞ্চালনের পথ বেছে নিয়েছিল। তবে তাতে হিতে বিপরীতই হয়েছে। আরো ভয়াবহ আকার নিয়েছে বিপর্যয়ের মাত্রা। দেখা দেয় বিনিময় হারের ধস ও ব্যাপক মূল্যস্ফীতি।
শুধু তাই নয়, শ্রীলংকার মতো আর্জেন্টিনাও সে সময় রিটেইল খাতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস চালিয়েছিল। তবে তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি। এছাড়া বারবার মুদ্রা ছাপিয়েও সে সময় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি আর্জেন্টিনা।

বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রীলংকায়ও আর্জেন্টিনার বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদদের।