অবৈধভাবে টোল আদায় দুদকের চিঠি

অবৈধভাবে টোল আদায় দুদকের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের তিন স্থানে অবৈধভাবে টোল আদায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধসহ বিভিন্ন অনিয়ম বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৮ জেলা প্রশাসক ও এক পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার দুদকের বিভিন্ন টিম অভিযানগুলো পরিচালনা করে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য এসব তথ্য জানান।

দুদক জানায়, ফরিদপুর জেলায় কুমার নদ খননে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কমলেশ মন্ডলের নেতৃত্বে একটি টিম।

সরেজমিন অভিযানে দুদক টিম পর্যবেক্ষণ করে, ভাঙা উপজেলার কুমার নদ খননে একটি কোম্পানিকে সাব-কন্ট্রাক্টের দায়িত্ব দেওয়া হলেও অধিকাংশ কার্যক্রম হয়নি বললেই চলে। এছাড়াও যে প্রতিষ্ঠানকে সাব-কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়েছে-এ বিষয়ে তাদের নদী খননের অভিজ্ঞতা নেই মর্মেও তথ্য পাওয়া যায়। মূল নদীতে বেশিরভাগ খনন হলেও শাখা নদীতে একটি মাত্র শ্যালো মেশিন ব্যবহার ড্রেজিং করা হচ্ছে এর প্রমাণ পায় দুদক টিম। এ বিষয়ে অনিয়ম ও অবহেলা নির্ণয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সুপারিশ প্রেরণ করেছে দুদক টিম।

এদিকে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর বালি অবৈধভাবে উত্তোলন করে নদী তীরবর্তী পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতিসাধনে অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে টিম অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়।

উক্ত নদী থেকে উত্তোলিত বালু এবিবি ব্রিকস নামক একটি স্থানীয় ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছিল এরূপ প্রমাণ পায় দুদক টিম। এ বিষয়ে টিম পরিবেশ অধিদপ্তর, গাজীপুরের সাথে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ জানান, পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকার কারণে জরিমানা ও উক্ত ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের গেইট ইজারাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। দুদক টিম অভিযানকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। সর্বোচ্চ দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা না দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের দর যাচাই সংক্রান্ত তথ্যাবলি পিপিআর এর সাথে খতিয়ে দেখে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে দুদক অ্যানফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য ও সুপারিশের ভিত্তিতে মৈনট ঘাটে অবৈধভাবে টোল/চাঁদা আদায় বন্ধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, ঢাকা ও পুলিশ সুপার, ঢাকাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। একইভাবে পাবনা জেলার সুজানগর থানায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও সরকারি বিধি মোতাবেক দরপত্র/লিজের এর মাধ্যমে বালি উত্তোলনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, পাবনাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

অন্যদিকে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে পদ্মা রেলওয়ে প্রকল্প সংলগ্ন ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অবৈধভাবে ক্ষতিপূরণ দাবির প্রচেষ্টা বন্ধে নির্মিত অস্থায়ী স্থাপনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক-দ্বয়কে পত্র প্রদান করেছে দুদক অ্যানফোর্সমেন্ট ইউনিট। এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্র আগত বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও জেলা কারাগারের নানাবিধ অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ফরিদপুর, গাজীপুর, নোয়াখালী ও কিশোরগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসকগণকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।