অধ্যাপক ডা.কামরুল হাসানের বর্ণাঢ্য জীবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান ১৯৫৫ সালের ১২ মার্চ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার ভাবনদত্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ হারুনুর রশীদ খান এবং মাতার নাম রোকেয়া খান। পারিবারিক জীবনে তিনি প্রখ্যাত নাট্যকার ও অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা মামুনুর রশীদের ছোট ভাই এবং তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মাসুদা বেগম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগে কর্মরত আছেন।

গুণী চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সাবেক সভাপতি এবং ১৯৮৫ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিজিসিয়ান্স ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়্যারের (আইপিপিএনডব্লিউ) দক্ষিণ এশিয়া অংশের সাবেক এবং নির্বাচিত সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান ১৯৯৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

মানবসেবায় জীবন উৎসর্গকারী অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি, ১৯৭৪ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৮২ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস এবং ১৯৯৪ সালে সাবেক আইপিজিএমএন্ডআর (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) থেকে প্যাথলজিতে এম.ফিল ডিগ্রী অর্জন করেন।

কর্মজীবনে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার এবং ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রভাষক হিসেবে চাকরি করেছেন। ১৯৯১ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হিসেবে অধ্যয়ন শুরু করেন। এরপর তিনি সহকারী, সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে এবং বর্তমানে অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতার মহান পেশায় নিযুক্ত রয়েছেন।

দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খানের ৪০টিরও বেশি স্বাস্থ্য, রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন প্রবন্ধ, নিবন্ধ দেশী-বিদেশী জার্নাল ও স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের আজীবন সদস্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ছাত্র সভার অন্যতম উদ্যোক্তা, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ‘জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে ‘নাগরিক মঞ্চ’ গঠনের উদ্যোক্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন, ২০০৫ সালের ৩০ এপ্রিল ১৪ দল সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবীদের একত্রিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক মঞ্চে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) দু’বার নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, বিসিএস কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের (২৬ ক্যাডার) সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনরত (বাপা) কেন্দ্রীয় কার্যকর পরিষদের সদস্য, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসকদের সংগঠন প্রকৃচির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ইন-সার্ভিস ট্রেনি চিকিৎসক পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক, সন্ধানীর আজীবন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ঘটনাবহুল জীবনের অধিকারী অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান ফিজিশিয়ান ফর সোশ্যাল রেসপনসিবলের (পিএসআর), সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন এবং প্রায় অর্ধশত আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কনফারেন্সে অংশ নিয়েছেন। তিনি জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাবনা কমিটির অন্যতম সদস্য, বিএমএর হেলথম্যান পাওয়ার প্ল্যানিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯৮-এর বিএমএর খসড়া প্রস্তাবের মূল প্রস্তাবক হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখাসহ মানবসেবায় অবদান রেখে চলছেন।