অতিমূল্যে খাদ্য তালিকায় থাকছেনা গরুর গোশত

অতিমূল্যে খাদ্য তালিকায় থাকছেনা গরুর গোশত

খুলনা সংবাদদাতা: হঠাৎ করেই খুলনায় ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে গরুর গোশতের দাম। এভাবে যদি অযৌক্তিকভাবে গরুর গোশতের দাম বাড়ে, তবে সাধারণ মানুষ গরুর গোশতই খাওয়া ছেড়ে দেবে। শনিবার খুলনার গল্লামারী বাজারে গরুর গোশত কিনতে আসা ক্রেতা আবদুল্লাহ এভাবেই আক্ষেপ করেন।

তিনি বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে গরুর গোশতের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। বাজার তদারকির অভাবে কসাইরা সিন্ডিকেট করে গরুর গোশতের দাম বৃদ্ধি করেছেন।

ওই দোকান থেকে পাঁচ কেজি গোশত কেনা রানা নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে হঠাৎ করেই গরুর গোশতের দাম বেড়েছে। তবে কেন দাম বেড়েছে তার সঠিক জবাব দিতে পারছেন না বিক্রেতারা।

গল্লামারী বাজারের গরুর গোশত বিক্রিকারী মহিউদ্দিন বলেন, রাগ করে কোনো লাভ নেই। খেতে হলে এ দামে কিনতে হবে। তিনি জানান, ভারত থেকে গরু আসা একদম বন্ধ। এছাড়া দেশি গরুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে গোশতের দাম বেড়ে গেছে।

গোশতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতি বা সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মহিউদ্দিন বলেন, আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা গোশতের দাম বাড়িয়েছি। বাজারের অন্য গোশত বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে গরুর দাম বাড়তি থাকায় গোশতের দাম বেড়ে গেছে।

গরুর ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত নজরদারির কারণে গরু আসা বন্ধ হয়ে গেছে।

রূপসা ট্রাফিক মোড়ের হাবিব মিটের মালিক হাবিব বলেন, পাইকারি বাজারে দেশি গরুর চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে দাম বেড়ে গেছে। বেশি দামে আমাদের গরু কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে গোশত বিক্রি করতে হচ্ছে।

মহানগরীর সাত রাস্তার মোড়ের শামীম হোটেলের মালিক শামীম হোসেন বলেন, গরুর গোশতের দাম দিন দিন বেড়েই চলছে। আমরা বেশি দামে কিনলেও বেশি দামে বিক্রি করতে পারি না। এভাবে দাম বাড়লে গরুর গোশত কিনে ব্যবসা করার মতো থাকবে না।

গরুর গোশতের দাম বৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) অধ্যাপক সামিউল হক বলেন, দেশে গরুর কোনো সঙ্কট নেই। সামনে কোন উৎসব নেই। তারপরও গরুর গোশতের দাম বেড়েই চলছে। দীর্ঘদিন ধরে মধ্যবিত্তের খাদ্যতালিকায় আমিষের অন্যতম উৎস হিসেবে গরুর গোশত একটি বড় স্থান দখল করে ছিল। মধ্যবিত্তরা তো বটেই নিম্ন মধ্যবিত্তরা মাসে অন্তত একবার গরুর গোশতকে খাদ্যতালিকায় রাখতে সক্ষম হতো। কিন্তু গোশতের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধিতে এখন গরুর গোশত খাদ্যতালিকা থেকে বাদ পড়ার উপক্রম হয়েছে।

তিনি গরুর গোশতের দাম স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান। খুলনা জেলা বাজার কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, গরুর গোশতের দাম বেড়েছে এটা আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।