ভুট্টার দাম কম হতাশ চাষিরা
![ভাঙা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত দিনাজপুরের ভুট্টা চাষি](https://i0.wp.com/newsnine24.com/wp-content/uploads/2019/04/ভূট্টা-6.jpg?fit=1024%2C683)
নিউজ ডেস্ক: চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় ব্যাপকহারে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। চাষিরা ভুট্টা কাটতে শুরু করেছেন। এবার ভুট্টার ফলন কম। এছাড়া বাজার দখলে রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের। তারা নানা অজুহাতে কম দামে ভুট্টা কিনছেন। ফলে দাম না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন চাষিরা। মাড়াই করার পর পরই কাঁচা ভুট্টা ৪০০ থেকে ৪১০ টাকা, আর শুকনো ভুট্টা ৬০০ থেকে ৬১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমে ৪৬ হাজার ১২১ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। গত বছর ভুট্টার আবাদ হয়েছিল প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে।
ভুট্টা চাষি শাহীন জানান, গত বছরের চেয়ে ভুট্টার ফলন যেমন কম হয়েছে, তেমনি বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে কম দামে। বেশি দামের আশায় থাকতে হলে চাষ করা হবে না। এ বছর বিঘা প্রতি খরচ বাদ দিয়ে ১ হাজার টাকাও লাভ হচ্ছে না।
সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামের কৃষক পরান বিশ্বাস বলেন, ‘ফলনের দিক দিয়ে যেমন সমস্যা আছে আবার আমাদের কাছ থেকে যারা কিনছে তারা দাম দিতে চাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সুদৃষ্টি দেয় তবে আমরা ন্যায্য দাম পাবো।’
ভুট্টা ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন আলম বলেন, ‘আমরা গ্রাম থেকে ভুট্টা কিনছি। বর্তমানে মাড়াই করার পর পরই কাঁচা ভুট্টা সর্বোচ্চ ৪১০ টাকা আর শুকনো ভুট্টা ৬১০ টাকা দরে কিনছি। বাজারে শুকনো ভুট্টা ৬২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে আমরা কম দামে ভুট্টা কিনছি। কারণ আমাদের গাড়ি ভাড়া, লেবার খরচ সব মিলিয়ে দাম ওঠে কমে। সেজন্য কম দামেই আমরা ভুট্টা কিনতে বাধ্য হচ্ছি।’
ভুট্টার মাড়াই চলছেজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাঈম আস সাকিব জানান, এই মাড়াই মৌসুমে ভুট্টার দাম কম থাকায় কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না।’
দাম কমের কারণ প্রসঙ্গ তিনি বলেন, ‘অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে গত মৌসুমের ভুট্টা এখনও মহাজনদের কাছে মজুদ থাকায় নতুন ভুট্টা কেনায় মহাজনদের আগ্রহ কম। এটাও একটা বড় কারণ।’
এ ব্যাপারে কৃষকদের তিনি কী পরামর্শ দেবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘অতিরিক্ত মজুত এবং একইসঙ্গে ফসল উঠায় দাম হ্রাস পেয়েছে। তবে কৃষকরা যদি ১-২ মাস ফসল ঘরে রেখে বিক্রি করেন তাহলে তারা অবশ্যই বর্তমান বাজারের চেয়ে বেশি দাম পাবেন। ধান চালের মতো ভুট্টার বাজার দর নির্ধারিত না থাকার কারণে যে যার মতো করে ভুট্টা কেনাবেচা করছে।’
একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছর ভুট্টা ব্যবসায়ীরা ভুট্টা মজুত করে মণ প্রতি ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ ৮০-৯০ টাকা করে মণ প্রতি লোকসান গুনেছেন। তাই চলতি মৌসুমে বড় মহাজনদের ভুট্টা কেনার প্রতি তেমন একটা আগ্রহ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাজন জানালেন, গতবছর প্রতিমণ ভুট্টা ৭৬০ থেকে ৭৭০ টাকা করে গুদামজাত করা হয়। কয়েক মাস রক্ষণা-বেক্ষণ করার পরে সেই ভুট্টা মণ প্রতি ৮০-৯০ টাকা লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হয়েছে। তাই এ বছর ভুট্টা কেনার প্রতি খুব একটা আগ্রহ নেই।