রোহিঙ্গাকে বিয়ে: লাখ টাকা জরিমানা করেছে হাইকোর্ট

ঢাকা: মিয়ানমারের আরাকান থেকে পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ের পর নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়ায় ছেলের বাবাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে এ টাকা আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা না দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার বিচারক মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারক জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে শোয়াইব হোসেন জুয়েল কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাছে একটি মসজিদে রাফিজাকে বিয়ে করেন। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনার কারণে বিয়ে নিবন্ধন করতে পারেননি। এ কারণে ওই নির্দেশনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন বাবুল হোসেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এবিএম হামিদুল মিসবাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

রিট আবেদনে ২৫ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনা জারি করে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশী ছেলেদের সাথে মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা মেয়েদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয় হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং কতিপয় নিকাহ রেজিস্ট্রার অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকায় বিশেষ এলাকা’(কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রাম জেলা) সমূহে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বর কনে উভয়ে বাংলাদেশি নাগরিক কি না বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়ে (জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে) উক্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল নিকাহ রেজিস্ট্রারদের নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এ বিষয়ে গাফিলতি হলে দায়ী নিকাহ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ এ নির্দেশনার কারণে বাবুল হোসেনের ছেলের বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে না।

মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুসারে বিদেশীরা নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারে না। এ ছাড়া আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে রোহিঙ্গাদের বিয়ে করা যাবে না। কিন্ত এখানে আবেদনকারীরা দুটি অপরাধ করেছেন। ওই মেয়েকে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে। আবার বিয়ে নিবন্ধন করতে হাইকোর্টে রিটও করেছে। এ কারণে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ টাকা ৩০ দিনের মধ্যে না দিলে ছেলের বাবা বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শোয়াইব হোসেন জুয়েল যাত্রাবাড়ীর একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনি রাফিজাকে (১৮) গত সেপ্টেম্বর মাস কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাছে একটি মসজিদে বিয়ে করেন। বিয়ের ঘটনা জানাজানি হলেই বর জুয়েল ও নববধূ রাফিজা পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।