জেনে নিন পাকা তরমুজ চেনার উপায়

এই গরমে মুহূর্তেই আপনার ক্লান্তি দুর করতে এবং পানির প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সবচেয়ে কার্যকরী ফলটি হতে পারে তরমুজ। সহজলভ্য এ ফলটির বিশেষত্ব হলো, এর ৯২ শতাংশই পানি। বাকি ৬ শতাংশ চিনি, কিছুটা রয়েছে খনিজ ও ভিটামিন, তবে চর্বি বা কোলেস্টেরল প্রায় শূন্য।

এরই মধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে তরমুজ। অনেক সময় বিক্রেতার চাতুরীতে সুস্বাদু এ ফলটি কিনে ঠকতে হয় ক্রেতাকে। তাই জেনে নিন কী দেখে কিনবেন পাকা তরমুজ।

  • তরমুজটি হাতে নিয়ে দেখুন। যদি দেখেন ভারী, তাহলে বুঝবেন এটি পাকা। পাকা তরমুজে রস থাকে তাই স্বাভাবিকভাবেই এটি ভারী হয়।
  • তরমুজের গায়ে হলুদ ঘোলাটে দাগ তৈরি হয়েছে কিনা দেখুন। সূর্যের আলোয় তরমুজের গায়ে এমন দাগ তৈরি হয়। যদি দেখেন দাগ হালকা ও সবুজে ধরনের তাহলে বুঝতে হবে, কাঁচা থাকতেই তরমুজ তুলে ফেলা হয়েছে।
  • তরমুজের গায়ে টোকা বা চড় মেরে দেখুন। যদি দেখেন গভীর, ভারী শব্দ হচ্ছে তাহলে বুঝবেন পাকা তরমুজ। যদি ফাঁপা শব্দ হয় তাহলে তা এখনও পাকেনি।
  • পাকা তরমুজের গা সমান, মসৃণ ও সব দিক থেকে একই রকম দেখতে হবে। কোনও দাগ থাকবে না।
    পাকা তরমুজের রং গাঢ় সবুজ ও কালচে হবে। যদি হালকা সবুজ, চকচকে রঙের হয় তাহলে বুঝবেন তরমুজ এখনও পাকেনি।

আমরা অনেকেই গরমে তরমুজ খাই একটু স্বস্তির কারণে। কিন্তু এই তরমুজে যে কতো বিস্ময়কর উপকারিতা রয়ে গেছে তা আমরা অনেকেই জানি না। এবার তাহলে আসুন জেনে নেই তরমুজের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা-

চোখের সুরক্ষা

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ। বিটা ক্যারোটিন যা চোখের রেটিনা সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর এবং চোখের ছানি পড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ভিটামিন এ চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে।

হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন

সঠিকভাবে হৃদযন্ত্রে রক্ত প্রবাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরমুজ হৃদযন্ত্রে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহ হতে সাহায্য করে। এতে হৃদযন্ত্রে ব্লক হওয়ার প্রবণতা অনেকটা হ্রাস পায়।

স্নায়ু ও গোশতপেশী সুরক্ষায়

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরে ইলেকট্রো পাওয়ার তৈরি করে যা শরীরের গোশতপেশী ও স্নায়ু সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।

ব্যথা নিরাময় ও শরীরের টিস্যু সুরক্ষায়

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনি সি যা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা নিরাময়ে এবং ত্বক, দাঁত এবং গোশতপেশীর সুরক্ষায় প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে।

হাড় মজবুত করে

তরমুজ লাইকোপিনো নামক লাল উপাদান যাতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। তাই তরমুজ হাড় গঠন ও মজবুত করতে অত্যন্ত সহায়ক।

শরীরের চর্বি কমায়

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এমাইনো এসিড যা শরীরের কোলেস্টরেল ও চর্বি কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়া তরমুজে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরের জমে থাকা কোলেস্টরেল কমাতে সহায়তা করে।

কিডনি ও লিভার সুরক্ষা

তরমুজে রয়েছে প্রচুর জলীয় উপাদান যা প্রস্রাবের জ্বালা কমায়। এটি কিডনি ও লিভার সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর। তরমুজে রয়েছে এমন এন্টিবডি যা কিডনি ও লিভার সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।

ওজন কমাতে সহায়তা করে

গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ আমাদের শরীরের জমে থাকা চর্বি কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। Citrulline একটি অ্যামিনো অ্যাসিড যা কিডনির জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং খুব অল্প পরিমাণে ক্যালরি। আর তাই পেট ভরে তরমুজ খেলেও সেই অনুযায়ী ওজন বাড়ে না।

পানিশূন্যতা দূর করে

তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে। গরমের সময় যখন ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় তখন তরমুজ খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়। ফলে শরীর থাকে সুস্থ ও সতেজ।

শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে

অনেকদিন ধরে যারা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন এই ফলটি খাবেন। দেখবেন এটি আপনার শরীরে ভিটামিন সি’র অভাব পূরণ করে হাঁপানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

তরমুজ অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভালো উৎস। এটি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী কোষগুলোকে নির্মূল করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে এতে লাইকোপিন নামে এমন এক উপাদান আছে যা প্রোটেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।