ধর্মের নামে যারা হত্যা চালায় তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্যকারী : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে কোনো অশান্তি নেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শেষ বিচার করবেন। মহান আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার ক্ষমতা কারও নেই। আল্লাহ কাউকে হত্যার অনুমতি দেননি। মুসলমান নামধারী সন্ত্রাসবাদীরা একজন আরেকজনকে হত্যা করে ইসলামকে কলুষিত করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সত্যিকার ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদেরকে আহ্বান জানাব, তাদের পরিবারের সদস্যরা সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী পথে যাচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব তাদের। ধর্মের নামে যারা হত্যা চালায়, তারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশ অমান্য করে।

বুধবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাপান, বুলগেরিয়া ও সৌদি আরব সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে গুপ্তহত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড এবং একের পর এক গুপ্তহত্যার পেছনে বিএনপি-জামায়াতের হাত থাকার যে অভিযোগ সরকার করে আসছে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, “আমরা যখন কথা বলি, মনে রেখে দেবেন; কোনো অমূলক কথা বলি না। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, আমি হেড অফ দি গভার্নমেন্ট। আমার কাছে নিশ্চয়ই তথ্য আছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্নজন এ হত্যার দায় স্বীকার করে। মূল জায়গা কিন্তু একটা। মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী স্লোগান নিয়ে যারা মানুষ হত্যাকে উস্কে দেয়, বর্তমানের গুপ্তহত্যা তাদের কাজ। দেশের অগ্রযাত্রা রুখতেই এই নীলনকশা। এ যাবত যারাই জঙ্গি তৎপরতা চালিয়েছে তাদের সঙ্গে দুটি রাজনৈতিক দলের সংশ্রব পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, তারা প্রকাশ্যে দিবালোকে মানুষ পুড়িয়ে মারে, তখন তারা জনগণের রুদ্ররোষের শিকার হয়েছিল। ফলে এখন তারা মানুষ হত্যার কৌশল পরিবর্তন করেছে। সরকারও বসে নেই। আমাদের যা যা করণীয় আমরা তা করে যাচ্ছি। যারা এ ঘটনা ঘটাচ্ছে আমরা তাদের ধরতে সক্ষম হচ্ছি। বাংলাদেশের উন্নতি যারা চায়নি তারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এবার তার সৌদি আরব সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করছেন। আমরা সেখানে আরও লোক পাঠাতে পারবো। যারা সেখানে যাবেন তাদের নিরাপত্তাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌদি বাদশাসহ অনেক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা আমাদের দেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমারা তাদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি- আমরা তাদের জায়গা দেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনের আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশা। আমি তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছি। বাদশাকে আমি জানিয়েছে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ সামরিক সহায়তা দেবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব, জাপান ও বুলগেরিয়া সফর সম্পর্কে লিখিত বক্তব্য দেন। লিখিত বক্তব্যের পর তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

সৌদি আরবের বাদশাহর আমন্ত্রণে সেদেশে পাঁচদিনের সরকারি সফর শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি জাপান ও বুলগেরিয়া সফরে যান।

পাঁচদিনের সৌদি আরব সফর করে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে এ সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় পবিত্র ওমরাহ পালন ছাড়াও মদীনায় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওজা শরীফ জিয়ারত করেন তিনি। এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানাও।