মুসলিম নবজাতক শিশু বদলে হিন্দু নারীর মৃত শিশু স্থানান্তর বরিশালে
বরিশাল: সদ্য নবজাতক শিশুকে নিয়ে রোববার রাতে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই পরিবারের মধ্যে কাড়াকাড়ি, বাগবিতন্ডা ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশকেও বেগ পেতে হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বরগুনার আমতলী উপজেলার টিয়াখালী গ্রামের তাপস দাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী চম্পা দাসকে (১৯) রবিবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে অস্ত্রপচার কক্ষে সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। অস্ত্রপচারের ওই কক্ষে একই সময় উজিরপুরের গুঠিয়া এলাকার বৈরকাঠি গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী হেপী বেগমও একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে।
এরমধ্যে চম্পা দাস মৃত সন্তান প্রসব করেছে। ওই ওয়ার্ডের কর্মরত আয়া আলেয়া, রওশনারা, হাসিনা ও কামরুন্নাহার জীবিত সন্তানকে চম্পার স্বজনদের কাছে তুলে দেয়। এসময় হেপী বেগমের স্বজনরা জীবিত সন্তানটি হস্তান্তর করার প্রতিবাদ জানান। এনিয়ে দুই রোগীর স্বজন আর হাসপাতালের আয়া এবং নার্সদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী বাগ্বিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে মারমুখী পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
হেপীর স্বামী আলমগীর হোসেন জানান, মৃত নবজাতক বাচ্চাটি তাদের নয়। আয়া ও নার্সরা টাকার বিনিময়ে তাদের বাচ্চা পরিবর্তন করে মৃত বাচ্চাটি তাদের হাতে দিয়েছে। তাদের সন্তান জন্মের সময় কান্নার শব্দ শুনেছে তারা। কোন সন্দেহ থাকলে তারা ডিএনএ পরীক্ষা করাতে চায়। অন্যদিকে চম্পার স্বামী তাপস দাস অভিযোগ করেন, জীবিত বাচ্চাটি তার।
কর্তব্যরত নার্স দাবি করেন, জীবিত বাচ্চাটি হলো হিন্দু পরিবারের। কিন্তু প্রসবের সময় নার্সরা ওটিতে ছিলেন না, ফলে এনিয়ে বির্তক থেকেই যাচ্ছে।
কোতয়ালী মডেল থানার এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, ঘন্টাব্যাপী চেষ্ঠা চালিয়ে দু’পরিবারের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শেষপর্যন্ত চিকিৎসকদের জোরপূর্বক হস্তক্ষেপে হেপীর পরিবার মৃত নবজাতক সন্তানটি তাদের বলে মেনে নিতে বাধ্য হয়।