চীনকে একহাত নিতেই বাংলাদেশকে ঋণ দেবে ভারত

ঢাকা: আগামী ৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার সফরকালে ভারত বাংলাদেশে বিশেষ শর্তে সাড়ে ৩শ কোটি ডলার ঋণ বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে শর্তাধীন এ ঋণ বিনিয়োগ করবে ভারত। এজন্য চীন বেশ গভীরভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দিকে লক্ষ্য রাখছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন ও ভারত দুই দেশই দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে। এজন্য দেশ দুটো তাদের বিভিন্ন দেশকে আর্থিক সহায়তা দিয়েই প্রভাব বিস্তার করছে। যেমন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ওয়ান রোড ওয়ান বেল্ট তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারে ভারত-চীনের লড়াই দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিবেশি দেশটিতে ভারতের এই অর্থ দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পে। এই অর্থ যাবে ভারতীয় সুবিধা তথা ট্রানজিটজাতীয় খাত ও অংশিদারী খাত যেমন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার প্লান্ট, বন্দর, রেলওয়ে ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায়।

দুই দেশের মাঝে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি, ভুটানে পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, জাহাজ নির্মাণ, সীমান্তে চেকপোস্ট উন্নয়নসহ দিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
বন্দর ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প স্থাপনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বিশাল অঙ্কের ঋণ দিয়ে আসছে চীন। বেইজিংয়ের এই ঋণকে ইতিবাচকভাবে নিচ্ছে না দিল্লি। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়ার প্রতিবেশি অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে ভারত।

২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকালে ২০০ কোটি ডলার ঋণ ঘোষণা দেয়। ওই সময় মোদি বলেছে, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে এ ঋণ দেয়া হবে। সড়ক, রেল, সমুদ্রপথ এবং টেলি যোগাযোগের মাধ্যমে দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে।

মোদির ওই সফরের আগে সড়ক, রেল ও সমুদ্র পথে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনীতি সুসংহত করতে বাংলাদেশকে ৮ কোটি ডলারের কঠিন শর্তে ঋণ দেয় ভারত।

ভারত তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবেশি দেশগুলোকে ঐক্যবন্ধ করতে চায়। তবে এই অঞ্চলের দেশগুলোয় ভারতের ঋণ সহায়তা চীনের ঋণের তুলনায় অনেক কম। গত বছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পাকিস্তানের অবকাঠামো প্রকল্পে স্বল্প সুদে দুই হাজার কোটি ডলার ঋণ দেয়। এই ঋণ সহায়তা ছাড়াও পাকিস্তানের অন্যান্য প্রকল্পে এবং শ্রীলঙ্কায় চীনের বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে।

লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক হারশ পান্ট বলেছে, ‘ভারত আদতে চীনের ঋণেল পাল্টা হিসেবে ব্যবস্থা নিতে চাইছে। তাইতো তারা বাংলাদেশকে এ পরিমাণ ঋণ দেয়ার কথা ভাবছে। তবে চীনের তুলনায় তা পরিমাণে খুবই অপ্রতুল।’