সন্তান জন্মের পরপরই করনীয় ৩টি সুন্নত

ইসলামী ডেস্ক: মানব জাতির সমস্ত প্রকার কল্যান, সভ্যতা, বিজ্ঞানসম্মত জীবনের বাস্তব শিক্ষা দিয়েছেন আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। তিনি শিশু সন্তান জন্ম নেয়ার পর কি করতে হবে – এব্যাপারেও বাস্তব জীবনে দেখিয়ে দিয়েছেন। নবজাতক জন্মের পর করনীয় হিসেবে সাধারণত তিনটি সুন্নত হাদিস পাকে পাওয়া যায়। যেমন-

১। নবজাতক শিশুকে গোসল প্রদানঃ সন্তান জন্মগ্রহনের পর নাড়ী কেটে সর্বপ্রথম তাকে গোসল দিতে হয়। প্রথমত লবন পানি দিয়ে, তারপর শুধু পানি দিয়ে। তাহলে ফোঁড়া, গোটা গাটি ইত্যাদি থেকে সন্তান হেফাযত থাকবে।

২। তা’যীন করা বা আযান দেয়া: গোসলের পর নবজাতক শিশু কোন কিছু খাওয়ার পূর্বেই তার কাছ থেকে অল্প আওয়াজে নামাযের আযানের ন্যায় আযান এবং ইক্বামত দিতে হবে। দুনিয়াবী কোন আওয়াজ তার কানে পৌঁছার পূর্বেই যেন সে আল্লাহ্‌ পাক ও উনার হাবীব উনাদের মহত্ত বড়ত্ত শুনতে পায় এবং শয়তান তার উপর কোন প্রভাব ফেলতে না পারে। হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যার সন্তান হয় সে যেন তার ডান কানে আযান এবং বাম কানে ইক্বামত দেয়।” (শুয়াবুল ঈমান)

৩। তাহনীক করা বা মধু খাওয়ানো: তা’যীনের পর তাহনীক করতে হয়, অর্থাৎ খেজুর ভালোভাবে চিবিয়ে নবজাতকের মুখে (তালুতে) দিতে হয়। খেজুর না পেলে মধু দ্বারাও এই কাজ করা যায়। পরহেজগার, মুত্তাক্বী, আল্লাহ্‌ওয়ালা ব্যক্তিত্বের দ্বারা তাহনীক করানো উচিত। হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের শিশু সন্তানগণের তাহনীক করিয়ে দিতেন। অতঃপর শিশু মায়ের দুধ পান করতে শুরু করতে পারে।

এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, উপরোক্ত তিনটি সুন্নত পালনের ক্ষেত্রেই এখন কিছু ডাক্তার বিভিন্ন কথা বলে অভিভাবকদের নিরুৎসাহিত করে। সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের মনে রাখা উচিত সমস্ত সুন্নত সবসময়েই মানুষের জন্য সর্বোত্তম পন্থা। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আমার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (সূরা আহযাবঃ ২১)

পক্ষান্তরে মানুষের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা, গবেষণা এগুলো ভূলত্রুটির ঊর্ধ্বে না এবং সর্বদা পরিবর্তনশীল। সুতরাং কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিদের কথায় প্রভাবিত হয়ে সন্তানদের পবিত্র সুন্নত থেকে মাহরুম করা উচিত হবে না।