এবার নববর্ষে পান্তা-ইলিশ বর্জন করলো বাঙালি

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: অন্যান্য বারের মতো আজ পহেলা বৈশাখের প্রথম সকালে রমনা ও এর আশেপাশের এলাকায় পান্তা-ইলিশের বেচাকেনার তেমন কোনো চিত্র লক্ষ্য করা যায়নি। উৎসবে যোগ দেয়া মানুষের মধ্যেও পান্তা ইলিশ খাওয়ার  আগ্রহ লক্ষণীয় ছিলো না।

বৃহস্পতিবার রমনা, মৎস্যভবন এলাকায় ঘুরে পান্তা-ইলিশের তেমন কোনো অস্থায়ী দোকান দেখা যায়নি। তবে কাকরাইল মসজিদের সামনে একটি অস্থায়ী দোকানে পান্তা-ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেখানে ১০০ টাকায় পান্তা-ইলিশ বিক্রি করলেও লোকজনের তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বিক্রিতা আব্দুল হালিম।

তিনি বলেন, ‘সকালে মৎস ভবন এলাকায় পান্তা-ইলিশ নিয়ে বসলে পুলিশ সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে এখানে এসে বেচাকেনা শুরু করি। কিন্তু গত বছরের মতো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।’

এছাড়া রমনা চাইনিছ রেস্টুরেন্টে চলছে ইলিশ প্যাকেজ। ভাত বা খিচুরী বা পোলাওয়ের সঙ্গে এক পিচ ইলিশ, একটা পানি ও কোমল পানীয়। যার মূল্য নেয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা।

রমনায় আগত লোকজনের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আসলে নববর্ষে পান্তা খাওয়া আমাদের ঐতিহ্য নয়। আগে এটা নিয়ে এতো মাতামাতি হতো না। গত দুই তিন বছর ধরে কিছু মুনাফা লোভী সিজনাল অস্থায়ী ব্যবসায়ী বৈশাখে মানুষের আবগকে পুঁজি করে চড়া দামে ইলিশ বিক্রি করে। এবার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়া হবে না। যা মিডিয়াতে বেশ প্রচার হয়েছে। এতে করে সিজনাল ব্যবসায়ীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ফলে অনেকেই এখন পান্তা-ইলিশকেই বাঙালি সংস্কৃতি মনে করছে না।

সংস্কৃতিকর্মী অভিজিৎ রায় বলেন, ‘যেসব অস্থায়ী দোকানে পান্তা বিক্রি করে তা স্বাস্থ্যকর কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে এবার তো অন্যান্য বারের মতো পান্তা বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে, বাঙালি এবার পান্তা-ইলিশ বর্জন করেছে।’

উল্লেখ্য, জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় নববর্ষ উদযাপনের দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ ১৪২৩ এর খাদ্য তালিকা থেকে ইলিশ বর্জন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে পহেলা বৈশাখের খাবারের তালিকায় খিচুড়ির সঙ্গে থাকছে বেগুন ভাজি, ডিম ও মুরগির গোশত ভুনা।