দৈনিক ১০হাজার টাকা জরিমানা দিতেই হবে ১৫৪ ট্যানারি মালিককে

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে ১৫৪ ট্যানারির প্রত্যেক মালিককে। এ নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি না সরানো পর্যন্ত প্রত্যেক মালিককে প্রতিদিন এই পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে। জামকৃত এই অর্থের ৫০ ভাগ লিবার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশকে প্রদান করতে বলেছে আদালত।
সোমবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৬ জুন হাইকোর্ট রাজধানীর হাজারীবাগে থাকা ১৫৪ ট্যানারি সাভারে না সরানো পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেয়।
হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান।
আজ আপিলের পক্ষে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং রিটকারী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পীস ফর বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আপিল নিষ্পত্তি করে ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে ১৫৪ মালিককে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়।
২০০১ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর ২০০৯ সালের ২৩ জুন আরেক আদেশে ট্যানারি সরানোর জন্য ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে সরকারপক্ষের আবেদনে ঐ সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানোর পরও ট্যানারি স্থানান্তরের হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন হয়না।
এরপর রিটকারী সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই দশ প্রতিষ্ঠানের মালিককে তলব করে। এই তলবের মধ্যেই একটি জাতীয় দৈনিক ট্যানারি শিল্প নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয় ‘হাজারীবাগ ট্যানারি মুক্ত হতে আরও দুই বছর!’ এবং ‘নেতাদের ট্যানারির কাজ এগোয়নি’ । এরপর অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ প্রতিবেদন দুটি যুক্ত করে গত এপ্রিল মাসে হাইকোর্টে আরো একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনে গত ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের বর্তমান চিত্র প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করতে শিল্প সচিবকে নির্দেশ দেন।
ঐ নির্দেশ মোতাবেক শিল্প সচিবের পক্ষে ১৬ জুন আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে ১৫৫টি ট্যানারি প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা তুলে ধরা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধুমাত্র রিলায়েন্স ট্যানারি লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানটি সাভারে তাদের নামে বরাদ্ধকৃত প্লটে ট্যানারি কারাখানা চালু করেছে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই হাইকোর্ট ঐ ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ট্যানারি মালিকদের নির্দেশ দেয়।