‘৩০০ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে মাত্র ১২ জনকে প্রসিকিউট’

প্রবাসীদের অভিযোগ শুনবে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছে, মাদক ব্যবসার মাধ্যমে যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে, তাদের তালিকা চেয়েছিলাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে কিন্তু তারা প্রথম যে তালিকা দিয়েছিল তাতে তিন শতাধিক মাদক ব্যবসায়ীর নাম দেওয়া হয়েছিল। অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখলাম তাদের সাথে ঠিকানার কোনো মিল নেই।

তিনি বলেন, আমরা আবার তালিকা চাইলাম। সেই তালিকা অনুসন্ধান করে আমরা এ পর্যন্ত ১২ জনকে প্রসিকিউট করেছি। কমিশনের মামলায় কেউ কেউ কারাগারেও গিয়েছেন।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি অডিটরিয়ামে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ‘বাংলাদেশের তরুণ সমাজ ও মাদকাসক্তি: বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশের উন্নয়ন, দুর্নীতি, মাদক, ধ্বংস আবার সৃষ্টি যেন একই সূত্রে গাঁথা। একটার সাথে আরেকটি ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে। তোমাদের কাছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রয়েছে। আমরা যখন দেখি এই ফেসবুকে সম্ভাবনাময় কোনো তরুণ সকালে প্রেম করছে, দুপুরে ফেসবুকে বিয়ে এমনকি ঐ ফেসবুকেই অনাগত সন্তানদের সম্ভাব্য নাম রাখা হচ্ছে, তারপরই ভেঙে যাচ্ছে প্রেম। অর্থাৎ প্রেম, বিরহ, নেশা তারপর চরম হতাশা এবং জীবন নামক স্বপ্নের মৃত্যু। আমরা হতাশায় নিমজ্জিত এমন প্রজন্ম সৃষ্টি হোক তা চাই না। সিদ্ধান্ত তোমাদেরই নিতে হবে।

তিনি বলেন, অপ্রিয় একটা সত্য কথা বলি আমরা যখন ২০১৬ সালে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করি, তখন জানতে পারি, আমাদের প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও কতিপয় শিক্ষার্থীও মাদকের মরণ নেশায় জড়িত। বাঙ্গালি জাতির এই শেষ আশ্রয়স্থলেও যদি নেশা চলে আসে, তবে আমরা কোথায় যাব? এক সময় সিভিল সার্ভিসসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদের চাকরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই প্রাধান্য পেত। সে অবস্থাও ধীরে ধীরে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। যদি নেশা থাকে তাহলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যাবে না।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বারবার বলছি, মাদক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক গণসচেতনতা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সমন্বিত এবং সম্মিলিত উদ্যোগেরও কোনো বিকল্প নেই। আমরা উন্নয়ন করছি এ কথা সত্য, তবে মাদক এবং দুর্নীতি নির্মূল না করে উন্নয়ন করলে তা টেকসই নাও হতে পারে। আমরা মাদককে না বলি, আমরা দুর্নীতিকে না বলি, আমরা আমাদের মেধা ও মননের সর্বোচ্চ বিকাশ সাধন করি। আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রদানের সক্ষমতা অর্জন করি। এই হোক আজকের অঙ্গীকার।

মূল প্রবন্ধে ড. চৌধুরী উল্লেখ করেন, বর্তমানে মাদকাসক্তদের পরিসংখ্যানের কোনো তথ্য না থাকলেও বেসরকারিভাবে দেশে ৭৫ লাখের বেশি মাদকাসক্ত রয়েছে। এসব মাদকসেবীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক। তাদের ৪৩ শতাংশ বেকার। ৫০ শতাংশ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। একটি পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়েছে, মাদকসেবীরা গড়ে প্রতিদিন অন্তত ২০ কোটি টাকার মাদক সেবন করে থাকে। অর্থাৎ মাসে ৬০০ কোটি টাকার মাদক ব্যবসা হয়।