২ কেজি ওজনের বেগুন চাষ করে চমকে দিয়েছেন সেলিম

২ কেজি ওজনের বেগুন চাষ করে চমকে দিয়েছেন সেলিম

ভোলা সংবাদাদাতা: ভোলায় প্রথমবারের মতো একটি নতুন জাতের বেগুন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সেলিম নামে একজন কৃষক। ক্ষেতে বেগুনের ব্যাপক ফলন হওয়ায় তিনি বেশ খুশি। তার ক্ষেতের এ বেগুনের একেকটির ওজন ১ থেকে ২ কেজি পর্যন্ত।

বেগুনগুলো দেখতে কদুর মতো হওয়ায় কৃষক সেলিমের গ্রামের লোকজন এটির নাম দিয়েছেন ‘কদুবেগুন’। আর এই বেগুন দেখতে প্রতিদিন তার গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রাম থেকে কৃষক ও স্থানীয়রা ভিড় জমাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার চর সামাইয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিরহাট গ্রামের কৃষক সেলিম প্রায় ৮ বছর ধরে কৃষি কাজ করছেন। প্রতিবছর শীত মৌসুমে ৬৫ শতাংশ জমিতে দেশি বেগুন, টমেটো, শসা, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও সয়াবিন চাষ করেন। কিন্তু তেমন সফলতা অর্জন করতে পারছিলেন না তিনি। তবে এ বছর বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।

কৃষক সেলিম জানান, প্রতিবছর দেশি বেগুন চাষ করলেও লাভবান হতে পারছিলাম না। এবছর কৃষি বিভাগ থেকে আমাকে বারি-১২ জাতের বেগুনের বীজ ও সার দিয়েছে চাষ করার জন্য। আমার ৬৫ শতাংশ জমির মধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে বারি-১২ জাতের বেগুন রোপণ করি। আর বাকি জমিতে টমেটো, ফুলকপি, পাতাকপি ও সয়াবিনের চাষ করি।
২০ শতাংশ জমিতে আমার ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩ মাস ১০ দিনের মধ্যে বেগুনগুলো ১ কেজি আর কোনো কোনোটি দেড় কেজি আবার কোনোটি ২ কেজি ওজনের হয়। পরে ক্ষেত থেকে বেগুন তুলে পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য প্রথমদিন নিয়ে গেলে পাইকাররা দেখে অবাক হন। প্রথমদিন প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা দামে বিক্রি করেছি। বর্তমানে পাইকারি বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এপর্যন্ত ১২ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। ক্ষেতে এখনও যে পরিমাণ বেগুন রয়েছে তাতে আরো ২০ হাজার টাকারও বেশি বিক্রি করতে পারবো। চাষ করার আগে বুঝতে পারিনি এতো লাভজনক এটি। আশা আছে আগামী বছর এক একর জমিতে এ বেগুন চাষ করবো।

ভোলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, ভোলা জেলায় এবারই প্রথম বারি-১২ জাতে বেগুন চাষ হয়েছে। এবছর আমরা ভোলার সাত উপজেলায় ২০০ জন কৃষককে আমরা বিনা মূল্যে বীজ ও সার দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করিয়েছি। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ৫০ জন কৃষক রয়েছে। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পেরেছি কৃষকরা প্রত্যেকেই সফল হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ওই কৃষকদের সফলতা দেখে নতুন করে অনেক কৃষক আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করার জন্য। আমারা আশা করছি আগামীতে কয়েক হাজার কৃষক দিয়ে এ জাতের বেগুন চাষ করবেন।