২১২ কোটি টাকা হাতিয়েছে রিং আইডি -পরিচালক ২ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র তিন মাসে ‘কমিউনিটি জবস’-এর নামে ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম ‘রিং আইডি’।
শনিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে অর্থ আত্মসাতের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, কমিউনিটি জবসের নামে রিং আইডি গত মে মাসে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ এবং জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকাসহ মোট ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে।

‘আইনি প্রক্রিয়া চলাকালে জনগণের কাছ থেকে নেওয়া এ টাকা যাতে বিদেশে পাচার না হয় সেজন্য ইতোম

ধ্যে রিং আইডি সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’

শনিবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিন দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, গত জুমুয়াবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন- এমন অভিযোগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এক ব্যক্তির করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন, এমন অভিযোগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আঁখি বেগম নামের একজন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কন্ট্রোল অ্যাক্টের আওতায় মামলা করেন।

সিডিউলভুক্ত হওয়ায় মামলাটি সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ ডিজিটাল প্রতারক চক্র রিং আইডির আড়ালে কয়েন বিক্রি করে ইলেক্ট্রনিক লেনদেনের সাহায্যে অর্থ সংগ্রহ করতো। অভিযুক্তরা সহজে আয়ের পথ হিসেবে মানুষকে রিং আইডিতে বিনিয়োগে প্ররোচিত করেছেন। ২০১৯ সালে বাদী আঁখি বেগম, তার দুই ভাই ও এক ভাগ্নে মোট ৮৬ হাজার টাকা কয়েক ধাপে সেখানে বিনিয়োগ করেন। এরমধ্যে আঁখির এক ভাই সামান্য কিছু টাকা উত্তোলন করতে পেরেছিল। এরপর তারা আর কোনো লাভ কিংবা বিনিয়োগ করা মূলধনও ফেরত পাননি।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রিং আইডি কমিউনিটি জবস খাতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে উপার্জনের কথা বলে জনগণের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, কেবল কমিউনিটি জবস খাত থেকেই গত মে মাসে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ ও জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে রিং আইডি। তিন মাসে তারা হাতিয়ে নিয়েছে মোট ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

রিং আইডি যেন অবৈধভাবে দেশের টাকা বাইরে পাচার করতে না পারে সেজন্য এরই মধ্যে তাদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে সিআইডি।