আগামী মাসে বাড়ানো হবে সুদের হার: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

রফতানি বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

ডেস্ক: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার আগামী মাসে ১০ শতাংশ বা তার বেশি বৃদ্ধি করা হবে বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

আজ ২২ আগস্ট বুধবার রাতে প্রকাশিত বিবিসিকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এক বা দুই দিনের মধ্যেই সুদের হার ৮ দশমিক ৫ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে এবং আগামী মাসেই ১০ শতাংশ বা তার বেশি হারে সুদ বৃদ্ধি করা হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সম্প্রতি প্রবাসি আয় কমে যাওয়া এবং পোশাক রপ্তানি খারাপভাবে প্রভাবিত হওয়ায় অর্থনৈতিক চাপে রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া চলতি মাসের শুরুতে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা এবং কারফিউ জারি করার কারণেও আর্থিক চাপ বেড়েছে।

যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশে ঋণ সহায়তার সময় মুদ্রানীতি কঠোর করতে এবং বিনিময় হার নমনীয় রাখার পরামর্শ দেয়। এই বিষয়ে তিনি জানান, দেশের অর্থনীতিতে গতি আনতে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির কাছে ১ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে।

তিনি জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে জড়িত কিছু ব্যবসায়িক গ্রুপের ঋণ খেলাপির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো আমানতের সংকটে ভুগছে। ঋণ খেলাপিরা অর্থ নিয়ে সিঙ্গাপুর, দুবাই, লন্ডনসহ অন্যান্য দেশে পাচার করেছে। তাই প্রথম কাজ হচ্ছে এসব অর্থ ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করা।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচার করা অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে হবে। তাই আমরা একটি ব্যাংকিং কমিশন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। এই কমিশনের কাজ হবে ব্যাংকগুলোর বোর্ড পরিবর্তন, ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন, মূলধন জমা করা এবং কিছু ছোট ব্যাংকের ক্ষেত্রে একীভূতকরণ করা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এই গভর্নরও আশা রাখেন, বাংলাদেশের নতুন সরকার মুদ্রানীতিতে সংস্কারের পাশাপাশি চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ব্যয়ে তীব্র হ্রাস ঘোষণা করবে। যদিও এর আগে শেখ হাসিনার সরকার ব্যয় কমিয়েছিল এবং দেশের রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ৪ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল। ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, যা ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন ব্যয়।