সারা বি‌শ্বে ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ ক্যালেন্ডার প্রচলনের দা‌বি

নিজস্ব প্রতিবেদক:শ‌নিবার (৩০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হো‌সেন চৌধুরী হ‌লে রাজারবাগ শরীফের পক্ষ থেকে ‘মাজলিসু রুই্য়াতিল হিলাল’ এর উদ্যোগে সর্বপ্রথম মুসলিম রচিত ইসলামী সৌর ক্যলেন্ডার ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ আহ্বান জানা‌নো হয়।

মুস‌লিম সমাজ ও বাংলা‌দেশসহ সারা বি‌শ্বে মুসলিম রচিত পূর্ণাঙ্গ ও প্রথম ইসলামী সৌর ক্যলেন্ডার ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ প্রচলন করার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে রাজারবাগ শ‌রিফ।

সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিশিষ্ট চাঁদ ও মহাকাশ গবেষক এবিএম রুহুল হাসান।

সে‌মিনা‌রে বক্তারা ব‌লেন, আত তাকউইমুশ শামসীর আগে প্রবর্তিত সকল ক্যালেন্ডার ছিল লুনি-সোলার সমন্বিত ক্যালেন্ডার। মুসলিম প্রবর্তিত সর্বপ্রথম ও একমাত্র এই সোলার বা সৌর ক্যালেন্ডারের সন গণনা শুরু হয়েছে, রাসুল সা. যে বছর এবং যে মাসে আল্লাহ পাকের সাথে দীদারে মিলিত হন সেই বছর ও সেই মাসের পহেলা তারিখ অর্থাৎ পহেলা রবিউল আউয়াল, ১১ হিজরী থেকে। তাই ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ অনুসরণ করা সকল মুসলমানদের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। পাশাপাশি বাংলদেশ সরকারসহ মুসলিম বিশ্বের উচিত সারা মুসলিম বিশ্বে এই ক্যালেন্ডারের প্রচলন করা।

মুসলমানদের জন্য মুসলমান রচিত পূর্ণাঙ্গ সৌর ক্যালেন্ডারের নাম ‘আত তাকউইমুশ শামসী’। এর আগে প্রবর্তিত সকল ক্যালেন্ডার ছিল লুনি-সোলার সমন্বিত ক্যালেন্ডার। মুসলিম প্রবর্তিত সর্বপ্রথম ও একমাত্র সোলার বা সৌর ক্যালেন্ডারের শামসী সন গণনা শুরু হয়েছে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে বছর এবং যে মাসে আল্লাহ পাকের দীদারে মিলিত হন সেই বছর ও সেই মাসের পহেলা তারিখ অর্থাৎ পহেলা রবিউল আউয়াল থেকে। তাই ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ অনুসরণ করা সকজল মুসলমানদের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারসহ মুসলিম বিশ্বের উচিত সারা মুসলিম বিশ্বে এই ক্যালেন্ডারের প্রচলন করা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে সর্বপ্রথম ইসলামী সৌর ক্যালেন্ডার ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিশিষ্ট চাঁদ ও মহাকাশ গবেষক এবিএম রুহুল হাসান। এছাড়া ইসলামের আলোকে সৌর বা শামসী সনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন, দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার নির্বাহী সম্পদক মুফতিয়ে আযম আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ করেছেন ‘তিনি সূর্যকে করেছেন তেজোদীপ্ত, আর চাঁদকে করেছেন আলোকময় আর তার (হ্রাস বৃদ্ধির) মানযিলসমূহ সঠিকভাবে নির্ধারণ করেছেন, যাতে তোমরা বৎসর গুণে (সময়ের) হিসাব রাখতে পার। আল্লাহ এটা অনর্থক সৃষ্টি করেননি, তিনি নিদর্শনগুলোকে বিশদভাবে বর্ণনা করেন জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য।’ (সূরা ইউনুস শরীফ, আয়াত শরীফ ৫)। এ থেকে বোঝা যায়, মুসলমানদের চাঁদের ক্যালেন্ডারের (হিজরি ক্যালেন্ডার) পাশাপাশি প্রয়োজন একটি সূর্য ভিত্তিক রচিত সৌরসাল। বর্তমানে ইরান ও আফগানিস্থানে লুনি-সোলার (চাঁদ ও সূর্যের সমন্বয়ে) ক্যালেন্ডার ব্যবহৃত হলেও মুসলমানদের রচিত পূর্ণাঙ্গ সৌরসাল কোনো মুসলমান দেশেই প্রচলিত নেই। তাই ঈসায়ী ক্যালেন্ডার যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত ক্যালেন্ডারের পরিবর্তে নতুন সৌরসন ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ বাংলাদেশসহ সারা মুসলিম বিশ্বে প্রচলন খুবই জরুরি।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে ইরান, আফগানিস্থান, ইথিওপিয়া, নেপাল তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করছে। উল্লেখ্য এদেশগুলো কখনো ইউরোপীয় উপনিবেশ মেনে নেয়নি। ভারত উপমহাদেশে বৃটিশরা প্রথম ১৭৫৭ সালের দিকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নিয়ে আসে। মূলত এটি আমাদের কোনো ক্যালেন্ডার নয় বরং জোর করে চাপিয়ে দেয়া একটি সৌরসাল। তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, জাপান নিজেদের মত করে একটা ক্যালেন্ডার ব্যবহার করছে। তাছাড়া ভারত, ইসরাইল, চাইনিজরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবসায়িক কারণে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মেনে নিলেও নিজ নিজ দেশের প্রশাসনিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাজকর্ম পালনের লক্ষ্যে তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে থাকে। ভারতে ইউরোপীয় উপনিবেশ থাকার কারণে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে বাধ্য হয়েছে সত্য, কিন্তু এখনো অনেক প্রদেশের প্রশাসনিক কাজ থেকে শুরু করে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাজসমূহ তাদের স্ব স্ব ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পালিত হচ্ছে।

বক্তাদের দাবি, এই দেশগুলো কেবল তাদের ধর্মীয় উৎসবের তারিখ নির্দিষ্ট করার জন্যই নয় বরং জাতিগত সত্ত্বা বজায় রাখার জন্যেও যার যার নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে থাকে। তাহলে সারাবিশ্বের মুসলমানরা কেন তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্য মুসলমান রচিত ‘আত তাকউইমুশ শামসী’ সন ব্যবহার করবে না?