সব বিভ্রান্তি প্রত্যাখান করে শনিবার দিবাগত রাতে শবে বরাত পালন করেছেন চাঁদ দেখায় বিশ্বাসীরা

স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন জেলায় চাঁদ দেখা যাওয়ার প্রেক্ষিতে চাঁদ দেখা নিয়ে সব বিভ্রান্তি প্রত্যাখান করে ইসলামের সহিহ ধারায় শামিল হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ২০ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হয়েছে। পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে মুসুল্লীরা সারারাত জাগ্রত থেকে যথাযথ গুরুত্ব ও মর্যাদার এবাদত বন্দেগীতে মশগুল ছিলেন। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির দাবি অনুযায়ী ২১ এপ্রিল পবিত্র শবে বরাত।

পবিত্র শবে বরাতের রাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা মাজার, দরবার এবং খানকাসমুহে মুসলমানরা রাতভর এবাদত বন্দেগি করেছেন অত্যন্ত আবেগঘন এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে। নফল নামাজ, কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত, মাজার-কবরস্থান জিয়ারত, জিকির-আজকার ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল এবং আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টি কামনায় শবে বরাত অতিবাহিত হয়েছে।

প্রতিবারের মতো রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরীফে বাদ আছর থেকে শুরু হয়ে দরবার শরীফের শায়খ ক্বিবলা উনার ইমামতিতে রাতভর ইবাদত-বন্দেগী ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। রাতে বিশেষ মোনাজাতে হাজার হাজার মানুষ শরিক হন। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মুরিদ-মুতাক্বিদ ও মুহব্বতকারীরা অংশ গ্রহণ করেন। হাক্কানী আনজুমান বাংলাদেশের উদ্যোগে মাওলানা আশরাফ আলীর নেতৃত্বে মুহম্মদপুর তাজমহল রোড, কেরানীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পবিত্র শবে বরাত পালন করেন। চরণপুর মুজাদ্দেদীয়া খানকার উদ্যোগে দরবারের পীর সাহেব শাহ সূফী আব্দুস সালাম সাহেবের নেতৃত্বে রাজধানীর কদমতলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শবে বরাত পালন করেন। রাজধানীর বসুন্ধরা জুননূরাইন জামে মসজিদ,  কদমতলা রাজারবাগ মসজিদ, শাহবাজ জামে মসজিদ রমনা সহ বিভিন্ন স্থানে রাতভর ইবাদত বন্দেগী দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও পবিত্র শবে বরাত পালনের খবর পাওয়া গেছে। নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জে হযরত আয়শা সিদ্দীকা আলাইহিস সালাম জামে মসজিদ, খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার হাতিমুড়া কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ , সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার কাবিলাখাই এলাকার বিভিন্ন মসজিদ, একই জেলার জামালগঞ্জ থানার উত্তর জামালগঞ্জ ইউনিয়নের কালিপুর জামে মসজিদ, আনোয়ারিয়া দরবার শরীফের উদ্যোগে সদরকান্দী জামে মসজিদ, জগন্নাথপুর থানার রসূলগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ, মুন্সিগঞ্জ জেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বায়তুল মামুর জামে মসজিদ, গাজীপুর জেলার মাওনা ইউনিয়নের ফুলানীর ছিট সুন্দর আলী জামে মসজিদ, কক্সবাজার সদর থানার বড়ছড়া দরিয়ানগর মুহম্মদিয়া জামে মসজিদ, রামু থানায় কালুয়ারখলা জামে মসজিদ, বোয়ালিয়া পালং জামে মসজিদ, উখিয়া থানায় জুমছড়ি জামে মসজিদ, দরিয়ানগর সুকনাছড়ি বাজার জামে মসজিদ, ছোট ইনানি বাজার মসজিদ, জালিয়া পালং ইউনিয়নের বেশ কয়টি মসজিদে শবে বরাত পালনের খবর পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য গত ৬ এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার হাতিমুড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মুঈনুল ইসলাম পারভেজ এবং মসজিদের মুসল্লিরা শাবান মাসের চাঁদ দেখেন। পরে বিষয়টি খাগড়াছড়ি ডিসিকে ফোন করে জানালে তিনি প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিতও হন। কিন্তু রাত ১১টার দিকে ডিসি প্রত্যক্ষদর্শীদের আবার ফোন করে বলেছেন, চাঁদ দেখার ঘোষণা হয়ে গেছে, এখন আর কিছু করার নেই। একই দিন মুন্সিগঞ্জ জেলার মুক্তারপুর পঞ্চসার ইউনিয়নের বাইতুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুহম্মদ মুহিবুল্লাহ ও মুসল্লিরা চাঁদ দেখেন। এছাড়া রাঙ্গামাটি সাজেকে ৭ জন বিজিবি সদস্যও চাঁদ দেখেছে। ল্যান্স নায়েক রবিউল ইসলাম মামুন বিষয়টি স্বীকার করেছে। ইফা প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষী নেওয়ার কথা বলে দুই দিন ডাকলেও তারা স্বাক্ষ্য নেয়নি। মিডিয়া ও আইনজীবির সামনে প্রত্যক্ষদর্শীরা স্বাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইফা একমত হয়নি।