শরীয়ত মুতাবিক পর্দা করার বেমেছাল ফযীলত

শরীয়ত মুতাবিক পর্দা করার বেমেছাল ফযীলত

পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য হারাম কাজ থেকে নিজেদের চক্ষু এবং লজ্জাস্থান ও সমস্ত শরীর হিফাযত করা তাযকিয়ায়ে নফস তথা অন্তর পরিষ্কার করণে সহায়ক।
মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মু’মিনগণ উনাদেরকে বলুন, উনারা যেন উনাদের দৃষ্টি নত রাখেন এবং উনাদের ইজ্জত ও আবরু হিফাযত করেন। এতে উনাদের জন্য অনেক পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়ই উনারা যা করেন মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি তা অবহিত রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নূর : পবিত্র আয়াত -৩০)

বেগানা নারীর সৌন্দর্যের প্রতি প্রথম দৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে মহান আল্লাহ তায়ালার ভয়ে চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলে, মহান আল্লাহ তায়ালা সে বান্দার ইবাদত সমূহে স্বাদ সৃষ্টি করে দেন। সুবহানাল্লাহ!

(মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, আল ফাতহুর রব্বানী)

যে ব্যক্তি (পুরুষ হোক বা মহিলা হোক) তার চক্ষুর দৃষ্টি এবং লজ্জাস্থানকে হারাম থেকে হিফাযত করবে, আখেরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সে ব্যক্তিকে সম্মানিত জান্নাত মুবারকে প্রবেশ করানোর দায়িত্ব নিবেন। সুবহানাল্লাহ!

হাদীছ শরীফের মধ্যে বর্ণিত আছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার জিহ্বা এবং লজ্জাস্থান হিফাযতের দায়িত্ব নিবে, আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিবো। সুবহানাল্লাহ!

(মিশকাত শরীফ, মিরকাত, শরহুত ত্বীবী ইত্যাদি)

হযরত আবূ উমামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছি। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা ছয়টি কাজের দায়িত্ব নাও, তাহলে আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিচ্ছি। ছয়টি কাজ হলো-

(১) তোমাদের মধ্যে যখন কেউ কথা বলবে, তখন কেউ মিথ্যা বলবে না।

(২) যখন তোমাদের কাছে আমানত রাখা হয়, তখন তা খিয়ানত করবে না।

(৩) যখন ওয়াদা করবে, তখন তা ভঙ্গ করবে না।

(৪) তোমাদের দৃষ্টিকে নিম্নগামী করবে।

(৫) যুলুম করা থেকে হাতকে সংযত রাখবে এবং

(৬) তোমাদের নিজেদের ইজ্জত আবরুকে হিফাযত করবে। সুবহানাল্লাহ!

(আত তা’লীকুছ ছবীহ, লুময়াত, আশআতুল লুময়াত ইত্যাদি)

ক্বিয়ামতের দিন কঠিন সময়ে ঐ সমস্ত চোখ কাঁদবে না অর্থাৎ ঐ সমস্ত ব্যক্তি ইতমিনানে তথা শান্তিতে থাকবে, যে সমস্ত ব্যক্তির চোখ মহান আল্লাহ পাক উনার হারামকৃত জিনিষ দেখা থেকে সংযত ছিল। সুবহানাল্লাহ!

তাফসীরের কিতাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ক্বিয়ামতের দিন প্রত্যেক চোখই কাঁদবে শুধু ঐ চোখ কাঁদবে না যে চোখ মহান আল্লাহ পাক উনার হারামকৃত জিনিস দেখা থেকে সংযত থেকেছে, আর ঐ সমস্ত চোখ যা মহান আল্লাহ পাক উনার পথে রাত্রি জেগেছে এবং ঐ সমস্ত চোখ যে মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ে কেঁদে অশ্রু বের করেছে। যদিও চোখের পানি মাছির মাথার সমান হয়। সুবহানাল্লাহ!

(তাফসীরে ইবনে কাছীর)

কুরআন ও হাদীছছের মধ্যে শরীয়ত মুতাবেক পর্দা করার আরো অসংখ্য-অগনিত ফযীলত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

হান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সকলকে হাক্বীক্বী পর্দা করার তাওফীক্ব দান করেন। আমীন!