লাল মরিচে রঙিন বালুচর

গাইবান্ধা সংবাদদাতা: তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বালুচরজুড়ে লাল মরিচের এখন ছড়াছড়ি। বাড়ির আঙিনা, নদীর তীর ও বালুচরে মরিচ শুকানোর ধুম পড়েছে। মরিচ চাষে খরচ কম, লাভ বেশি- তাই এ ফসল আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন চরবাসী। দিকে দিকে লাল মরিচ শুকানোর দৃশ্য দেখলে দূর থেকে মনে হয় লাল সোনা ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে এলাকার লোকজন চরের নাম দিয়েছেন ‘লাল সোনার চর’।

গাইবান্ধার তিন নদীর বালুচর ঘুরে এসে এ চিত্র মিলেছে।

ফুলছড়ি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, লাল সোনার চর হিসেবে মানুষের কাছে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে চরগুলো। কারণ মৌসুমে চরগুলোতে লাল মরিচ শুকানোর ধুম পড়ে। সে কারণে বালুচর হয়ে উঠে রঙিন। তাই বালুচরের মরিচকে বলা হয় ‘লাল সোনা’। কারণ মরিচ চাষ করেই চরাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন।

তিনি বলেন, গাইবান্ধার চার উপজেলা সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১৬৫টি চরাঞ্চলে এখন মরিচ শুকানোর কাজে ব্যস্ত অধিবাসীরা।
ফুলছড়ির উপজেলার চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ বলেন, গাইবান্ধার কামারজানি, মোল্লারচর, অ্যারেন্ডাবাড়ি, সুন্দরগঞ্জের কাপাসিয়া, শ্রীপুর, হরিপুর, বেলকা, ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি, গজারিয়া, উড়িয়া, রতনপুর, সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা, হলদিয়া, ভরতখালীসহ অন্তত ২২টি চরে ব্যাপক মরিচের চাষ হয়েছে। উৎপাদনও ভালো।
মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান সরকার জানান, মরিচ চাষে খরচও কম। কিন্তু লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই চরাঞ্চলজুড়ে মরিচের চাষ হয়ে থাকে। মরিচ যখন পাকতে শুরু করে তখন ঢাকা থেকে বড় বড় কোম্পানির (স্কয়ার, বেক্সিমকো, প্রাণ) লোকজন এসে নদী তীরের হাটগুলোতে আড়ত খুলে বসে। সেখান থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান ঢাকায়। তাছাড়া জমি থেকেও কৃষকদের কাছে সরাসরি মরিচ কেনাবেচার হয় বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কৃষক আবেদ আলী জানান, তার চার বিঘা জমির মরিচ গাছে থাকা অবস্থায় কোম্পানির লোকজন এসে নগদ টাকায় কিনে নেয়।

মরিচচাষি হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেন। এতে তার ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু তিনি বিক্রি করেন ১ লাখ টাকা।

সফি ব্যাপারী জানান, মরিচ করেছিলেন ৪ বিঘা জমিতে। রোদে শুকিয়ে প্রতি মণ বিক্রি করেন সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা হিসাবে। এতে তার লাভ আসে অন্তত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।