র‌্যাব কর্মকর্তা সেজে চাকরির নামে প্রতারণা করত ওরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর দক্ষিণখান ও কুষ্টিয়া জেলা থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব দাবি করেছে, আটকরা সবাই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক দলের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল।

গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১২ এবং র‌্যাব-১ এর যৌথ দল ঢাকার দক্ষিণখান থানার আশকোনা ও কুষ্টিয়া থেকে তাদের আটক করে।
শুক্রবার কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন, র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে কুষ্টিয়ার স্থানীয় দুই যুবকের কাছে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে গত ২ ডিসেম্বর র‌্যাব-১২ এর একটি তিনজনকে আটক করে। এসময় সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে র‌্যাবের একটি ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাইফুল ইসলাম ও তাজন হোসেন স্বীকার করেছে তারা প্রতারণা করে চাকরিপ্রত্যাশী যুবকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিত। সাইফুল নিজেকে র‌্যাব-৪ এর অধীনে সাভার ক্যাম্পে কর্মরত ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার ইসলাম এবং তাজন হোসেন নিজেকে র‌্যাব-১২ এ কর্মরত মেজর মশিউর রহমান নামে নিজেদের পরিচয় দিত। কুষ্টিয়ার স্থানীয় একজন ঘটক সাবান আলীকে সাইফুল ইসলাম চাকরি প্রার্থী সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করত। ঢাকার আশকোনাতে অবস্থিত একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে সে র‌্যাবের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করে।

পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে র‌্যাব-১ এর সহায়তায় র‌্যাব-১২, সিপিসি-১ দল ঢাকার দক্ষিণখান থানার আশকোনায় অবস্থিত একটি কম্পিউটার দোকান থেকে র‌্যাবের ভুয়া আইডি তৈরিতে পারদর্শী এসএম জাহিদুল ইসলাম (২৮) ও কাজী শাহীনকে (৩০) আটক করে। এসময় তাদের কম্পিউটারে রাখা র‌্যাবের ভুয়া আইডি কার্ড ও সেনাবাহিনীতে ভর্তির নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়।

র‌্যাব-১ জানায়, আটক সাইফুল ইসলাম এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এরপর সে দীর্ঘ ১১ বছর হা-মীম নামে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে নিরাপত্তা বিভাগে চাকরি করে। লকডাউনের সময় গার্মেন্টস থেকে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর সে এই পেশায় জড়িয়ে পড়ে।

আটক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে দুই যুবকের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা গ্রহণের পর ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায় একটি মামলা রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।