রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ৯.২২%

প্রবৃদ্ধি, রফতানি আয়

নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ২২ শতাংশ।এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার।একইসাথে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে।
অন্যদিকে,একক মাস হিসেবে সর্বশেষ এপ্রিলে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি ডলার।এর বিপরীতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। আর গত বছর একই সময়ে আয় হয়েছিল ২ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার।
অন্যদিকে,এপ্রিলে আয় হয়েছে ২৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৭ কোটি ডলার।গত বছর এপ্রিলে আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার।
প্রধান রফতানি পণ্য পোশাক খাতের ধারাবাহিক ভালো আয় হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান বাসসকে বলেন,বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত পোশাক নির্ভর।রফতানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছেই।এ কারনেই রফতানি আয়ে উল্লেখ করার মত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
তিনি রফতানি আয় আরো বাড়াতে প্রচলিত বাজার ছাড়াও অনেক নতুন বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পোশাকের পাশাপাশি অন্য পণ্যে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন,রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে পোশাক খাত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।তবে পোশাক ছাড়া অন্যান্য খাতের রফতানি আয় নেতিবাচক। এজন্য তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তাসহ প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন।
ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী,চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে পোশাক খাতের ওভেন পণ্যে (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় দুই-ই বেড়েছে। এক হাজার ১৪১ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪৮ কোটি ৪৯ লাখ বেড়ে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ।
পোশাক খাতের নিট পণ্যেও (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। এক হাজার ৭৩ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থেকে কিছুটা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৭৩ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে বড় পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এই খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭২ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, যার প্রবৃদ্ধি শুণ্য দশমিক ৭৮ শতাংশ। চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে শুণ্য দশমিক ৭০ শতাংশ।
অন্যদিকে, বড় পণ্য হিসেবে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি এমন পণ্যের মধ্যে হিমায়িত মাছের প্রবৃদ্ধি কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ। চিংড়ির প্রবৃদ্ধি কমেছে কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। এছাড়া হোম টেক্সটাইল, রাবার, সিরামিকস ইত্যাদি পণ্যের রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা ও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে এবং একই সঙ্গে রফতানি আয় বেড়েছে এমন পণ্যের মধ্যে কম্পিউটার এক্সেসরিস, ফার্নিচার, শুকনো খাবার, রাসায়নিক পণ্য প্রভৃতি।