যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনার চুক্তি করছে না বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই মুহূর্তে কোনও অস্ত্র ক্রয়ের চুক্তি করছে না বাংলাদেশ। বরং বর্তমানে জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) চুক্তির বিষয়ে যে আলোচনা চলছে সেটার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- যদি ভবিষ্যতে কখনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র বাংলাদেশ কেনে তবে এই অস্ত্র সম্পর্কিত তথ্য গোপন রাখবে ঢাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি ইরানসহ ৭৭টি দেশের আছে। সবদেশ যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র কেনে তা-ও নয়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিষয়টা এরকম নয় যে, এখনি আমাদের কিছু কিনতে হবে। এই মুহূর্তে আমরা বড় কোনও কেনাকাটায় যাচ্ছি, এমনটা ভাবার কারণ নেই।

এই মুহূর্তে সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক যে গতিধারা সেটাকে ঠিক রাখা।

তবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ফোর্সেস গোল ২০৩০ নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা রয়েছে। দেশের নিরাপত্তার জন্য আমরা হয়তোবা ধাপে ধাপে বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করবো। কিন্তু প্রায়োরিটি হচ্ছে জনগণের উন্নয়ন, দেশের উন্নয়ন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর কীভাবে পড়বে সেটা নিয়ে চিন্তার বিষয় রয়েছে।
আমাদের রেমিট্যান্স বাড়ছে। সেটা টেকসইভাবে বাড়ছে কিনা তা-ও যাচাই করে দেখতে হবে। সুতরাং কেনাকাটা করে আমরা খুব যে পয়সা নষ্ট করবো সেটার সুযোগ নেই।
জিসোমিয়া: জিসোমিয়া চুক্তি নিয়ে আলোচনা তৃতীয় ধাপে রয়েছে এবং এরপর আরও দুটি ধাপ বাকি আছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, জিসোমিয়ার একটি সর্বশেষ খসড়া আমাদের দিয়ে গিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড (যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি)। সেটা নিয়ে এখন কাজ হচ্ছে।

উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে জিসোমিয়া চুক্তি একটি পূর্বশর্ত জানিয়ে তিনি বলেন, চুক্তি সই করার পর আমরা তাদের জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পারবো।
বাংলাদেশের ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর অধীনে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ক্রয়কে আরও বহুমুখী করতে চায় সরকার। সেজন্য যে চুক্তিগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।
জিসোমিয়া চুক্তিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছে সরকার। এমনটা জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা চুক্তিটি যাচাই করবো। যদি এই চুক্তি শুধু তাদের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, তবে আমরা তা করবো।

তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত প্রতিরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি প্রটেকশনের প্রয়োজন আছে সেগুলোর ক্ষেত্রে জিসোমিয়া ব্যবহার করা হবে। সাধারণ কোনও অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে নয়।

আমরা যদি উন্নত প্রযুক্তির কোনও সামগ্রী ভবিষ্যতে কিনতে চাই তাহলে আগে থেকে তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে।
ইতোমধ্যে ৭৭টি দেশের সঙ্গে তাদের এই চুক্তি আছে বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন।

ইন্দো-প্যাসিফিক: বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি দ্রুত ঘোষণা করা হবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অধীনে ইকোনমিক প্ল্যাটফর্ম ঘোষণার বিষয় রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের যে জায়গাগুলো রয়েছে, সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে আকাঙ্খা রয়েছে- সেগুলোর সঙ্গে মার্কিন আইপিএসের কোথায় মিল আছে সেটাও আমরা খুঁজে বের করবো।