বিতর্কিত সৃজনশীল পদ্ধতি সফল করতে বেশি করে বই পড়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে যখন দেশজুড়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে চলছে তুমুল সমালোচনা ও বিতর্ক, দাবি উঠছে সৃজনশীল বাতিলের- এসময় সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি ফলপ্রসূ করতে শিক্ষার্থীদের বেশি বেশি বই পড়ার তাগিদ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শিক্ষামন্ত্রী গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলা মোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বিশ্ব বই দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী মনে করেন, মুখস্থনির্ভর প্রচলিত লেখাপড়া দিয়ে বিশ্বায়নের এ যুগে টিকে থাকা যাবে না। নতুন প্রজন্মকে বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধানে দক্ষ করে তুলতে সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সুফল পুরোপুরি কাজে লাগাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত নোটবই পরিহার করে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি পাঠ্যসূচির সম্পর্কযুক্ত বই বেশি করে পড়ার জন্য মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি প্রফেসর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতারী মমতাজ, সেকায়েপ প্রকল্প পরিচালক ড. মাহামুদুল হক এবং বিএনসিইউ সচিব মনজুর হোসেন বক্তৃতা করেন।

সৃজনশীল পদ্ধতির সমালোচনা করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দ বলেন, আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় কেন, বাবা-মা ভালো বন্ধু হতে পারলেও শিশুদের খেলার সাথী শিশুরাই। অবুঝের মতো আমরা কেন প্রশ্নপত্র দিয়ে সৃজনশীলতা আনার চেষ্টা করছি? সম্প্রতি একজন শিক্ষাবিদ তার জরিপের ফলাফলে দেখলেন, প্রাথমিক সমাপনী পাস করা এক-তৃতীয়াংশ শিশু কোনো বিষয়ের ওপর পাঁচটি বাক্য লিখতে কিংবা যোগ-বিয়োগ অংক কষতে পারে না। এটা নম্বর প্রদান সহজীকরণ করার জন্য হয়েছে কিনা, ভেবে দেখার বিষয়। নীতিকথার মতো সরকার শিশুদের বিকাশে খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টির কথা বলছে। ভেতরের সত্য এটাই যে, অনেক বিদ্যালয় খেলাধুলার সুবিধা না দিতে পেরে এর প্রতিস্থাপন হিসেবে সিলেবাসে অতিরিক্ত বই যোগ করে চলেছে। শিক্ষাঙ্গনে শারীরিক শাস্তি বন্ধ করতে সরকার বেশ তৎপর হলেও বই-চাপ কমাতে মোটেও তৎপর নয়। বই-চাপে শিশুরা যেখানে মাথাব্যথায় আক্রান্ত, সেখানে তারা কী সৃজন করবে?

গত ১০ এপ্রিল (২০১৬) প্রশ্নপত্রে অতিরিক্ত সৃজনশীল অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আগের মতো প্রশ্নপত্র চাই। অতিরিক্ত সৃজনশীল পড়বো না, লিখবোও না। প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে এটা সরকারের ব্যর্থতা, এর প্রতিদান আমাদের কেন দিতে হবে?

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অতিরিক্তি সৃজনশীল লিখবো না’, ‘আমরা মানুষ, রোবট নয়’ বলে শ্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভে ঢাকা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, বিএফ শাহীন, ধানমন্ডি আইডিয়েল, আব্দুর রউফ, ইম্পেরিয়াল, ডেফোডিলসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ঘিরে রাখে।

এদিকে,