যুদ্ধাপরাধ মামলা: প্রধান বিচারককে সরে দাঁড়ানোর দাবি দুই মন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াত নেতা রাজাকার কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী মামলার আপিল শুনানি থেকে প্রধান বিচারক এসকে সিনহাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দুজন কেবিনেট মন্ত্রী। আজ শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির বিলিয়া মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক সভায় এ আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইমলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

রাজাকার মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা শুনানিকালে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারক বলেছিলো, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।’

প্রধান বিচারক বলেছে যে, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায় খুবই মর্মাহত। মামলার এভিডেন্স দেখলে, এগুলো পড়লে আমাদের খুব কষ্ট লাগে। মামলাগুলো যখন আমরা পড়ি, তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে তাদের মামলা পরিচালনা দেখে। সব মামলায় এটা হয়ে আসছে।’

এরপর প্রধান বিচারক অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলে যে, ‘এত হাফ হার্টেড হয়ে আপনারা মামলা চালান কেন?’ প্রধান বিচারক বলে যে, ‘প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থার পেছনে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু তারা এসব কী মামলা পরিচালনা করছে? ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা শুধু ব্যস্ত টিভিতে চেহারা দেখানো নিয়ে। তারা দামিদামি গাড়ি চড়েন আর পুলিশের হুইসেল দিয়ে ঘুরে বেড়ান।’ প্রধান বিচারকের উক্তরূপ বিতর্কিত মন্তব্যর কারণে সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্য হচ্ছে। এর আগেও অবসরে গিয়ে রায় লেখা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে সরকারকে অস্বস্তিতে সে। তাই শনিবার ‘একাত্তরের গণহত্যাকারীদের বিচারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, সরকার, বিচারবিভাগ ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় প্রধান বিচারককে বাদ দিয়ে রাজাকার মীর কাসেমের মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করার দাবি জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইমলাম।

তিনি বলেন, ‘এই মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারকর প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি যে, এই মামলায় আর মৃত্যুদ-ের রায় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘এরপরও যদি রাজাকার মীর কাসেমের মামলার রায়ে মৃত্যুদ- দেয়া হয়- তাহলে সবাই ভাববে, সরকার চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছে।’

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধান বিচারককে হয় তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে অথবা আপিল শুনানি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।#