পরিত্যক্ত ইটভাটায় বিদেশি ফলের চাষ

পরিত্যক্ত ইটভাটায় বিদেশি ফলের চাষ

চাঁদপুর সংবাদদাতা: চাঁদপুরে পরিত্যক্ত ইটভাটা এখন সবুজের সমারোহ। সেখানে চাষ হচ্ছে দুর্লভ ও রসালো হরেক প্রজাতির বিদেশি অর্গানিক ফল।

এসব ফলের মধ্যে আছে- সাম্মাম, রকমেলন, মাস্কমেলনসহ তিন জাতের ব্যতিক্রম তরমুজ। (উপরে হলুদ ভেতরে লাল, ডোরাকাটা সবুজ (লম্বা) ভেতরে গাড় হলুদ এবং ডোরাকাটা সবুজ (গোলাকার) ভেতরে সিডলেস হলুদ রং। এছাড়া বিদেশি নানা জাতের আম, মালটা, ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিকামসহ নানা প্রজাতির ফল।

এখনো এসব ফলের বাণিজ্যিক বাজারজাত শুরু হয়নি। তবে, এখন সময় এসেছে সাম্মাম, রকমেলন, মাস্কমেলন বাজারজাত করার। ইতিমধ্যে ঢাকার কিছু সুপারশপসহ অনেকেই আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন এসব ফল কিনতে।

এসব ফল চাষের উদ্যোগ নিয়ে জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহাতলী গ্রামের হেলাল উদ্দিন। তিনি পেশায় একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি এই দুর্লভ ও রসালো অর্গানিক ফলের চাষাবাদ শুরু করেছেন কয়েকমাস আগে।

হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সাংবাদিকতার পাশাপাশি চাঁদপুরে নিজ গ্রামের বাড়ির পরিত্যক্ত দুটি ইটভাটার প্রায় আড়াই একর দূষণযুক্ত জমি মাটি বালি ফেলে দূষণমুক্ত করেছি। পরে সেখানে এসব ফল চাষ শুরু করেছি। এ এক নতুন ভিন্ন অভিজ্ঞতা। কারণ, কৃষি মানুষকে যে কত আনন্দ দিতে পারে তা বর্ণনাতীত। আমি এখন আমার কৃষিকাজকে উপভোগ করছি। তবে অনেকটা শখের বসে আমি এই বাগান গড়ে তুলি এবং এর নাম দিয়েছি ‘ফ্রুটস ভ্যালি’। এখানে সর্বাধুনিক সব কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। আমি চাই আমার এই বিষমুক্ত, কীটনাশকমুক্ত অর্গানিক ফল পাইকারি মূল্যে সারাদেশের ক্রেতার হাতে তুলে দিতে।

তিনি দাবি করেন, প্রথমবারেই সাম্মাম, রকমেলন, মাস্কমেলনের আশাতীত ফলন হয়েছে। তাই এখন বাজারে সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এসব চাষাবাদ করতে তার এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে এবং তা আগামী তিন মাসেই উঠে আসার সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে লাভ করতে এই কাজে এগিয়ে আসিনি। এদেশের মানুষকে কিছু উন্নত প্রজাতির ব্যতিক্রম ফল খাওয়াতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক চাষের উদ্যোগ নিয়েছি। খুব শিগগির অনলাইনে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসহ ঢাকার কিছু সুপারশপে বিক্রয় এবং বিদেশে রপ্তানি করা হবে।

চাঁদপুর সদরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, বৃহত্তর কুমিল্লার মধ্যে চাঁদপুরে এই প্রথম জৈব ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বিদেশি দুর্লভ ফল চাষাবাদ করে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি। এজন্য এই উদ্যোক্তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি প্রমাণ করেছেন যে কোনো জায়গায় এ ধরনের ফল বাগান করা কোনো কষ্টসাধ্য বা ঝুঁকির বিষয় নয়। শুধু উদ্যোগে নিলে আর সামান্য পরিচর্যা করলেই এ ধরণের ফল বাগান সারাদেশের যে কোনো স্থানে করা সম্ভব। এজন্য সরকারও ব্যাপক সহায়তা করবে।