নিজামীর রায়: ‘মৃত্যুদন্ড বহাল চাই’, ‘ন্যায়বিচার চাই’

নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে জামাতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদন্ড বহাল চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অপরদিকে নিজামীর পক্ষে ন্যায়বিচার আশা করেছে তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। মঙ্গলবার মৃত্যুদন্ডের রায় পুর্নবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে নিজামীর করা আবেদনের রায়ের দিন ধার্যের পরে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন দুইপক্ষ।

সকালে নিজামীর রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (০৫ মে) রায়ের দিন ধার্য করেছে প্রধান বিচারক এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারকর আপিল বেঞ্চ। অন্য তিন বিচারক হলেন- বিচারক নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারক হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি করেন আসামিপক্ষে নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

নিজ কার্যালয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘শুনানিতে আসামিপক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে সমস্ত সাক্ষীর সাক্ষ্যরে ভিত্তিতে তাকে (নিজামী) দন্ড দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে বিশ্বাস করা যায় না। এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়েও তাকে অভিযুক্ত করা যায় না’।

‘রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলেছি- তার যে বক্তব্য প্ররোচনামূলক বক্তব্য এবং এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার আলবদরের ওপর প্রকাশিত লেখা, ১৯৭১ সালে যেটা প্রকাশিত হয়েছিলো যার পরিপ্রেক্ষিতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিলো। তাছাড়া যারা সাক্ষী তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যখন একজন ডাক্তারকে ধরে নেয়া হয়, তার স্ত্রীকে তখন আলবদররা বলেছিলেন, মতিউর রহমান নিজামীর নির্দেশে তারা তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। এ সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে তাকে আপিল বিভাগ মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছিলেন’। ফাঁসির রায় বহাল থাকবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমিতো আশাবাদী’।

আসামিপক্ষ কোন কোন অভিযোগ থেকে খালাস চেয়েছিলেন- এ প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, তারা যাবজ্জীবন নিয়ে কোনো বক্তব্য রাখেননি। তাদের সাবমিশনে যা বুঝলাম, মৃত্যুদন্ড থেকে অব্যাহতি চান’।

মাহবুবে আলম বলেন, যা রায় (মুত্যদন্ডের রায়) হয়েছে সঠিক রায় হয়েছে। এটার পুর্নবিবেচনার কোনো প্রয়োজন নেই এবং কোনো অবকাশ নেই। তাছাড়া পুনর্বিবেচনা যে প্রয়োজন এ মর্মে কোনো যুক্তি তারা উপস্থাপন করতে পারেননি। তাই আমি মৃত্যুদন্ড বহাল চেয়েছি’।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘তিনটি অভিযোগের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছি। যে তিনটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি যে, তিনটি অভিযোগের পক্ষে যে সাক্ষ্য-প্রমাণ প্রসিকিউশন থেকে দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্বল। এবং এ সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপরে কাউকে মৃত্যুদন্ড দেয়া যায় না। বিশেষ করে বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম ও আজহারের স্ত্রীর যে বক্তব্য (নিজামীর নির্দেশে ধরে নেওয়া) এ কথাটি দীর্ঘ ৪০ বছরে বলেননি তারা। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তাকেও বলেননি। হঠাৎ করে শেখানো কথা বলা হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে চরম দন্ড দেওয়া যায় না’। কি আশা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমরা আশা করছি ন্যায়বিচার। সর্বোচ্চ আদালত যে বিচার করবেন, সেটাই ন্যায়বিচার। তারপর ভবিষ্যত প্রজন্ম ও ইতিহাস বিচার করবে, এ বিচার সঠিক ছিলো কি-না’।