ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষাই পূর্ণতা পায় না, আর সেটা শিশুকাল থেকেই দিতে হয় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা:

* ইসলামী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার
* মাদরাসা শিক্ষাকে বঙ্গবন্ধু গুরুত্ব দিয়েছেন
* বঙ্গবন্ধু মাদরাসা শিক্ষা প্রসারে ভাতার ব্যবস্থা করেছেন
* ইসলাম কখনোই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষাই পূর্ণতা পায় না। তাই সরকার ধর্মীয় শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।” মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে, যার যার ধর্ম পালন করার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি দেশে যাতে নাশকতা, সন্ত্রাসীপনা ও সন্ত্রাসবাদ যাতে মাথাচাড়া না দেয়, সেজন্য কাজ করে যেতে হবে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষাই পূর্ণতা পায় না। তাই সরকার ধর্মীয় শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনি খুব কম সময়ই ক্ষমতায় থেকেছেন। এই স্বল্প সময় তিনি দেশ থেকে মদ-জুয়াসহ সমস্ত গর্হিত ও ইসলামবিরোধী বিষয়গুলো নিষিদ্ধ করে গেছেন। ইসলাম প্রচার ও প্রসারে কাজ করে গেছেন তিনি। তার কল্যাণেই বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে ওআইসি’র সদস্যপদ লাভ করে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদ আমাদের জাতীয় মসজিদ। এ মসজিদের উন্নয়নে আমরা প্রকল্প নিই। সৌন্দর্য বর্ধন, অ্যাভিনিউ নির্মাণ করি। শুধু তাই নয়, বায়তুল মোকাররম মসজিদে যেন পাঁচ হাজার নারী এক সঙ্গে নামায পড়তে পারেন, সে ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “মাদরাসা শিক্ষাকে বঙ্গবন্ধু গুরুত্ব দিয়েছেন। সেজন্য তিনি বোর্ড তৈরি করে গেছেন। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া শিক্ষায় উন্নয়ন হয় না। সেটা শিশুকাল থেকে দিতে হয়। তিনি এ শিক্ষা প্রসারে ভাতার ব্যবস্থা করেছেন।” তিনি জানান, আমরাও তার পথ অনুসরণ করছি। ক্ষমতায় আসার পর এক হাজারেরও বেশি মাদরাসায় একাডেমিক ভবন নির্মাণ করে দিয়েছি। ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য ৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছি।

ইসলামী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয় জনগণের স্বার্থের জন্য। কিন্তু বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এসে এই ব্যাংককে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থে। আর আওয়ামী লীগ সরকার ইসলামী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পরে বাংলাদেশে ১৯টি ক্যু হয়েছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ইসলামকে সমুন্নত করতে সচেষ্ট হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ইসলামের জন্য কাজ করে। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আমরা তাদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করি। আমরা মুসলমানদের জন্য শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রচলন ঘটিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন সত্যিকারের মুসলমান ছিলেন। ইসলামের কল্যাণে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি এ দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বায়তুল মোকাররম মসজিদের সংস্কারে কাজ করেছি। আমাদের এই জাতীয় মসজিদে এখন একসঙ্গে ২০ হাজার মুসলি­ নামায আদায় করতে পারেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার প্রসার শুরু হয় মাদরাসা শিক্ষা দিয়ে। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষাই পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই শিশুকাল থেকে সন্তানদের এই শিক্ষা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদীদের দেশে পরিণত হয়। ৭১ সালে পাকিস্তান যেভাবে হত্যা চালিয়েছিল, ঠিক একই কায়দায় তারাও হত্যা চালিয়েছে। ওলামায়ে কেরামদের প্রতি আহŸান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি দেশে যাতে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া না দেয়, সে জন্য কাজ করে যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বমঞ্চে অনেকেই বলে থাকে, ইসলাম ধর্ম সন্ত্রাসীদের ধর্ম। আমি উচ্চস্বরে বলেছি, সন্ত্রাসবাদীদের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এ ধর্ম কখনোই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না।’