তৈমূরের প্রতি বিএনপি অবিচার করেছে: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে হারার পর অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ‘সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন: জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এম এ মান্নান বলেন, ‘তৈমূর আলম খন্দকারের যে দুর্ভাগ্য দেখলাম, নির্বাচনে হারার পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলো। আগে কেন করলো না? তার মানে দে ওয়্যার ওয়েটিং, যদি কোনো কারণে তিনি চলে আসেন, তাহলে তো হলোই। এই ধরনের অপরচুনিস্টিক আচরণ দিয়ে বহুদলীয় রাজনীতি করা যাবে না।

তিনি বলেন, তৈমূর আলম খন্দকারকে তার দল যেভাবে হ্যান্ডলিং করেছে, আমি একজন নাগরিক হিসেবে মনে করি এটা সঠিক হয়নি। যদিও তিনি আইভীর কাকা। তিনি আমার কাকা নন, ভাইস্তাও নন। আমি মনে করি তার প্রতি তার দল অবিচার করেছে। এটা সুশীল সমাজের দেখা উচিৎ।

আইভীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র নিয়ে তিনি প্রায়ই কথা বলেন। অস্বস্তি নিয়ে হয়তো অনেক কিছু বলতে পারেন না। আমরা আশা করবো এই ষড়যন্ত্র ধীরে ধীরে কাটবে। ২০ বছর আগে যখন তিনি মাঠে নেমেছিলেন তার তুলনায় পর্যায়ক্রমে এটা কমে আসছে বলে আমি মনে করি। আমার ভুল হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি আইভী ও আওয়ামী লীগের ইমেজের কারণে তিনি (আইভী) জয়লাভ করছেন। বাকি ষড়যন্ত্রে যে ভীতিটুকু আছে সেটাও কমে যবে। আইভীর জয়ে আমাদের দল অনেক আনন্দিত। ভোট নিয়ে অনেক কথা হয়। তবে নারায়ণগঞ্জের এই ভোট অভিযোগগুলোকে ভাসিয়ে দিয়ে যাবে বলে আমার ধারণা।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জের মেজরিটিই খেটে খাওয়া মানুষ। কাজেই এখানকার লোকজন একট শান্তিপূর্ণ এলাকা নারায়ণগঞ্জকে রাখতে চান। যেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রয়োজন। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে নারায়গঞ্জ কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়। আমরা আশা করি জাতীয় নির্বাচন এমন হওয়া উচিত। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু না।

সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠ নির্বাচনের মূল অংশীদার। সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব একটা প্রভাবহীন নির্বাচন করা। নারায়ণগঞ্জে ইসি সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। আর প্রশাসনও দৃশ্যমানভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেনি। অর্থাৎ এটা কোনো নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন ছিল না।

ইসি পুনর্গঠনে আইন নিয়ে জনমত ও রাষ্ট্রপতির সংলাপের আলোচনা তুলে ধরে বদিউল আলম বলেন, এসব নিয়ে সরকারের ওপর চাপ ছিল। এছাড়া ডেমোক্রেটিক সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের স্যাংশন একটা চাপ সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ভোটের মাধ্যমে সরকার বার্তা দিতে চাচ্ছে যে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠ ভোট সম্ভব। এমন বার্তা আগেও দেওয়া হয়েছিল। এখন এই বার্তা জনগণ কীভাবে নেবে সেটাই দেখার বিষয়।